ভারতের কিংবদন্তী ফুটবলার সুভাষ ভৌমিক আর নেই
প্রয়াত হলেন ভারতের কিংবদন্তী ফুটবলার ও কোচ সুভাষ ভৌমিক। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। শনিবার (২২ জানুয়ারি) সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস।
সাড়ে তিন মাস ধরে তাকে প্রায় নিয়মিত ডায়ালিসিস করাতে হচ্ছিল। এর মধ্যে তিন বছর আগে তার বাইপাস সার্জারি হয়েছিল। সম্প্রতি কিছু দিন ধরে বুকে সংক্রমণের জন্য ভর্তিও ছিলেন একবালপুরের এক বেসরকারি ক্লিনিকে।
শরীরের অবস্থা ভালো ছিল না। তার চিকিৎসা যাতে ভালো ভাবে হয়, তার জন্য পাশে দাঁড়িয়েছিল বাংলার ক্রীড়ামহল। রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরুপ বিশ্বাসের তত্ত্বাবধানে শুক্রবার তার চিকিৎসার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। তবে কাউকে কিছু করার সুযোগই দিলেন না। শেষ লড়াইটা হেরেই গেলেন লড়াকু ‘ভোম্বলদা’। না ফেরার দেশে চলে গেলেন সুভাষ ভৌমিক। তার মৃত্যুর খবর সরকারিভাবে ঘোষণা করা হয়।
হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, শনিবার ভোররাত সাড়ে তিনটার দিকে তার ম্যাসিভ হার্ট-অ্যাটাক হয়। তারপর আর কিছুই করার ছিল না ডাক্তারদের। একবালপুর নার্সিংহোমের ডাক্তার সিদ্ধার্থ পুরকায়স্থ বলেন, ‘সাড়ে তিনটে নাগাদ তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন। আমরা সঙ্গে সঙ্গে যাবতীয় ব্যবস্থা নিয়েছিলাম; কিন্তু এরপর থেকেই তার অবস্থার দ্রুত অবনতি ঘটতে থাকে।’
ভারতীয় ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম সেরা ফরোয়ার্ড ছিলেন সুভাষ ভৌমিক। তার সময়ে ফুটবল ময়দানে একের পর এক ফুল ফুটিয়েছেন। মোহনবাগান ও ইস্ট বেঙ্গলের হয়ে দাপিয়ে খেলেছেন। ভারতের হয়ে জিতেছেন এশিয়ান গেমসে ব্রোঞ্জ পদক।
খেলোয়াড় হিসেবে সুভাষ ভোমিকের অধ্যায়টা যতটা রঙিন ক্যানভাসে বাঁধানো ছিল, তারচেয়ে বেশি সাফল্য তিনি পেয়েছেন কোচ হিসেবে। প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে গুরু মেনে কোচ হিসেবে পথচলা শুরু করেছিলেন। তার পর তো সবটাই ইতিহাস। মোহনবাগান, ইস্ট বেঙ্গল, মোহামেডানসহ বিভিন্ন ক্লাবে সাফল্যের সঙ্গে কোচিং করিয়েছেন। তবে কোচ হিসেবে সুভাষের সেরা সাফল্য ২০০৩ সালে আসিয়ান ট্রফি। সুভাষ ভৌমিকের এই আকম্মিক প্রয়াণে শোকাভিভূত ভারতীয় ফুটবল মহল।
যিনি কখনো হেরে পিছিয়ে আসার লোক ছিলেন না। যার জীবনটাই লড়াইয়ে পরিপূর্ণ ছিল, সেই সুভাষ ভৌমিকই শনিবার সকালে সকলকে হারিয়ে চোখের জলে ভাসালেন পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের ফুটবল মহলকে।
এসএ/