সিডনিতে নিউজিল্যান্ডে বিধ্বস্ত শ্রীলঙ্কা
দারুণ শুরুর পর নিদারুণ সমাপ্তি। ফলস্বরূপ ৬৫ রানের হার। শনিবার সিডনির টার্নিং উইকেটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার পারফরম্যান্সের সারমর্ম এটা।
ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ক্যাচ মিসের চড়া মূল্য দিয়েছে লঙ্কানরা। গ্লেন ফিলিপসের তুলে দেওয়া ক্যাচ হাস ফসকে যায় দুবার। জীবন পেয়ে টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের এবং চলতি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেন কিউই ব্যাটার। তার দলও পায় ৭ উইকেটে ১৬৭ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি। রান তাড়ায় প্রতিপক্ষের পেসারের গতিতে খড়কুটোর মতো উড়ে যায় এশিয়ার চ্যাম্পিয়নরা। ১৯২. ওভারে অলআউট হয় ১০২ রানে।
অথচ টস হেরে বোলিং পেয়ে শুরুতেই জ্বলে উঠেন শ্রীলঙ্কার বোলাররা। অল্পতেই মাঠছাড়া করে প্রতিপক্ষের তিন টপ-অর্ডার ব্যাটারকে। দুই ওপেনার ফিন অ্যালেন এবং ডেভন কনওয়েকে সাজঘরে পাঠান যথাক্রমে মাহিষ থিকসানা ও ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। দুজনেই আউট হন ১ রান করে। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনকে (৮) শিকার বানান কাসুন রাজিথা।
ইনিংসের সপ্তম ওভারে ক্যাচ তুলেছিলেন ফিলিপস। সেই সহজ ক্যাচ তালুবন্দি করতে পারেননি পাথুম নিশাঙ্কা। ১৪তম ওভারে একই ভুল করেন লঙ্কান অধিনায়ক দাসুন শানাকা। ব্যক্তিগত ১২ ও ৪১ রানে জীবন পাওয়া ফিলিপসই শ্রীলঙ্কার সর্বনাশ করেছে। দলের ১৬৭ রানের পুঁজিতে তার অবদান ছিল ১০৪। ৬৪ বলে ১০ চার এবং ৪ ছক্কায় বিধ্বংসী এক ইনিংস উপহার দেন তিনি।
প্রথমে ড্যারিল মিচেলকে সঙ্গে দলের ইনিংস মেরামত করেন ফিলিপস। চতুর্থ উইকেটে এই যুগলের ৬৪ বলের জুটিতে আসে ৮৪ রান। তাদের প্রতিরোধ ভাঙেন ভানিন্দু হাসারঙ্গা। লঙ্কান স্পিনারের ঘূর্ণিতে আউট হন ২২ রান করা মিচেল। এরপর উইকেটের একপ্রান্তে থিতু হতে পারেনি কোনো কিউই ব্যাটার। তবে অপরপ্রান্তে অব্যাহত ছিল ফিলিপসের ব্যাটিং তাণ্ডব।
ইনিংসের দুই বল বাকি থাকতে ফিলিপসকে থামান পেসার লাহিরু কুমারা। পরের বলে রান আউট হন ইশ সোধি। এই দুজন আউট হওয়ার আগে জিমি নিশামকে (৫) প্যাভিলিয়নে পাঠান রাজিথা। ম্যাচের শুরু ও শেষে লঙ্কানরা বোলাররা জ্বলে উঠলেও ব্যাটিংয়ে পুরোপুরি নিষ্প্রাণ ছিলেন ব্যাটাররা। ৬.১ ওভারেই ৫ উইকেট খুঁইয়ে বসে শ্রীলঙ্কা। সংগ্রহ ছিল মোটে ২৪ রান।
দল রানের খাতা খোলার আগেই আউট হন ফিলিপসের ক্যাচ ছাড়া পাথুম। তাকে এলবির ফাঁদে ফেলেন টিম সাউদি। এরপর ট্রেন্ট বোল্টের ধামাকা। এই কিউই পেসার একে একে সাজঘরে পাঠান কুশাল মেন্ডিস (৪), ধনাঞ্জয়া (০) এবং চারিথ আসালঙ্কাকে (৪)। চামিকা করুনারত্নেকে (৩) শিকার বানান মিচেল সান্তনার। শুরুর একই ধাক্কা সামলে নিতে পারেনি সবশেষ এশিয়া কাপ জয়ীরা। পরে ভানুকা রাজাপক্ষে (৩৪) এবং শানাকার (৩৫) ব্যাটে কমেছে কেবল শ্রীলঙ্কার হারের ব্যবধান। প্রতিপক্ষের ৪ উইকেট শিকার করতে ৪ ওভারে মোটে ১৩ রান দিয়েছেন বোল্ট। সান্তনার ও সোধি পেয়েছেন ২টি করে উইকেট এবং সাউদি ১টি। ম্যাচসেরার পুরস্কার ওঠেছে ফিলিপসের হাতে।
এই পরাজয়ে শ্রীলঙ্কার সেমিফাইনাল খেলার স্বপ্ন অন্ধকারে মিলিয়ে যাওয়ার মতো অবস্থা। ৩ ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে তারা। অপরদিকে শেষ চারের পথে এক পা বাড়িয়ে রাখল নিউজিল্যান্ড। ৩ ম্যাচে ৫ পয়েন্টে প্রথম গ্রুপের শীর্ষস্থান আরও পোক্ত করেছে উইলিয়ামসনের দল।
আরএ/