যাত্রাপথে ঢাকায় বিপিএলে ছিল উত্তপ্ত

দক্ষিণ আফ্রিকা ও সংযুক্ত আরব আমিরাতে নতুন করে দুইটি ফ্রাঞ্চাইজি লিগের প্রবর্তনের কারণে বিপিএলের নবম আসর মান সম্পন্ন বিদেশি ক্রিকেটারের সংকটে পড়ে। প্লেয়ার্স ড্রাফটে বিদেশি ক্রিকেটারের লম্বা তালিকা থাকলেও সেখানে পাকিস্তানের কয়েকজন ক্রিকেটারকে বাদ দিলে বাকি সব ছিল মানহীন। অথচ বিপিএলের প্রাণই কিন্তু এই বিদেশি ক্রিকেটাররা। ব্যাট-বলে ঝলক আসে তাদের হাত ধরেই। সেখানে নিভু নিভু করে জ্বলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটারা।
এবার মানসম্পন্ন বিদেশি ক্রিকেটারের অভাবে বিপিএলের মান নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছিল আসর শুরুর আগে। কতোটা জমবে, দর্শক আকৃষ্ট করবে, এ নিয়ে শঙ্কার শেষ ছিল না। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেরকম কোনো কিছুই হয়নি। এবারের বিপিএলে দারুণভাবে জমে উঠেছে। আর এই জমে উঠাতে দারুণ ভুমিকা রেখেছেন দেশি ক্রিকেটাররা। হাই স্কোরিং ম্যাচ হচ্ছে অহরহ। তা টপকে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। লো-স্কোরিং ম্যাচেও থাকছে উত্তেজনার পারদ। তারই ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রাম থেকে সিলেট যাওয়ার পথে ঢাকায় যাত্রা বিরতিতেও ছিল বিপিএলে উত্তপ্ত।
সিলেটে বিপিএল শুরু হবে আগামীকাল (২৭ জানুয়ারি) শুক্রবার। মাঝে ঢাকায় খেলা হয়েছে দুই দিন ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি। এরই মাঝে সবচেয়ে উত্তজনাকর খেলা উপহার দিয়েছে এবারের আসর। চলতি আসরের সবচেয়ে শক্তিশালী ও পয়েন্ট টেবিলের উপরের দিকে থাকা দুই দল সিলেট স্ট্রাইকার্স ও ফরচুন বরিশালের ম্যাচটি ছিল উত্তেজনার টুইটুম্বরে ভরা। সিলেটের ৫ উইকেটে করা ১৭৩ রান পাড়ি দিতে গিয়ে শেষ বলে হয়েছে ভাগ্য নির্ধারণ। জয় নয়, ম্যাচ টাই করার জন্য বরিশালের প্রয়োজন ছিল ছক্কার। কিন্তু সেখানে মোহাম্মদ ওয়াসিমের ব্যাট থেকে আসে বাউন্ডারি। বরিশাল শেষ পর্যন্ত করতে পেরেছিল ৮ উইকেটে ১৭১ রান।
এই ম্যাচে দফায় দফায় দৃশ্যপটে পরিবর্তন এসেছে। একবার সিলেটের দিকে ম্যাচ হেলে পড়ে, তো আরেকবার বরিশালের দিকে। ইনিংসের শুরুতে দ্বিতীয় ওভারেই ৩ উইকেট হারানোর পরও সেখান থেকে সিলেটের ১৭৩ রান সংগ্রহ ছিল বড় চমক। সেই চমকের যোগানদাতা ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তিনি হয়ে উঠেন অশান্ত। খেলেন ৬৬ বলে ১ ছক্কা ও ১১ চারে অপরাজিত ৮৯ রানের ইনিংস। সহযোদ্ধা হিসেবে পেয়েছিলেন টম মুরসকে। বরিশালের হয়ে কেউই লম্বা ইনিংস খেলতে পারেননি। কিন্তু ছোট ছোট ইনিংস খেলে ম্যাচকে জমিয়ে তুলেছিলেন সাইফ হাসান (১৯ বলে ৩১ রান), ইব্রাহিম জাদরান (৩৭ বলে ৪২ রান), সাকিব (১৮ বলে ২৯ রান) ইফতেখার (১৩ বলে ১৭ রান), করিম জানাত (১২ বলে ২১ রান) মোহাম্মদ ওয়াসিম (৪ বলে অপরাজিত ১০ রান)।
শুধু কী হাই স্কোরিং ম্যাচে এমন হয়েছে। খুলনা ও ঢাকার লো-স্কোরিং ম্যাচেও ছিল উত্তেজনার পারদ মেশানো। ঢাকা মাত্র ১০৮ রানে অলআউট হয়েও খুলনাকে ম্যাচ জিততে দেয়নি। তাসকিন তোপে খুলনাকে মাত্র ৮৪ রানে অলআউট করেও ম্যাচ জিতে ২৪ রানে। খুলনা জেতা ম্যাচ হাতছাড়া করে ১১ বলে ৯ রানে শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে। বোলারদের রাজত্ব ভরা ম্যাচে চলতি আসরে এই ম্যাচেই দুই দল প্রথম অলআউট হয়।
উত্তেজনার এমন পারদ নিয়ে বিপিএল গেছে সিলেটে। রিলে দৌড় প্রতিযোগিতার বাটন পরিবর্তনের মতো সিলেটেও বিপিএলের উত্তেজনার পারদ দেখার অপেক্ষায় সবাই।
এমপি/
