টিকে থাকার চেষ্টায় লড়াই করছে বাংলাদেশ
কঠিন পথ। ৩৯৫ রানে পিছিয়ে। হার এড়ানোই অসম্ভব। অন্তত যদি ইনিংস হার এড়ানো যায়। লক্ষ্য পূরণ করতে হলে টিকে থাকতে হবে। দিতে হবে ধৈর্য্য ধরার সর্বোচ্চ পরীক্ষা। সেই দুরুহ লক্ষ্যকে সামনে রেখে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করেতে নেমে লড়াই করছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা।
চা বিরতি পর্যন্ত দলের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৫২। লিটন দাস ২৩, নুরুল হাসান সোহান ৬ রান নিয়ে ব্যাট করতে নামবেন।
৩৯৫ রানে নিউ জিল্যান্ড এগিয়ে থাকাতে একটা মৃদু সংশয় ছিল বাংলাদেশকে তারা ফলোঅন করাবে, না নিজেরাই আবার ব্যাট করতে নামবে। তবে এত বিশাল রানের লিড নেওয়ার পর সাধারণত ফলোঅনই করানো হয়ে থাকে। বাংলাদেশও তাই দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নামে। যেখানে প্রথম ইনিংসের সম্পূর্ণ বিপরীত এক বাংলাদেশ দল ছিল।
বাংলাদেশের ব্যাটাররা বলের পর বল ছেড়ে গেছেন। এভাবে বল ছাড়তে গিয়ে তারা প্রাথমিকভাবে সফলও হন। নিউ জিল্যান্ডে পেস অ্যাটাক এবার আর তাদের উপর যমদূত হয়ে চেপে বসতে পারেনি। লাঞ্চের আগে হারায় ২ উইকেট, রান জমা করে ৭৪। চা বিরতিতে যায় আরো ৩ উইকেট হারিয়ে। রান জমা করে ৭৮। দলের রান ৫ উইকেটে ১৫২। খেলেছে ৫৩ ওভার। ইনিংস হার এড়াতে হলে এখনো করতে হবে ২৪৩ রান। ক্রিজে আছেন লিটন দাস ২৩ ও নুরুল হাসান সোহান ৬ রানে। শেষ সেশনে টিকে থাকতে পারলে বাংলাদেশ খেলাকে চতুর্থ দিন পর্যন্ত টেনে নিয়ে যেতে পারবে।
বাংলাদেশর দ্বিতীয় ইনিংসে এবার আর মড়ক লাগেনি। তবে চা বিরতির আগে ২৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে কিছুটা চাপে পড়ে যায়।
দিনের শুরু থেকেই ছিল পজিটিভ বাংলাদেশ। টিম সাউদির করা দিনের প্রথম বলেই সাদমানর ইসলাম বাউন্ডারি মারেন। প্রথম বলে চার মারার পর নিজেদের সম্পূর্ণ গুটিয়ে নেন দুই ওপেনার সাদমান ও মোহাম্মদ নাঈম শেখ। সাদমান মাঝে মাঝে চার হাঁকালেও অপরপ্রান্তে মোহাম্মদ নাঈম ছিলেন অতিমাত্রায় সংযমী। কীভাবে বলের পর বল ছাড়া যায় তার এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেন তিনি। ২৭ রানে ভাঙে উদ্বোধনী জুটি। সাদমান আউট হন ২১ রানে। তখন নাঈমের রান ৩৫ বলে ৫।
নাঈমের সঙ্গে জুটি গড়েন নাজমুল হোসেন শান্ত। তিনি নিজে তৃতীয় বলে জেমিসনকে ফ্লিক করে চার মেরে রানের খাতা খুলেন।এই ওভারে জীবন পান তিনি। এরপর তিনি ওয়েগনারের এক ওভারে চার ও ছক্কা মেরে বোলারদের চাপ কমানোর চেষ্টা করেন। পরে ওয়েগনারের আরেক ওভারে দুই বাউন্ডারি মারেন। কিন্তু খুব বেশি দূর যেতে পারেননি। এ ওয়েগনারেরই শট বলে পুল করতে গিয়ে ফাইন লেগে বোল্টের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন ২৯ রানে। বল খেলেছিলেন ৩৪টি। সাদমান প্রথম বলেই এবং নাজমুল তৃতীয় বলে বাউন্ডারি মারলেও নাঈম প্রথম বাউন্ডারি মারেন ৬৩ বলে। বোলার ছিলেন বোল্ট। মধ্যাহ্নভোজে যান নাঈম ৭৫ বলে ১৫ ও মুমিনুল ৫ বলে ২ রান নিয়ে।
মধ্যাহ্নভোজের পরও দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান দেখে-শুনে খেলা বাড়িয়ে দেন। নাঈম ছিলেন যথারীতি এক রান নির্ভর। মুমিনুল সময় সুযোগ পেলে চার মেরেছেন। জুটিতে ৩৪ রান আসে ৫৯ বলে। এবার আউট হয়ে যান নাঈম। সাউদির বলে দ্বিতীয় স্লিপে বাঁদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে চমৎকার ক্যাচ ধরেন দলপতি লাথাম। শেষ হয় বাংলাদেশের শততম টেস্ট ক্রিকেটার হিসেবে অভিষেক হওয়া নাঈমের ধৈর্য্যশীল ইনিংসের ৯৮ বল খেলে করেন ২৪ রান। এই জুটি ভেঙে যাওয়ার পর বাংলাদেশ চা বিরতির আগে দ্রুত আরো ২ উইকেট হারায়। প্রথমে মুমিনল, পরে প্রথম ইনিংসের হাফ সেঞ্চরিয়ান ইয়াসির আলীকে। ওয়েগনারের বলে প্রথম স্লিপে বিদায়ী টেস্ট খেলতে রস টেলরের হাতে ধরা পড়েন ৩৭ রানে। ওয়েগনার তার পরের ওভারে ইয়াসির আলীকে ফিরিয়ে দেন মাত্র ২ রানে। দ্বিতীয় স্লিপে তার ক্যাচ ধরেন লাথাম। এরপর ইনিংসে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন লিটন ও সোহান।
এমপি/এসএন