যুব বিশ্বকাপ ক্রিকেট মাঠে গড়াচ্ছে ১৪ জানুয়ারি। ১৬ দলের আসরে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ। ‘এ’ গ্রুপে ইংল্যান্ডের যুবাদের সঙ্গে ম্যাচ দিয়ে তারা মাঠে নামবে ১৬ জানুয়ারি। বাংলাদেশের গ্রুপে অপর দুই দল হলো অপেক্ষাকৃত দুর্বল কানাডা ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। এই আসরে খেলার আগে বাংলাদেশ দল সংযুক্ত আরব আমিরাতে এশিয়া কাপ অনূর্ধ্ব-১৯ আসরে অংশ নিয়েছিল। এই আসরেও লক্ষ্য ছিল চ্যাম্পিয়ন হওয়া। কিন্তু সেমিতে ভারতের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয়েছিল। সেখান থেকে পরে বাংলাদেশ দল ওয়েস্ট ইন্ডিজ চলে যায়। যুব বিশ্বকাপকে সামনে রেখে বুধবার (১২ জানুয়ারি) অংশগ্রহণকারী দলগুলোর অধিনায়কদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন আয়োজনের করা হয়। বাংলাদেশের অধিনায়ক রকিবুলের বলা কথা ঢাকাপ্রকাশের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো:

প্রশ্ন: এশিয়া কাপের সেমিতে ভারতের সঙ্গে হার নিয়ে কী বলবেন?
রকিবুল: হয়তো আমরা ভারতের সঙ্গে এশিয়া কাপে হেরেছি। কিন্তু এতে আমাদের প্রস্তুতি খারাপ হয়ে যায়নি। এখন আমরা ভালো অবস্থানে আছি। আমরা সেসব ভুলে প্রস্তুতি নিচ্ছি। দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি। আগের চেয়ে আমরা এখন বেশি প্রস্তুত আছি। আশাকরি প্রথম ম্যাচে ভাল করবো।

প্রশ্ন: প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশ কঠিন প্রতিপক্ষের সঙ্গে খেলেনি। এতে কি মনে করেন প্রস্তুতি যথাযথ হয়েছে?
রকিবুল: না এতে কোনো সমস্যা হবে না। কারণ বিশ্বকাপে আসার আগে আমরা ভারতের সঙ্গে তাদের মাঠে খেলে জিতেছি। শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের সঙ্গে ঘরের মাঠে খেলেছি এবং জিতেছি। তো আমরা নিজেদের খেলা নিয়ে ভাবছি। আর প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের সঙ্গে ভালো করার জন্যই এখন নজর দিচ্ছি।

প্রশ্ন: আপনারা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। এই শিরোপা ধরে রাখার ব্যাপারে কতোটা আত্মবিশ্বাসী এবং কিভাবে তা ধরে রাখতে পারবেন?
রকিবুল: দেখেন সব দলই তো বিশ্বকাপ জেতার জন্য আসে। সবার পরিকল্পনা থাকে চ্যাম্পিয়ন হওয়া। শেষ বিশ্বকাপে আমাদের সেই লক্ষ্য ছিল এবং আমাদের প্রস্তুতি, প্রসেস ও পরিকল্পনা সফল হওয়ায় শিরোপা জিতেছিলাম। এবার কোভিডের কারণে সেভাবে প্রস্তুতি নিতে পারিনি। একই ভাবে সব দলগুলোরও কিন্তু প্রস্তুতির ঘাটতিতে আছে। আশা করি আমরা যে প্রস্তুতি নিয়েছি সেটা সেরা সম্ভাব্য প্রস্তুতি। তো সামনে যে ম্যাচগুলো আসছে সেসবে আমরা যদি আমাদের পরিকল্পনার সঠিক প্রতিফলন করতে পারি তবে অবশ্যই ভালো কিছু করতে পারব।

প্রশ্ন: আপনিসহ কয়েকজন বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য। নতুনদের সামনে বিশ্বকাপ জয়ের এই অভিজ্ঞতা কতোটাকু কাজে লাগতে পারে?
রকিবুল: আমি গতবার যে চ্যাম্পিয়ন দলে ছিলাম সেটা অবশ্যই দারুন অনুভূতি। এবার আমরা যারা গতবারের দল থেকে আছি সবাই চেষ্টা করছি বাকিদের দলগত হয়ে খেলার বিষয়টা বোঝাতে। আমরা ওদের বোঝাচ্ছি যে দল হয়ে খেললে যেকোনো ম্যাচে ফল আসবে। এক এক ম্যাচে যেন প্রয়োজনে এক একজন দাঁড়িয়ে যায়, যার দাঁড়ানোর দরকার সে যেন দলের জন্য তার দায়িত্বটা পালন করে। এটা শেষ পর্যন্ত দারুন কাজে দেয়।

প্রশ্ন: বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য হিসেবে এখন অধিনায়ক। এটা কতোটা চাপের কারণ?
রকিবুল: চাপ তো থাকেই। এটা নিয়ে ভাবলে চাপ আরো বাড়বে। আমরা এখন নিজেদের প্রথম ম্যাচটায় কিভাবে সফল হবো সেটায় ফোকাস করছি। হাতে তিন দিনের মতো সময় আছে। আর ওভাবে কোন চাপ নেই ।

প্রশ্ন: সেন্ট কিটসের কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া কতোটুকু সম্ভব হয়েছে?
রকিবুল: এখানকার কন্ডিশন খুব কঠিন না। এখানে আমরা দুই সপ্তাহের মতো আছি। দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেছি, যা ভালো প্রস্তুতি হয়েছে আমাদের জন্য। আমরা এখানে ভালভাবেই কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছি।

প্রশ্ন: বর্তমান চ্যাম্পিয়ন হওয়ার চাপ কিভাবে মানিয়ে নিচ্ছেন?
রকিবুল: আমরা শুধু ম্যাচে ফোকাস রাখতে চাচ্ছি। অবশ্যই আমরা বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু আমরা গ্রুপ পর্বের ম্যাচের দিকে তাকিয়ে। আমরা কিভাবে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে ভাল করতে পারি এবং পরের রাউন্ডে যেতে পারি সেদিকে নজর দিচ্ছি এবং এই লক্ষ্য মাথায় রেখে নিজেদের প্রস্তুত করছি।

প্রশ্ন: নিউ জিল্যান্ডে সিনিয়র দলের সাফল্যে তরুনদের অনুপ্রেরণা বাড়াতে সহায়তা করবে কী?
রকিবুল: এটা তো আমাদের সবার জন্য এবং পুরো বাংলাদেশের মানুষের জন্যই খুব অনুপ্রেরণাদায়ক। বাংলাদেশ ক্রিকেটের স্মরনীয় জয়। আমাদের মধ্যে অনেক কথা হয়েছে এ ব্যাপারে, আমরা বিশ্বাস করেছি সিনিয়ররা যখন করেছে আমাদেরও উচিত কঠিন কন্ডিশনে ভালো করা। তো সেখান থেকেই আমরা বিশ্বাস করি উইন্ডিজ থেকেও ভাল কিছু করতে পারব।

প্রশ্ন: এবারের দল কেমন?
রকিবুল: এবার দলে অনেক অলরাউন্ডার আছে যেটা গতবার আমাদের একটু ল্যাকিংস ছিল। তাও আমরা ভাল করেছিলাম। তো এবার আমাদের দলটা অনেক ভালো এবং ব্যালান্সড।

প্রশ্ন: টুর্নামেন্টে মূল লক্ষ্য কী আপনাদের?
রকিবুল: আমরা পরিকল্পনা করছি যেন সেমিফাইনাল খেলতে পারি। এছাড়া আমাদের তো ছোট টার্গেট যেমন গ্রুপ পর্ব, এক ম্যাচ করে এগোনো এগুলো থাকছে।

এমপি/এসআইএইচ