প্রোটিয়াদের হারিয়ে টিকে থাকল পাকিস্তান
জিতলেই সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকা। হারলে পাকিস্তানের বিদায়। এমন সমীকরণ সামনে রেখে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে মুখোমুখি হয়েছিল দুই দল। বাঁচা-মরার ম্যাচে উত্তরে গেছেন বাবর আজমরা। বৃহস্পতিবার শাদাব খানের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে প্রোটিয়াদের বৃষ্টি আইনে ৩৩ রানে হারিয়ে সেমির রেসে টিকে থাকল পাকিস্তান।
ব্যাটিংয়ে ইফতিখার আহমেদ এবং শাদাব খানের ব্যাটে রক্ষা পেয়েছে এশিয়ার দলটি। দুজনের হাফসেঞ্চুরিতে ব্যাটিং বিপর্যয় কাটিয়ে তুলে পাকিস্তান। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে পায় ১৮৫ রানের বড় সংগ্রহ।
এরপর বোলিংয়ে দলকে সেরা শুরু উপহার দেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। জ্বলে উঠেন শাদাবও। ম্যাচের মাঝপথে আবার বৃষ্টির বাগড়ায় ১৪ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা পায় ১৪২ রানের নতুন লক্ষ্য। যা তাড়ায় ৯ উইকেটে ১০৮ রানে থামে প্রোটিয়া।
রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই আঘাত হারায় প্রোটিয়ারা। কুইন্টন ডি কককে রানের খাতা খুলতে দেননি শাহিন শাহ। নিজের পরের ওভারে রিলে রুশোকে মাঠছাড়া করেন এই পাকিস্তানি পেসার। প্রথম দুই ওভারে ২ উইকেট শিকারের বিপরীতে মাত্র ২ রান দেন শাহিন শাহ।
তৃতীয় উইকেটে জুটি গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে সঠিক পথেই রেখেছিলেন অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা এবং এইডেন মার্করাম। উইকেট আগলে ঝড়ো গতিতেই ব্যাট চালাচ্ছিল দুজনে। তাদের গতি রোধ করেন শাদাব। ভাঙেন ২৭ বলে ৪৯ রানের জুটি। নিজের প্রথম ওভারেই দুই প্রোটিয়া ব্যাটারকে প্যাভিলিয়নে পাঠান তিনি।
পাকিস্তানি লেগস্পিনারের প্রথম শিকার বাভুমা। ১৯ বলে ৪ চার এবং ১ ছক্কায় ৩৬ রানে আউট হন প্রোটিয়া অধিনায়ক। পরক্ষণেই ১৪ বলে ২০ রান করা মার্করামকে বোল্ড করেন শাদাব। খানিকবাদে বৃষ্টির বাগড়ায় বন্ধ হয়ে যায় খেলা। তখন ৯ ওভারে ৪ উইকেট হারানো চোকারদের সংগ্রহ ছিল ৬৯ রান।
আকাশের কান্নায় কমে আসে ম্যাচের পরিধি। ১৪ ওভারে জয়ের জন্য ১৪২ রানের লক্ষ্য পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ঝড় তুলেছিলেন হেনরিখ ক্লাসেন। সেই ঝড় থামান শাহিন শাহ। তিনি আউট করেন ৯ বলে ১৫ রান করা ক্লাসেনকে। এরপর শেষ ৩ ওভারে ৪৭ রানের সমীকরণ আর মেলাতে পারেনি প্রোটিয়ারা।
এর আগে পাকিস্তানকে ব্যাটিং বিপর্যয়ে ফেলে প্রোটিয়া পেসাররা। উইকেট পতনের শুরু ওয়েন পারনেলের বলে। মোহাম্মদ রিজওয়ানকে (৪) আউট করেন এই প্রোটিয়া পেসার। ব্যাটিংয়ে নেমেই বোলারদের ওপর চড়াও হয়েছিলেন মোহাম্মদ হারিস। ১৯ মিনিট উইকেটে টিকে ১১ বল খেলা এই পাকিস্তানি ব্যাটার ২ চার ও ৩ ছক্কায় করেন ২৮ রান। তাকে থামান আনরিচ নর্টজে।
পারলেন-নর্টজের পর লুঙ্গি এনগিডির আঘাত। তিনি শিকার বানান পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজমকে (৬)। ইনিংসের সপ্তম ওভারে শান মাসুদকে (২) বাভুমার ক্যাচ বানান নর্টজে। ৬.৩ ওভারে মাত্র ৪৩ রানে ৪ উইকেট খুঁইয়ে মহাবিপদেই পড়েছিল পাকিস্তান। সেখান থেকে দলকে টেনে তুলেন ইফতিখার ও মোহাম্মদ নওয়াজ।
দুজনের ৫২ রানের (৩৯ বলে) জুটি ভাঙেন তাবরাইজ শামসি। প্রোটিয়া স্পিনার আউট করেন ২৮ রান করা নওয়াজকে। এরপর শাদাবকে সঙ্গে নিয়ে দলকে ম্যাচ উইনিং জুটি উপহার দেন ইফতিখার। দুজনের জুটিতে দলের খাতায় যোগ ৮২ রান। সেটাও মাত্র ৩৬ বলে!
২০ বলে হাফসেঞ্চুরির কোটা পেরুনো শাদাব আউট হন ৫২ রানে। তার চেয়ে এক রান কম করে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ইফতিখার। এরপর বোলিংয়েও পাকিস্তানের জয়ে অবদান রেখে ম্যাচসেরা হয়েছেন শাদাব। এই জয়ে দ্বিতীয় গ্রুপ টেবিলে তিনে উঠে এসেছে পাকিস্তান। ৪ ম্যাচ শেষে তাদের ঝুলিতে জমা পড়েছে ৪ পয়েন্ট।
হারলেও দ্বিতীয় স্থান দখলে রেখেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৪ ম্যাচে তাদের অর্জন ৫ পয়েন্ট। সমান ম্যাচ শেষে শীর্ষে ভারত (৬ পয়েন্ট), চারে বাংলাদেশ (৪) এবং পাঁচে জিম্বাবুয়ে (৩)। পাঁচ দলই সেমি খেলার আশা বাঁচিয়ে রেখেছে। বাদের খাতায় কেবল নেদারল্যান্ডস।
এমএমএ/