নেশায় ঘোরে সময় কাটত কিং অব সুইংয়ের
রিভার্স সুইংয়ের উদ্ভাবক বলা হয় তাকে। ক্রিকেট ইতিহাসে তিনি অন্যতম সেরা এক পেসার। বলা হচ্ছে পাকিস্তানের ওয়াসিম আকরামের কথা। অথচ বর্ণিল ক্যারিয়ার শেষে মাদক গ্রাস করেছিল তাকে। নেশার ঘোরে সময় কাটত কিং অব সুইংয়ের।
২০০৩ সালে ১৮ বছরের ক্যারিয়ারের ইতি আকরাম নিজেই জানিয়েছেন ক্রিকেট থেকে অবসরের পর কোকেনে আসক্ত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। তবে প্রথম স্ত্রী হুমার মৃত্যুর পর মাদকের পথ থেকে সরে আসেন।
নিজের আত্মজীবনী সুলতান: আ মেমোইর’এ তার জীবনের ভয়াবহ অধ্যায়ের কথা তুলে ধরেছেন আকরাম। ২০০৯ সালের অক্টোবরে মাত্র ৪২ বছর বয়ে মৃত্যু হয় হুমার। স্ত্রীর মৃত্যুর পর কোকেন ছাড়েন আকরাম।
১০৪ টেস্টে ৪শর বেশি উইকেট নেয়া আকরাম বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় খ্যাতির ধরনটা সর্বগ্রাসী, প্রলুব্ধ করে এবং মনকে বিপথে ঠেলে দেয়। অনেক বেশি খেলার চাপ থেকে মুক্ত থাকতে এটি ছিল অ্যাড্রেনালিনের একটি বিকল্প।’
মাত্র ৩০ বছর বয়সে ডায়াবেটিস ধরা পড়া আকরাম জানান, ইংল্যান্ডে একটি পার্টিতে তাকে অফার করা হয়েছিলে। সেটাই ছিল তার প্রথম কোকেন গ্রহণ করা। এরপর থেকেই এটা গ্রহণের মাত্রা বেড়ে যায় আমি বুঝতে পারলাম প্রচন্ড চাপ সামলাতে নিয়মিত কাজ চালিয়ে যেতে এটা প্রয়োজন।’
আকরাম বলেন, ‘এটি (কোকেন) আমাকে অস্থির করে তুলেছিল। এটি আমাকে প্রতারক করে তুলেছিল। আমি জানি, ঐ সময়ে প্রায়ই একাকী থাকতো হুমা। সে করাচিতে বাবা-মা এবং ভাইবোনদের কাছে ফিরতে চাইতো। আমার ইচ্ছা ছিল না। কেন? আমি একা করাচি যেতে পছন্দ করতাম। কাজে যাবার মত প্রতিদিনই একবার করে নিয়মিত পার্টিতে যেতাম। এক দিন আমার মানিব্যাগে একটি কোকেনের প্যাকেট পায় হুমা। এরপর তার সাহায্য নিতে আমি রাজি হলাম।’
লাহোরে পুনর্বাসন কেন্দ্রে যাবার কথা জানিয়ে আকরাম বলেন, ‘এটি পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছিল। কেননা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠার আগেই ডাক্তার ডলারের চুক্তি করে নিয়েছিল। একটি বিল্ডিংয়ে পাঁচটি ঘর, একটি মিটিং রুম এবং একটি রান্নাঘর ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘ডাক্তার একজন ছলনাকারী মানুষ ছিলেন। চিকিৎসার পরিবর্তে অর্থের বিনিময়ে আত্মীয়দের থেকে আলাদা করতে কাজ করেছিলেন।’
চিকিৎসায় সুস্থ হওয়া সম্ভব হয়নি এটি পরবর্তী সময়ে আরও বেশি বেড়ে যায়। ২০০৯ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি চলাকালীন এটি আবারও শুরু হয়। টুর্নামেন্ট শেষ হবার দুই সপ্তাহ পর মারা যায় হুমা। স্ত্রীর মৃত্যুর পর কোকেন ত্যাগ করেন আকরাম।
তিনি বলেন, ‘হুমার মৃত্যুর পর অনেক কষ্টে আমি মাদক ছেড়েছি।’
এমএমএ/