রামোসের হ্যাটট্রিকে পর্তুগাল সহজেই কোয়ার্টার ফাইনালে
ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো পর্তুগালের আশা-ভরসার প্রতিক। এমন একজন খেলোয়াড়কে কোচ আচরনগত সমস্যার কারণে নকআউট পর্বের মতো ম্যাচে সেরা একাদশে রাখেননি। তার পরিবর্তে মাঠে নামিয়ে ছিলেন ২১ বছর বয়সি গঞ্জালো রামোসকে। রোনালদোর অনুপস্থিতি তিনি বুঝতেই দেননি হ্যাট্রিক করে। তার হ্যাটট্রিক পর্তুগাল অনায়েসেই ৬-১ গোলের বড় ব্যবধানে সুইজারল্যান্ডকে হারিয়ে ১৬ বছর পর পৌঁছে গেছে শেষ আটে। অপর গোল তিনটি করেন, জুরেরিও ও রাফায়েল লিও। সুইসদের হয়ে স্বান্তনাসূচক গোলটি করেন আকানজি। এবারের বিশ্বকাপে এটিই ছিল সবচেয়ে বড় ব্যবধানে জয়। গ্রুপ পর্বে স্পেন ৬-২ গোলে হারিয়েছিল ইরানকে। কোয়ার্টার ফাইনালে পর্তুগাল লড়বে মরক্কোর বিপক্ষে ১০ ডিসেম্বর।
লুসাইল স্টেডিয়ামে রোনালদোকে সেরা একাদশে না দেখে দর্শকদের মন আতকে উঠেছিল। তার অভাব পূরণ করবে কে? নক আউট পর পাড়ি দে কিভাবে? কিন্তু রামোস সবার শঙ্কা দূর করে ম্যাচকে সহজলভ্য করে তুলেন। কোচ সান্তোস অবশ্য রোনলদোর প্রতি অবিচার করেননি। পাঁচ গোল দেয়ার পর ৭৩ মিনিটে তিনি রোনালদোকে মাঠে নামান। তার পরিবর্তে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করা পেপে এ সময় রোনালদোর হাতে অধিনায়কের আর্ম ব্যান্ড পরিয়ে দেন।
১৭ মিনিটে গোল করে এগিয়ে যায় পর্তুগাল। থ্রো ইন থেকে বল পেয়ে জোয়াও ফেলিক্স বক্সে রোনালদোর পরিবর্তে সেরা একাদশে সুযোগ পাওয়া গঞ্জালো রামোসকে দিলে তিনি বাম পায়ের তীব্র শটে সুইস জাল কাঁপিয়ে তুলেন। প্রথম আর্ন্তজাতিক ম্যাচ খেলতে নেমেই গোল পেয়ে যান ২১ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড। ২০ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে ওটাভিওর শট গোলরক্ষক সোমের আটকে দেন। ২২ মিনিটে রামোস সুযোগ পেয়েও সরসারি গোলরক্ষকের হাতে তুলে দেন।
২৯ মিনিটে সুইজারল্যান্ড প্রথম বলার মতো সুযোগ পায়। ফ্রি কিক থেকে শাকিরির শট সাইড পোষ্ট ঘেষে বাইরে চলে যায়। ৩৩ মিনিটে ব্রোনো ফার্নান্দেজের কর্ণার থেকে সুইজারল্যান্ডের দুই জন খেলোয়াড়ের ফাঁক দিয়ে লাফিয়ে উঠে চমৎকার হেডে পেপে গোল করে দলকে ২-০ গোলে এগিয়ে নেন।
৩৮ মিনিটে সুইসরা নিশ্চিত গোল বঞ্চিত হয় গোল লাইন থেকে দিয়োগো ডালট বল ফিরিয়ে দিলে। ডান প্রান্ত থেকে ফার্নান্দেজের ক্রস গোলরক্ষক দিয়াগো কস্তা ফিরিয়ে দিলে ফিরতে বলে ফিউলের হেড গোলে প্রবশে করছিল। তখনই ত্রাতা হয়ে হাজির হন দিয়োগো ডালট। ২৬ মিনিটে আবারও সুযোগ নষ্ট করেন রামোস। বক্সের ভেতর গোলরক্ষককে একা পেয়েও তিনি কাজে লাগাতে পারেননি। তার দ্বিতীয় বার দিয়ে নেয় বাম পায়ের শট গোলরক্ষক সোমের বাম দিক দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে কর্নার করে রক্ষা করেন।
দ্বিতীয়ার্ধের খেলা শুরু হতেই পর্তুগাল তৃতীয় গোল পেয়ে যায়। রামোস একাধিক সুযোগ নষ্ট করার পর ৫০ মিনিটে তিনি নিজের দ্বিতীয় গোল করেন অনেক কঠিন জায়গা থেকে। ডান প্রান্ত দিয়ে দিয়োগো ডালটের ক্রস থেকে চলন্ত বলে শট করে প্রথম বার দিয়ে নিশানাভেদ করেন। ৫৪ মিনিট রামোসের কাছ থেকে বল পেয়ে বক্সের ভেতর ডুকে বাম পায়ের প্লেসিং শটে জাতীয় দলের হয়ে প্রথম গোল করেন গুয়েরিরো। পর্তুগাল এগিয়ে যায় ৪-১ গোলে। ৫৮ মিনিটে সুইজারল্যান্ড একটি গোল পরিশোধ করেন আকানজি। কর্ণার থেকে দলের একজন খেলোয়াড়ের মাথা ছুয়ে তার সামনে আসলে তিনি আলতে টোকায় বল জালে ঠেলে দেন।
৬৬ মিনিটে রামোস এবারের বিশ্বকাপে প্রথম হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন । মাঝ মাঠে গড়া উঠা আক্রমণে জোয়াও ফেলিক্সের পাস থেকে বল পেয়ে নিজের অভিষেক ম্যাচকে রঙিন করে তুলেন (৫-১)। প্রথম গোলও তিনি করেছিলেন তার পাস থেকে। ইনজুরির টাইমের দ্বিতীয় মিনিটে সুইসদের জালে শেষ পেরেক ঢুকান রাফায়েল লিও। বাম প্রান্ত দিয়ে আক্রমনে উঠে বক্সের ভেতর থেকে ডান পায়ের রংধনু শটে তিনি বল জালে জড়ান। তিনি মাঠে নেমেছিলেণ ৮৭ মনিটে ব্রোনো ফার্নান্দেজের পরিবর্তে।
এমপি/এএস