শান্তর স্পেশাল ইনিংস
বাংলাদেশের মোট রান ১৫০। এর অর্ধেকের কাছাকাছি রান এসেছে ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট থেকে। ক্যারিয়ারের সেরা ৭১ রান করে তিনি আউট হন। এই রান ছিল তার টি-টেয়েন্টি ক্রিকেটে প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। তিনি এই রান করার পথে শুরুতেই হারিয়েছিলেন সঙ্গী ওপেনার সৌম্য সরকারকে।
সাম্প্রতিক কালে এটি অবশ্য বাংলাদেশ দলের প্রধান বৈশিষ্ঠ্য। একজন শুরুতে বিদায় নেওয়ার পর অপরজনও একই পথ ধরেন। এরপর হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন। কিন্তু আজ শান্তর কারণে ব্যাটিং লাইনে ধস নামেনি। তারপরও কিন্তু বাংলাদেশের সংগ্রহ হৃষ্টপুষ্ট হয়নি।
বাংলাদেশ দলের চিরায়িত ব্যাটিং ব্যর্থতার কথা শান্তর বেশ ভালোই জানা আছে। যে কারণে তিনি টি-টোয়েন্টি মেজাজে সেভাবে খেলতে পারেনি। একটু দেখে শুনে খেলেছেন। ৫৫ বলে ৭১ রানের ইনিংসে ছিল ছক্কা একটি, বাউবন্ডারি ৭টি। হাফ সেঞ্চুরি করতে বল খেলেন ৪৫টি। বাউন্ডারি ছিল ৫টি। পরের ১০ বলে ২ বাউবন্ডারি আর ১ ছক্কায় যোগ করেন ২১ রান। তাইতো তিনি তার এই ইনিংসকে ‘স্পোশাল’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
আজ ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমার জন্য এটা একটু স্পেশাল। এটা আমার প্রথম অর্ধশতক ছিল। বেশ কয়েকটা ইনিংস আমার শুরু হচ্ছিল, কিন্তু বড় করতে পারছিলাম না। বাট আজকে ওই কমিটমেন্টটা ছিল আমার মধ্যে, যে আমি যদি সেট হই, তাহলে যত বড় করা যায়। তো করতে পেরেছি আলহামদুলিল্লাহ।
নাজমুল হোসেন শান্ত যখন ইনিংস মেরামত করছিলেন, তখন অপরপ্রান্তে কিন্তু আর কেউ সেভাবে দাঁড়াতে পারেননি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান ছিল আফিফের ২৯। শান্ত যখন আউট হন. তখন দলের রান ৪ উইকেটে ১২২, ওভার ১৬.২। এ রকম পরিস্থিতিতে নিজের মাঝে কখনো চাপ অনুভব করেননি তিনি।
শান্ত বলেন, ‘আমি অনেক প্রেসারে ছিলাম। আসলে এটা বললে ভুল হবে। কারণ, টিম ম্যানেজমেন্ট থেকে অধিনায়ক সিনিয়র প্লেয়ার সবাই পাশে ছিল। সো ও রকম যে প্রেসারে ছিলাম, তা না। আর একটা জিনিস হলো যে আমার ইনিংসটা নতুন কিছু করতে চাইনি।যেটা আমি বললাম একটু আগেই আমার শুরু হচ্ছিল কিন্তু লম্বা হচ্ছিল না। তো এটাই মাথায় ছিল যে যদি স্টার্ট পাই তাহলে যেন লম্বা করতে পারি।’
স্ট্রাইক রেট নিয়ে তিনি কখনো ভাবেননি। তিনি বলেন, ‘না স্ট্রাইকরেট নিয়ে চিন্তাই করিনি। বল দেখেছি সে অনুযায়ী রিয়াক্ট করেছি। আমাদের যে প্লান ছিল, সেই প্লান অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করেছি।’
দল জেতায় আত্মবিশ্বাস বেড়েছে জানিয়ে নাজমুল হোসেন শান্ত বলেন, ‘ম্যাচ জিতলে আত্মবিশ্বাস অনেক ভাল থাকে। পরবর্তী ম্যাচ যখনই আমরা খেলব। তখনই আমাদের সবার ভেতরে ওই চিন্তাটা থাকবে যে জিতার জন্যই মাঠে নামব। এই ম্যাচেও আমাদের কিছু জায়গায় আরো উন্নতির প্রয়োজন আছে। সামনের ম্যাচে ঐই ভুলগুলো যেন কম হয়, এবং ঐ আত্মবিশ্বাস নিয়েই আমরা যাব ইনশাল্লাহ।’
তিন ম্যাচের দুইটিতে জিতে বাংলাদেশ ৪ পয়েন্ট নিয়ে সেমিতে যাওয়ার লড়াইয়ে বেশি ভালোবে শামিল হয়েছে। পরের ২ ম্যাচ খেলবে ২ নভেম্বর ভারত ও ৬ নভেম্বর পাকিস্তানের বিপক্ষে। নাজমুল হোসেন শান্ত কিন্তু সেমিফাইনালের কথা ভাবছেন না। তিনি ম্যাচ ধরে ধরে এগুতে চান।
তিনি বলেন, ‘এসব আসলে চিন্তা করতে চাই না। ম্যাচ বাই ম্যাচ যেতে চাই। সো ওটাই চিন্তা আছে যে, পরবর্তী ম্যাচে আমরা কত ভালো খেলতে পারি।’
এমপি/এমএমএ/