বিপর্যয় কাটিয়ে বরিশালের সংগ্রহ ২৩৮

রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতেই নেই ফরচুন বরিশালের ৪ উইকেট। রান মাত্র ৪৬। সেই বিপর্যয় কাটিয়ে সাকিব আল হাসান ও ইফতেখার আহমেদের ব্যাটে সওয়ার হয়ে বরিশাল আসরের দ্বিতীয়বারের মতো দুইশোর্ধ রানের পুঁজি গড়ে। সংগ্রহ করে ৪ উইকেটে ২৩৮ রানের বিশাল পুঁজি। ইফতেখার ১০০ ও সাকিব ৮৯ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে বরিশাল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে করেছিল ৭ উইকেটে ২০২ রান। এই রান করে তারা ঢাকা ডমিনেটরসের বিপক্ষে সিলেটের ৮ উইকেটে করা ২০১ রান টপকে গিয়েছিল। এবার নিজেরাই নিজেদের ছাড়িয়ে গেল।
বিপিএলের ইতিহাসে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান। ২ রানের জন্য বরিশাল সর্বোচ্চ সংগ্রহ করতে পারেনি। দলগত সর্বোচ্চ রান রংপুর রাইডার্সের। ২০১৯ সালে এই চট্টগ্রামেই তারা চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে করেছিল ৪ উইকেটে ২৩৯ রান। এ ছাড়া বরিশালের সমান ২৩৮ রান চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সেরও। তারা কুমিল্লা ওয়ারিয়ার্সের বিপক্ষে ২০১৯ সালেই করেছিল ৪ উইকেট হারিয়ে। সেই বছর দুটি বিপিএল অনুষ্ঠিত হয়েছিল। একটি বছরের শুরুতে, অপরটি বছরের শেষে।
বরিশালের শুরুটা ভালোই ছিল। এনামুল হক ও মেহেদি হাসান মিরাজ ৪ ওভারেই ৩০ রান তুলে দেন। এরপরই শুরু হয় বিপর্যয়। মাত্র ১০ বলে ১৬ রানে তারা হারায় ৪ উইকেট। হারিস রউফ বল হাতে নিয়েই জোড়া আঘাত হানেন। প্রথম বলে এনামুলকে ১৪ ও চতুর্থ বলে ইব্রাহীম জাদরানকে ০ রানে ফিরিয়ে দেন। পরের ওভারে আবার হাসান মাহমুদও জোড়া আঘাত হানেন। পরপর দুই বলে তিনি ফিরিয়ে দেন প্রথমে মিরাজকে ২৪ (২০ বলে ৩ ছয়) ও পরে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে ০ রানে। এরপর শুরু হয় ইফতেখার ও সাকিবের প্রতিরোধ।
দুই ব্যাটার প্রতিরোধ গড়ে ধস ঠেকিয়ে পাল্টা আঘাত হানা শুরু করেন। যে আঘাতে দলের রান গিয়ে ঠেকে ২৩৮-এ। চতুর্থ উইকেট জুটিতে তারা যোগ করেন ১৪.২ ওভারে রেকর্ড ১৯২ রান। যেকোনো জুটিতে তৃতীয় ও পঞ্চম উইকেট জুটিতে সর্বোচ্চ রান। সর্বোচ্চ রান দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ২০১ রান। ২০১৭ সালে রংপুর রাইডার্সের হয়ে গেইল ও ম্যাককালাম করেছিলেন ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ১৯৭। খুলনার হয়ে রাজশাহীর বিপক্ষে শাহরিয়ার নাফিস ও ভিনসেন্ট করেছিলেন ২০১৩ সালে।
১০ ওভার শেষে রান ছিল ৪ উইকেটে ৭৩। ইফতেখার ২৩, সাকিব ৮ রান। ১৫ ওভার শেষে তা দাঁড়ায় ৪ উইকেটে ১৩৭। ইফতেখার ৬২, সাকিব ৩২। সেখানে শেষ ৫ ওভারে রান যোগ হয় ১০১। ইফতেখার ১০০, সাকিব ৮৯। এই পাঁচ ওভারে রান আসে যথাক্রমে ১৯, ৯, ২২, ২৪ ও ২৭।
ইফতেখার শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক থাকলেও সাকিব ছিলেন সংযমী। কিন্তু ১৫ ওভার শেষে তিনিও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠলে রান উঠে বেসামালভাবে। ইফতেখার ২৯ বলে ৬ ছক্কা ও ২ চারে হাফ সেঞ্চুরি করার পর পরের ৫০ রান করতে বল খেলেন মাত্র ১৬টি। এসময় ৪ ছক্কার সঙ্গে ২টি চারও মারেন তিনি। ৪৫ বলে ৯ ছক্কা ও ৪ চারে চলতি আসরের তৃতীয় সেঞ্চুরি পূর্ণ করার পর তিনি আর কোনো বল খেলতে পারেননি। বাকি ৩ বল খেলেন সাকিব।
ইফতেখারের আগে একই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছিলেন খুলনা টাইগার্সের আজম খান (অপরাজিত ১০৯) ও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ওসমান খান (অপরাজিত ১০১ রান)। অন্যদিকে সাকিব ৩৩ বলে আসরে নিজের তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি করার পর ৮৯ রানে অপরাজিত থাকেন। তার ৪৩ বলের ইনিংসে ছিল ৬ ছক্কা ও ৯ চার।
রংপুর রাইডার্সের হাসান মাহমুদ ৩১ ও হারিস রউফ ৪২ রানে নেন ২টি করে উইকেট।
এমপি/এসজি
