সাকিব বন্দনা
সাকিব যেন সোনার ডিম পাড়া হাঁস। তার কারণেই বাংলাদেশের ক্রিকেট ক্ষণে ক্ষণে জ্বলে উঠে। সেই জ্বলে উঠাতে ভুবন ভুলানো হাসি লুটিয়ে পড়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের অবয়াবে। অতীতের মতো সোমবার (৬ মার্চ) ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তৃতীয় একদিনের ম্যাচে আরেকবার দেখা গেছে সাকিব ঝলক। যে ঝলকে ঘায়েল হয়েছে ইংল্যান্ড। যারা আবার প্রথম দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ নিজেদের পকেটে পুরে নিয়েছিল। এরপর চেয়েছিল বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করতে। কিন্তু সাকিবের কারণে তা আর সম্ভব হয়নি। ব্যাট হাতে ৭৫ রান আর বল হাতে ১০ ওভারে ৩৫ রানে ৪ উইকেট- ইংল্যান্ডকে হারাতে আর কি কিছু লাগে। তাইতো ম্যাচ শেষে সর্বত্র সাকিব বন্দনা।
২২ গজে সাকিব ভালো করবেন, এ আর নতুন কিছু। ২০০৬ সালে আর্ন্তজাতিক ক্যারিয়ার শুরু করার পর থেকেই সাকিব নিজের দ্যুতি ছড়ানো নৈপুণ্য দিয়ে বহুবার নিজেকে আলোকিত করেছেন। যে আলোর রশ্মিতে আলোকিত হয়েছেন অন্যরাও।
সোমবার তৃতীয় ওয়ানডে ম্যাচ শেষে অধিনায়ক তামিম ইকবাল যে কোনো দলের জন্য সাকিবকে ‘আর্শিবাদ’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘সোমবার তার পারফরম্যান্স ছিল অসাধারণ, গোটা ক্যারিয়ারেই সে অসাধারণ খেলে আসছে। সে একজন দুর্দান্ত ক্রিকেটার। তার বিপক্ষে খেলা যে কারো জন্য অনেক বেশি চ্যালেন্জিং। তার মানসিকতা খুবই শক্ত। সে যখন চাপে থাকে, তখন এ রকম পারফরম্যান্স করে। আগেও সে রকম পারফরম্যান্স করেছে। তার মত ক্রিকেটার যে কোনো দলের জন্য অনেক বড় আর্শিবাদ।'
সাকিবকে নিয়ে তামিম বন্দনা এখানেই শেষ ছিল না। সাকিবের মতো একজন ক্রিকেটার যখন ভালো করেন, তখন অন্যরাও উজ্জীবিত হয়ে উঠেন নিজেদের মেলে ধরার জন্য। তামিমের কথা ছিল সে রকমই, ‘উইকেট খুব একটা স্পিন বান্ধব ছিল না। কিন্তু সাকিব ঠিকই দারুণ বোলিং করে উইকেট তুলে নিয়েছে। তার এমন নৈপুণ্য তাইজুলকেও আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছিল। তাইজুল কিন্তু শুরুতে ভালো করতে পারেনি। কিন্তু সাকিবের ভালো বোলিং করা দেখে তাইজুল পরে তার সঙ্গে কথা বলে নিজেকে উজ্জীবিত করে তুলার চেষ্টা করে। সাকিবের এটি ছিল অসাধারণ একটি পারফম্যান্স।’
ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জন বাটলার ফিরে গিয়েছিলেন ২০১৯ সালের বিশ্বকাপে। নিজেদের ঘরের মাঠে অনুষ্ঠিত সেই আসরে সাকিব ব্যাটে-বলে ছিলেন অনন্য। ব্যাট হাতে ৬০৬ রান ও বল হাতে ১১ উইকেট। আবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সাকিবের ব্যাট থেকে এসেছিল ১২১ রানের একটি দৃষ্টিনন্দন ইনিংস। যদিও ম্যাচটা বাংলাদেশ হেরেছিল। তাইতো বাটলার স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন। বলেন, ‘সাকিব একজন অসাধারণ ক্রিকেটার। পরিসংখ্যানই বলে দেয় সেই কথা। তার বিপক্ষে খেলাটা খুবই বড় চ্যালেঞ্জ। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের দিকে ফিরে তাকালে বুঝা যায় তার উচ্চতা। কী অসাধারণ পারফরম্যান্স সে করেছিল।’
বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সাকিবের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তার মধ্যে এখন জেতার নেশা কাজ করে বেশি। তিনি বলেন, ‘সাকিব দলের সেরা ক্রিকেটার। এটা আর নতুন করে কিছু বলার নেই। জেতার জন্য সে মরিয়া। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ থেকেই এটি আমি লক্ষ্য করছি। ইদানিং এটি বেশি দেখছি তার মধ্যে।
এমপি/আরএ/