ভারতকে হারাতে বাংলাদেশের প্রয়োজন ১৮৫ রান
ভারতকে অল্পতে বেধে রাখার সৌভাগ্য হয়নি বাংলাদেশের। বুধবার (২ নভেম্বর) অ্যাডিলেড ওভালে লোকেশ রাহুল আর বিরাট কোহলির হাফসেঞ্চুরিতে বড় সংগ্রহ পেয়েছে এশিয়ার শক্তিধররা। বাংলাদেশকে ১৮৫ টার্গেট দিয়েছে ভারত।
অ্যাডিলেডেও বল হাতে জ্বলে উঠেছিলেন তাসকিন আহমেদ। কিন্তু সতীর্থদের ক্যাচ মিসের মহড়ায় উইকেট পাননি তিনি। সাকিব আল হাসান এবং হাসান মাহমুদ খরুচে হলেও পেয়েছেন উইকেট। একাদশে ফিরে শরিফুল ইসলাম রান বিলিয়েছেন দেদারছে। অপরদিকে মোস্তাফিজুর রহমান ছিলেন মন্দের ভালো। তাতে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৪ রানের বড় পুঁজি পায় ভারত।
এদিন ম্যাচ শুরুর কিছুর সময় আগেও উইকেটে ছিল কভার। তাই টস জিতে নির্দ্বিধায় বোলিং নেন সাকিব আল হাসান। অধিনায়কের সিদ্ধান্তের মান রাখতে পেরেছেন কেবল তাসকিন। বিশ্বমঞ্চে ক্যারিয়ারের সেরা সময় কাটানো টাইগার পেসার ভারত ম্যাচেও নিজ আলোয় আলোকিত ছিলেন। প্রথম ওভারে দেন মাত্র ১ রান।
দ্বিতীয় ওভারে তাসকিন হয়ে উঠতে পারেননি শরিফুল। সৌম্য সরকারের বদলে একাদশে ঠাঁই পেয়ে বোলিংয়ে জ্বলে উঠতে পারেননি বাঁহাতি পেসার। তার পঞ্চম বৈধ ডেলিভারিতে ছক্কা হাঁকান লোকেশ রাহুল। প্রথম ওভারেই একটি নো বল করেন শরিফুল। সবমিলে দেন ৯ রান।
পরের ওভারে ক্যাচ মিসের হতাশায় পুড়েন তাসকিন। তাসকিনের চতুর্থ বলে রোহিত শর্মা ক্যাচ তুললেও তা তালুবন্দি করতে পারেননি ডিপ স্কয়ার লেগে থাকা হাসান মাহমুদ। সতীর্থের ভুলে উইকেট না পেলেও তাসকিন নিজে কোনো ভুল করেননি। টানা দ্বিতীয় ওভারে দেন ১ রান।
ক্যাচ মিসের ভুলটা ইনিংসের চতুর্থ ওভারে পুষিয়ে দেন হাসান। যে রোহিতের ক্যাচ ছেড়েছিলেন তিনি, তাকেই ইয়াসির আলীর ক্যাচ বানান টাইগার পেসার। ৮ বলে ২ রান করেন ভারতীয় অধিনায়ক। পরের ওভারে তাসকিন দুটো সুযোগ তৈরি করেছিলেন।
বিরাট কোহলির একটি ড্রাইভ ছিল কাভারে থাকা লিটন দাসের ধরাছোঁয়ার বাইরে। পরের বলটি কোহলির ব্যাটের কানায় লেগে চলে যায় স্লিপে থাকা ইয়াসিরের ওপর দিয়ে। দুই বলেই বাউন্ডারি পান কোহলি। প্রথম ৩ ওভারে ১০ রান দেওয়া তাসকিন তার শেষ ওভারে আরও ৪ রান। সবমিলে ২৪ বলে মোটে ১৫ রান দেন বাংলাদেশের গতি কিং।
বোলিংয়ে ঠিক উল্টো রথে চড়েছিলেন শরিফুল, যিনি তার দ্বিতীয় ওভারে ২৪ রান দেন! কিছুটা খুরচে ছিলেন সাকিবও, কিন্তু পকেটে পুড়েছেন ২ উইকেট। বিপজ্জনক হয়ে ওঠা রাহুলকে ফেরান টাইগার অধিনায়ক। তখন ৯.২ ওভারে ভারতের সংগ্রহ ছিল ৭৮ রান। ৩২ বলে ৩ চার ও ৪ ছক্কায় ৫০ করেন রাহুল।
ভারতীয় ওপেনার ফেরার পর উইকেটে নেমেই বোলারদের ওপর চড়াও হন সূর্যকুমার যাদব। ১৬ বলে ৪ চারে ৩০ করা এই হার্ড-হিটারকেও মাঠছাড়া করেন সাকিব। ১১ রানেই আউট হতে পারতেন সূর্য। সাকিবের বলে সুইপ করতে গিয়ে শূন্যে বল ভাসিয়েছিলেন তিনি। অনেকটা ছুটে বলের কাছে গেলেও তা ধরতে পারেননি শর্ট লেগে থাকা মোস্তাফিজুর রহমান।
তবে শেষ পর্যন্ত সাকিবের কাছেই ধরা দিয়েছেন সূর্য। দুই উইকেট শিকারের বিপরীতে ৪ ওভারে ৩৩ রান দেন বাংলাদেশ দলপতি। সাকিবের মতোই খরুচে হলেও ২ উইকেট পেয়েছেন হাসান। তিনি দ্বিতীয় শিকার বানান বিধ্বংসী ব্যাটার হার্দিক পান্ডিয়াকে। ইয়াসিরকে ক্যাচ দেওয়ার আগে ৬ বলে ৫ রান করেন পান্ডিয়া। ৭ রান করে রান আউটের ফাঁদে পড়েন দিনেশ কার্তিক।
এরপর অক্ষর প্যাটেলকে নিজের তৃতীয় শিকার বানান হাসান। ৩ উইকেট পেলেও ৪ ওভারে ৪৭ রান দিয়েছেন তিনি। শরিফুলের শেষ ওভারে একটি করে চার-ছক্কা হাঁকান রবিচন্দ্রন অশ্বিন। প্রথম ৪ বলে ১১ রান নেন ভারতীয় অলরাউন্ডার। শেষ দুই বলে কোহলি নেন ৩ রান। ৪ ওভারে ৫৭ রান দিয়ে শরিফুলই ছিলেন সবচেয়ে খরুচে বোলার।
৪৪ বলে ৮ চার এবং ১ ছক্কায় ৬৪ রানে অপরাজিত ছিলেন কোহলি। অশ্বিন অপরাজিত ছিলেন ১৩ রানে।
আরএ/