ভারতের বিদায়ে ফাইনালের রং বিবর্ণ!
সিডনি থেকে মেলবোর্নের ট্রেন। পুরোটাই ভর্তি যাত্রীতে। অনেকেরই নজর ভারত-ইংল্যান্ডের সেমিফাইনালের দিকে। দুরন্ত গতিতে ছুটে চলা ট্রেনে মাঝেমধ্যে ইন্টারনেটের সিগন্যাল চলে যাওয়ায় ম্যাচের আপডেট জানতে বিঘ্ন ঘটাচ্ছিল।
ইংল্যান্ডের দুই ওপেনার বাটলার ও হেলসের মারমুখী ব্যাটিংয়ে এক একটি চার আর ছক্কা ট্রেনে ভারতীয় দর্শকদের অন্তরে কাটা হয়ে আঘাত করছিল। একটা পর্যায়ে তারা হার মেনে নেন। কিন্তু যখন ১০ উইকেটে ভারত হেরে যায়, তারা যেন বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না।
এসময় ট্রেনে অন্য দেশের যাত্রী, যারা ক্রিকেট ম্যাচ ফলো করেছিলেন তারাও অবাক হয়ে যান এই ফলাফলে। খেলা শেষ হওয়ার মিনিট দশেক না যেতেই এক ভারতীয় নারী সঙ্গে সঙ্গে অন্যদের উদ্দেশ্যে জানান, তার স্বামী ফাইনাল খেলার টিকিট কেটেছিলেন। এখন না দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ট্রেনে এসময় ভারতীয় দর্শকদের দেখা গেছে দুঃখ ভারাক্রান্ত, হতভম্ব। কিছুতেই যেন বিশ্বাস তারা করতে পারছিলেন না।
ভোরের আলো ফুটে উঠার পর ধীরে ধীরে মেলবোর্নের আকাশও যেন অনেকটা ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে। এই ভারাক্রান্ত শুধু ভারতীয় দর্শকদের জন্য। শুক্রবার মেলবোর্নের আকাশে রোদ-মেঘের খেলা হলেও ভারতীয়দের জন্য শুধুই মেঘ হয়ে ছিল। আইসিসির যেকোনো ইভেন্ট মানেই ভারত ফাইনাল খেলবে, চ্যাম্পিয়ন হবে এই বিশ্বাস লালন করে ক্রিকেটকে দ্বিতীয় ধর্ম মানা ভারতীয়রা। অতীতের ন্যায় এবারও সেই আশায় বুক বেঁধে ফাইনালে অধিকাংশ টিকিটই তারা কেটে রেখেছিল। ইংল্যান্ডের সঙ্গে সেমিফাইনাল শুরু হওয়ার আগেও ফাইনালের টিকেট সোল্ড আউট দেখাচ্ছিল। ভারতীয়দের হারে সেখানে অল্প অল্প করে টিকেট পাওয়া যেতে শুরু করে। কারণ ভারতীয়রা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে ফাইনাল থেকে।
ফাইনালে ভারত না থাকা মানেই আকর্ষণ অর্ধেক কমে আসা। শেয়ারবাজারের পতনের মতোই ফাইনালে আগ্রহের পতন ঘটেছে ভারতের বিদায়ে। কিন্তু ভারতের বিদায়ে খুশি নিউজিল্যান্ড থেকে ফাইনাল ম্যাচ দেখতে আসা বাংলাদেশের আব্দুর রহিম মিয়া হালিম। বাংলাদেশের সঙ্গে আম্পায়ারের সহযোগিতা নিয়ে জিতলেও ইংল্যান্ডের সঙ্গে আর পেরে নিয়ে উঠেনি বলে জানান তিনি। ফাইনাল দেখার পরিকল্পনা তিনি করেছিলেন নিউজিল্যান্ডকে ঘিরে। নিউজিল্যান্ডের বিদায়েও কষ্ট পেয়েছেন কিন্তু ফাইনাল খেলাটা তিনি প্রাণভরে উপভোগ করতে চান।
এমপি/এসজি