টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল: তামিম
প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ দল টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে তার ফায়দা নিতে পারেনি। ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে মাত্র ২০৯ রানে অলআউট হয়েছিল। দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে বাংলাদেশ টস জিতেছিল। এবার কিন্তু আর ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয়নি। বোলারদের হাতে বল তুলে দিয়েছিলেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। কিন্তু তার সেই সিদ্ধান্তকে বোলাররা অর্থবহ করে তুলতে পারেননি। তাহলে কি অধিনায়ক তামিমের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল? কিন্তু তা মনে করেন না তামিম। তার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল বলেই তিনি মনে করেন। তার মতে, বোলাররা ভালো বোলিং করতে পারেনি।
দ্বিতীয় ওয়ানডে শেষে তামিম ইকবাল টস জিতে তার নেওয়া সিদ্ধান্ত সম্পর্কে বলেন, আমরা ভালো বোলিং করিনি। আমি এবং আমাদের টিম ম্যানেজমেন্টের উইকেট দেখে মনে হয়েছে বোলারদের সহায়তা করবে। কিন্তু উইকেট যতই ফ্রেন্ডলি হোক, আপনি যদি পরিকল্পনা অনুযায়ী বোলিং করতে না পারেন, তাহলে ব্যাটাররা আপনার উপর চড়াও হবেই।
ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জস বাটলার টস হেরে বলেছিলেন টস জিতলে ব্যাটিং করতেন আগে। বাটলারের এই বক্তব্য নিয়ে তামিম ইকবালের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, প্রতিপক্ষ দলের অধিনায়ক কী বলেছে সেটা আমার বিবেচ্য বিষয় নয়। তিনি বলেছেন আগে ব্যাট করতে চান। টস হেরে এরকম আমিও অনেক সময় বলে থাকি। তাই এটা আমার কাছে তেমন কোনো চিন্তার বিষয় নয়।
তামিম বলেন, ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা যেভাবে খেলেছে এটা তাদের কৃতিত্ব। তারা সুযোগকে কাজে লাগিয়েছে।
অধিনায়ক তামিম ইকবাল ৫ জন বোলার ব্যবহার করেন। একমাত্র তাইজুল ছাড়া সবাই ৬০ রানের উপরে দিয়েছেন। আবার মুস্তাফিজ ছাড়া সবাই উইকেট পেয়েছেন। ইদানিং মুস্তাফিজের বোলিংয়ে আগের মতো ধার নেই। তাহলে মোস্তাফিজ কি অটো চয়েজ? এরকম প্রশ্নের জবাবে তামিম ইকবাল মোস্তাফিজের পক্ষেই ব্যাটিং করেন।
তিনি বলেন, সত্যি কথা বলতে দলে অটো চয়েজ বলতে কোনো কিছু নেই। আমি নিজেও অটো চয়েজ নই। তা ছাড়া দলে অটো চয়েজ বলে কেউ নেই। আমি অধিনায়ক হওয়ার পরও যদি পারফর্ম করতে না পারি আমিও দলে থাকতে পারব না। মুস্তাফিজের উপর আমাদের অনেক বিশ্বাস আছে। আমি মনে করি সে পারফর্ম করতে পারবে। কারণ আগেও সে পারফর্মার ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন উঠে মাহমুদুল্লাহকে নিয়েও। সিরিজ শুরুর আগেও তাকে নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। মাহমুদউল্লাহ প্রসঙ্গ আসতেই তামিম ইকবাল কিছুটা বিরক্তি মনোভাব প্রকাশ করে মুস্তাফিজের মতো মাহমুদউল্লাহর পক্ষেও ব্যাট ধরলেন, বারবার একটি বিষয় নিয়ে কথা বলতে আমি খুব একটা পছন্দ করি না। এক সিরিজ আগেই তার একটি ম্যাচ জেতানো ইনিংস ছিল। একটা সিরিজের মধ্যে, আবার দুই-তিন ম্যাচের মধ্যেই আপনারা একই প্রশ্ন করতে থাকেন। এটি তার জন্য চাপ তৈরি করে। যা কোনো দলের জন্যও স্বাস্থ্যকর নয়। তিনি কিন্তু এই দেশেরই ক্রিকেটার। আমি অধিনায়ক হিসেবে নির্দিষ্ট করে কোনো একজনের দিকে আঙুল তুলতে পছন্দ করি না। সেটা দোষের হোক বা না হোক। আমি এখানে এসেছি তাদেরকে সেভ করতে। কোনো অভিযোগ বা সমালোচনা করতে নয়।
৩২৬ রান তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ ১৪ বলের মাঝেই ৯ রানে টপ অর্ডারের ৩ ব্যাটারকে হারিয়ে অথৈ সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছিল। দলের এমন বিপদসংকুল পরিস্থিতিতে দলের দুই সিনিয়র ক্রিকেটার তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসান ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টায় প্রতিরোধের দেয়াল গড়ে ৭৯ রানের জুটি গড়েছিলেন ১৮.২ ওভারে। রান তাড়ায় বলের ব্যবহার একটু বেশি হয়ে গিয়েছিল কি না জানতে চাওয়া হলে তামিম বলেন, ১২ বা ১৫ বছর আগে আমরা যদি এরকম পরিস্থিতিতে পড়তাম তখন আমরা কি চিন্তাভাবনা করতাম একটা সম্মানজনক স্কোর। কিন্তু আজ আমি ও সাকিব যখন ব্যাটিং করছিলাম তখন আমাদের মাঝে জেতার চিন্তায়ই ছিল। আমাদের টার্গেট ছিল যতটুকু সম্ভব রান বাড়িয়ে নেওয়া। আমরা যদি আগেই হার মেনে নিতাম, তখন খেলাটা অন্যরকম হতো। আমি মনে করি না আমরা এখন আর সে পর্যায়ে আছি। ওরা যদি ৪০০ রানও করত, আমি আর সাকিব চেষ্টা করে যেতাম।
এমপি/এসজি