ক্লোজ ম্যাচ জেতা শিখছেন সাকিব
তীরে এসে তরী ডুবানোর ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জুড়ি মেলা ভার! এশিয়া কাপে পাকিস্তান ও ভারতের বিপক্ষে ফাইনাল, ভারতের বিপক্ষে নিদাহাস ট্রফির ফাইনাল, ২০১৬ সালে টি-টেয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ এরকম উদাহরণ আছে ভুরি ভুরি। সেই বৃত্ত বাংলাদেশ ভাঙতে পেরেছে এবারের আসরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ক্লোজ এক ম্যাচ দুইবার জিতেছে। প্রথমে ১ বলে ৫ রান। পরে ১ বলে ৪ রান। দুইবারই বাংলাদেশ কোনো রান নিতে দেয়নি। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এমন ক্লোজ ম্যাচ জয়কে সাকিব মনে করেন, তারা শিখতে শুরু করেছেন।
মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) অ্যাডিলেডের ওভালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেই ম্যাচ নিয়ে তিনি বলেন, ‘ক্লোজ ম্যাচ জিতলে অবশ্যই ভালো লাগে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই যেটা হয় লাস্ট ২ ওভারেই ম্যাচের ফলাফল নির্ধারিত হয়। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট অল্প সময়ের খেলা। এখানে প্রতিযোগিতা বেশি থাকে। তাই ক্লোজ ম্যাচই বেশি হবে। এই নার্ভ ধরে রাখতে পারাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আগে যেটা হচ্ছিল আমরা এরকম ক্লোজ ম্যাচ হেরে যাচ্ছিলাম। সেখান থেকে আমি মনে করি শিখছি, বলব না শিখে গেছি। একটু তো ইমপ্রুভমেন্ট আছেই।’
বাংলাদেশ ইদানিং ৮ ব্যাটসম্যান নিয়ে খেলার কারণে একজন বোলার কম নিয়ে খেলতে নামে। পঞ্চম বোলারের কাজটি করানো হয়ে থাকে মোসাদ্দেক, সৌম্য কিংবা আফিফকে দিয়ে। কিন্তু সাকিব এখানে একজন বোলারের ঘাটতি দেখছেন না। তিনি মনে করেন, বোলার একজন কম থাকলে তো ২০ ওভারই বোলিং করা সম্ভব হতো না।
তিনি বলেন, ‘দেখুন ঘাটতি থাকলে তো আমরা ২০ ওভার বোলিং করতে পারতাম না। আর এ বছরের রেকর্ড যেটা বলে যে মোসাদ্দেক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটা ম্যাচে ৫ উইকেটও পেয়েছে। টি-টোয়েন্টিতে ৫ উইকেট পাওয়া খুবই বিরল। সেখানে যদি তাকে অকেশনাল বোলার মনে করা হয়, সেটা ভুল। ও হয়তো আরও ভালো বোলিং করতে পারে। ওভাবে আমরা হয়তো তাকে বিবেচনা করিনি। কিন্তু ঘরোয়া ক্রিকেটে যদি খেয়াল করেন সে টি-টেয়েন্টি ক্রিকেটে নিয়মিত ৪ ওভার বোলিং করে থাকে।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ৪ পেসার নিয়ে খেলার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত ৩ পেসার খেলানো হয়। ভারতের বিপক্ষে ৪ পেসার খেলানো হবে কি না সে বিষয়ে এখনো কোনো চিন্তা-ভাবনা করেননি বলে জানান সাকিব। তিনি বলেন, ‘আমি এখন পর্যন্ত ওভাবে কিছু চিন্তা করিনি। কোচের সঙ্গে কিছু কথা হয়েছে। আরও কয়েকজন কিছু কথা বলেছে। তবে আমি এখনো সেভাবে ভাবিনি। আমার মনে হয় একটু অপেক্ষা করে চিন্তা করাটাই ভালো। আসলে অনেক কিছুই মাথায় রাখতে হবে দল গঠনের সময়। আগেও যেটা বললাম, দল যেটাই ঠিক করা হোক, আমি আশাবাদী ভালো খেলবে। এমন একটা দল এখন খেলেছে যেটা দুইটা ম্যাচজিতেছে। সো সবকিছু চিন্তা করেই একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে দলের সবাই সেটা ব্যাক করবে এবং মাঠে শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করবে।’
স্পিন বোলিং বাড়ানো নিয়ে সাকিব বলেন, ‘সেরকম যদি আমরা করতে পারতাম একটা লেফট আর্ম স্পিনার, একটা অফস্পিনার, তিনটা ফাস্ট বোলার, তাহলে আমাদের জন্য বেস্ট অবশ্যই হতো। তবে আমাদের যে রিসোর্স আছে, এর মধ্য থেকেই সেরা কম্বিনেশনটা বের করতে হবে। সবাই সবার মতামত অবশ্যই দিতে পারে। দিন শেষে সিদ্ধান্ত নিতে হবে এবং দলের ভালোর জন্য নিতে হবে। জরুরি নয় যে সিদ্ধান্তটা ঠিক হবে কিংবা ভুল হবে। তবে ভারতের বিপক্ষে আমাদের যেটা সেরা কম্বিনেশন মনে হবে, সেটাই করার চেষ্টা করব।’
বাংলাদেশ দলে টপ অর্ডারের ৪ ব্যাটসম্যানই বাঁহতি। এদের বিপক্ষে ভারতের অফ স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন অনেক বেশি ফায়দা তুলে নেওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সে ক্ষেত্রে ব্যটিং অর্ডারে পরিবর্তন আনার সম্ভাবনা প্রসঙ্গে সাকিব বলেন, ‘আলোচনা করিনি, করলেও এখানে বলব না (হাসি)। হ্যাঁ, অনেক কিছু চিন্তা করতে হবে। জরুরি নয় সব চিন্তা সঠিক হবে।’
এমপি/এসজি