উত্তেজনাকর ম্যাচে ১ রানে হেরে রেলিগেশন লিগে লিওপার্ডস
রেলিগেশন লিগ এড়ানোর জন্য জয়ের বিকল্প ছিল না ঢাকা লিওর্পাডসের। সেখানে দুই দুইবার ম্যাচকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে এনেও শেষ পর্যন্ত লিজেন্ডস অব রপগঞ্জের কাছে ১ রানে হেরে গেছে ঢাকা লিওপার্ডস। বৃথা গেছে ওমর আমিনের অপরাজিত ১২৮ রানের ইনিংস। লিজেন্ডস অব রপগঞ্জের করা ৮ উইকেটে ২৬৮ রানের জবাব দিতে নেমে ঢাকা লিওপার্ডস ৬ উইকেটে করে ২৬৭ রান। এই হারে ঢাকা লিওপার্ডসের রেলিগেশন লিগ আর এড়ানো সম্ভব হলো না। এবার তাদের রেলিগেশন লিগ খেলতেই হবে। ১০ ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে সবার নিচে তারা। সমান ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের তিনে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ।
বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে মাশরাফি বিন মর্তুজার রূপগঞ্জকে বেশ বশেই নিয়েছিল লিওপার্ডসের বোলাররা। পারভেজ হোসেন ইমনের ৫২ ও সাব্বির রহমান রুম্মানের ৫৪ রানের ইনিংসের পরও ৭ উইকেট তুলে নিয়েছিল ১৭৮ রানে। ওভার ছিল তখন ৪০.৩টি। ম্যাচ অনেকটাই লিওপার্ডসের নিয়ন্ত্রণে। কিন্ত সেখান থেকে দলের রান আর ১ উইকট হারিয়ে রূপগঞ্জ নিয়ে যায় ২৬৮ পর্যন্ত। এখানে মুখ্য ভুমিকা পালন করেন এবারের আসরের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় রূপগঞ্জের অনেক জয়ের নায়ক ভারতের চেরাগ জানি। তিনি সোহাগ গাজী ও মোক্তার আলীকে নিয়ে এই কাজটি করেন। সোহাগ গাজীকে নিয়ে অষ্টম উইকেট জুটিতে ৫৬ রান যোগ করেন ৬.৫ ওভারে। সোহাগ গাজী ২৬ রান করে আউট হলে পরে নবম উইকেট জুটিতে মোক্তার আলীকে নিয়ে যোগ করেন অবিচ্ছিন্ন থেকে ৩৪ রান। ওভার খেলেন ২.৪ ওভারে। চেরাগ জানি ৫৯ বরে ৭ চারে ৫৪ ও মোক্তার আলী ১০ বলে ৩ ছক্কা ও ১ চারে ২৫ রান করে অপরাজিত থাকেন। ওমন আমিনের করা শেষ ওভারের শেষ ৪ বল মোক্তার আলী ৩ ছক্কা ও ১ চারে ২২ রান সংগ্রহ করেন। শেষ ওভারে রান আসে ২৩। এই ২৩ রানই পরে ম্যাচের ফলাফল নির্ধারণ করে দেয়। মঈন খান ৩৪ রানে নেন ৩ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন ওমর আমিন ও আরিফুল জনি।
জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে লিওপার্ডস ৮ রানে ২ উইকেট হারিয়ে বিপদেই পড়ে। সেই বিপদ আরও ঘনীভূত হয়েছিল ৩৪ রানে তৃতীয় উইকেট হারানোর পর। কিন্তু সেই বিপদকে আমলে না নিয়ে টিকে থাকার মিশনে নেমে ওমর আমিন ও সাব্বির হোসেন শিকদার প্রতিরোধের দেয়াল গড়ে তুলেন। এই জুটিরে ৩১ ওভারে ১৬৬ রান লিওপার্ডসের জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলে রেলিগেশন লিগ এড়ানোর সম্ভাবনা জাগিয়ে তুলে।
মাশরাফির বলে ১ রান নিয়ে ১০৪ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ওমর আমিন। একটু পর সাব্বিরও হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ৭৭ বলে। সেঞ্চুরি ও হাফ সেঞ্চুরি করার পর দুইজন থেমে না থেকে দলকে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যের দিকে নিয়ে যেতে থাকেন। দলীয় রান যখন ১৯৯। দুইশ ছুঁই ছুঁই করছে, তখনই ওমর আমিন অবসর নেন। ব্যাট করতে গিয়ে তার হাতে চোট লাগে। তার রান তখন ছিল ১১৯। কিন্তু চলে গেলেও সাব্বির , সোহরাওয়ার্দী শুভ আর মঈন খান মিলে দলকে জয়ের পথেই রেখেছিলেন। সাব্বির ৯১ বলে ১টি করে চার ও ছয় মেরে ৬৪ রান করে চেরাগ জানির বলে তারই হাতে ধরা পড়ে বিদায় নেন। এরপর সোহরাওয়ার্দী শুভ ও মঈন খান মিলে দলকে জয়ের পথেই রাখেন। জুটিতে তারা ৪.৪ ওভারে ৩৩ রান যোগ করার পর মঈন খান রানআউট হয়ে যান ১৬ বলে ২ চারে ১৯ রান করে। তিনি যখন আউট হন তখন লিওপার্ডসের জয়ের জন্য প্রয়োজন ২ ওভারে ১৪ রান। হাতে উইকেট ৫টি। এসময় ক্রিজে আবার আসেন ১১৯ রান করে মাঠ ছাড়া ওমর আমিন। কিন্তু এবার আর তিনি শুরুর মতো মারতে পারেননি। ৪৯তম ওভারে রান আসে ৭। ফলে শেষ ওভারেও প্রয়োজন পড়ে ৭ রানের। হাতে পর্যাপ্ত উইকেট থাকায় লিওপার্ডসের জয়ের পাল্লাই ভারী ছিল। কিন্তু সেই কাজটি তারা শেষ পর্যন্ত করতে পারেনি।
চেরাগ জানির করা ওভারের প্রথম বলে ওমর আমিন ২ রান সংগ্রহ করেন। পরের ২ বলে ২ রান আসার পর চতুর্থ বলে ওমর আমিন কোনো রান নিতে পারেননি। ফলে শেষ ২ বলে প্রয়োজন পড়ে ৩ রানের। পঞ্চম বলে ১ রান আসায় শেষ বলে প্রয়োজন পড়ে ২ রানের। স্ট্রাইকে সোহারাওয়ার্দী শুভ। কভার খেলেই রান নিতে ছুটেন শুভ। কিন্তু তার আগেই পারভেজ হোসেন ইমনের থ্রোতে রানআউট হয়ে যান। ফলে ১ রানে হার মেনে রেলিগেশন লিগে চলে যায় লিওপার্ডস। ওমর আমিন ১২৮ রানে অপরাজিত থেকে মাথা নিচু করে বের হয়ে আসেন।
ব্যাট হাতে অপরাজিত ৫৯ রানের ইনিংস খেলার পর বল হাতে ৫৬ রানে ২ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হন চেরাগ জানি।
এমপি/এসজি