যুক্তরাষ্ট্রের উপর বাংলাদেশের আঘাত

অনূর্ধ্ব-১৯ নারী বিশ্বকাপে যেখানে অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কা পারেনি। সেখানে কি আর বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পেরে উঠা সম্ভব? সম্ভব হয়নি তাদের। বাংলাদেশ প্রচণ্ড আঘাত হেনেছে তাদের উপর। বুধবার (১৮ জানুয়ারি) দক্ষিণ আফ্রিকার বেনোনিতে বোলিং ক্ষেপণাস্ত্রে যুক্তরাষ্ট্রকে ঘায়েল করে ৪ উইকেটে ১০৪ রানে আটকে রেখে বাংলাদেশ পরে আঘাত হানে ব্যাট হাতে।
যুক্তরাষ্ট্রের বোলিং আক্রমণকে ভোতা করে বাংলাদেশ সেই রান ১৭.৩ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে টপকে গিয়ে ম্যাচ জিতেছে ৫ উইকেটে। 'এ' গ্রুপে টানা ৩ ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই সুপার সিক্স খেলবে। যুক্তরাষ্ট্রের এটি ছিল তৃতীয় হার।
২২ গজে ব্যাটে-বলে কোনো বিভাগেই যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে পেরে উঠেনি। তবে একদিক দিয়ে তারা অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে এগিয়ে ছিল। আর তা ছিল বাংলাদেশের ৫টি উইকেট তারা তুলে নিতে পেরেছে। যেখানে অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কা নিয়েছিল ২টি করে উইকেট। অস্ট্রেলিয়ার ১৩০ রান পাড়ি দিয়েছিল ২ উইকেট হারিয়ে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৬৫ রান করেছিল ২ উইকেট হারিয়ে। আজ ১০৩ রান অতিক্রম করতে হারিয়েছে ৫ উইকেট।
আগের দুই ম্যাচে ওপেনার মিষ্টি সাহা ০ ও ১৪ রান করে আউট হওয়ার কারণে আজ তাকে আর ওপেন করতে পাঠানো হয়নি। মারমুখী ব্যাটিং করে নজরকাড়া আফিয়া প্রত্যাশার সঙ্গে ওপেন করতে পাঠানো হয় সুমাইয়া আক্তারকে। প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো ব্যাটিং করা সুমাইয়া আজই প্রথম ব্যাট করতে নামেন। কিন্তু তিনিও সুবিধা করতে পারেননি। দলীয় ১৭ ও ব্যক্তিগত ১০ রানে তিনি আউট হয়ে যান চাদুসামার বলে। অস্ট্রেলিয়া ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মিষ্টির ব্যর্থতা ঢেকে দিয়েছিলেন আফিয়া। কিন্তু তিনি আজ আর পারেননি। দলীয় ২১ ও ব্যক্তিগত ৭ রানে তিনিও সাজঘরমুখী হন স্নিগ্ধার শিকার হয়ে। যে কারণে ব্যাটিং পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের রান আসে ২ উইকেটে ৩৫।
১০ ওভার শেষ হওয়ার আগেই বিদায় নেন আসরে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যান স্বর্ণা, সঙ্গে দিলারাও। স্বর্ণা যথারীতি মারমুখী ব্যাটিং করে ১ ছক্কা ও ২ চারে ১৪ বলে ২২ রান করে ইউন্নির এবং দিলারা ২ চারে ১৫ বলে ১৭ রান করে বাধরিরাজুর শিকার হন। প্রথমে আউট হন স্বর্ণা, পরে দিলারা। দুইজনে জুটিতে ৩.৫ ওভারে যোগ করেন ৩৮ রান। একেতো টার্গেট কম, আবার সেখানে তাদের ছোট্ট কিন্তু মারমুখী ইনিংস বাংলাদেশের জয়ের কাজটা অনেক সহজ করে দেয়।
অধিনায়ক দিশা বিশ্বাস ও মিষ্টি সাহাকে নিয়ে জয়ের বাকি কাজ সারেন রাবেয়া খাতুন। তিনি দিশাকে নিয়ে পঞ্চম উইকেটে যখন জুটি বাঁধেন, তখন দলের জয়ের জন্য প্রয়োজন ৬ উইকেটে ১০.১ ওভারে ৪০ রান। যে কারণে এই দুই ব্যাটসম্যান আক্রমণাত্মক না হয়ে কিছুটা দেখে-শুনে খেলতে থাকেন। তাই রান সংগ্রহে নেমে আসে মন্থরতা। তবে তা দলের জয়ে প্রভাব ফেলেনি। শুধুই বিলম্বিত করেছে।
রাবেয়া ও দিশা পঞ্চম উইকেট জুটিতে ১৮ রান যোগ করতে বল খেলেন ২৫টি। দিশা ১৭ বলে ১০ রান করে সাজঘরে ফেরেন চাদুসামার বলে বোল্ড হয়ে। দলের রান তখন ৫ উইকেটে ৮৪। রাবেয়া ও মিষ্টি জুটি বাঁধার পর আর কোনো উইকেটের পতন হয়নি। দুইজনেই অবিচ্ছিন্ন থেকে ৩.৩ ওভারে প্রয়োজনীয় ১৮ রান যোগ করেন। রাবেয়া ২৪ বলে ২ চারে ১৮ ও মিষ্টি ১৩ বলে ২ চারে ১৪ রান করে অপরাজিত থাকেন। যুক্তরাষ্ট্রের অদিত্রিবা চাদুসামা ১৫ রানে নেন ২ উইকেট।
এমপি/এসজি
