বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচের টুকিটাকি
অস্ট্রেলিয়ায় চলমান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টোয়েলভ শুরু হয়েছে ২২ অক্টোবর থেকে। ২৬ তারিখ পর্যন্ত ৪ দিনে খেলা হয়েছে ৯টি। এর মাঝে দুইটি ভেসে গেছে সম্পূর্ণ বৃষ্টিতে। একটিতে হয়েছে কার্টেল ওভারে ম্যাচ।
বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) বাংলাদেশ-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচেও ছিল বৃষ্টির চোখ রাঙানি। খেলা শুরুর প্রায় দুই ঘণ্টা আগে থেকে যেভাবে বৃষ্টি হচ্ছিল তা ম্যাচ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছিল। অনেকেই পরিত্যক্ত হওয়ার শঙ্কায়ই করছিলেন। ম্যাচ পরিত্যক্ত হলে বাংলাদেশ ১ পয়েন্ট পেত। কিন্তু এভাবে পয়েন্ট পেতে রাজি ছিলেন না খেলা দেখতে আসা প্রবাসী বাংলাদেশিরা। তাদের কথা হলো এমন তো নয় যে এই ১ পয়েন্ট পেলে বাংলাদেশ সেমিতে খেলার সম্ভাবনা থাকবে। দলের যা অবস্থা তাতে করে আর কোনো ম্যাচ বাংলাদেশ জিতবে কি না সন্দেহ আছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলা হলেও নিশ্চিত হার। তারপরও প্রবাসীদের চাওয়া হারুক, তারপরও খেলা হোক। পরিত্যক্ত ম্যাচ থেকে পয়েন্ট পাওয়ার দরকার নেই। শেষ পর্যন্ত প্রসাবীদের চাওয়াই পূর্ণ হয়েছে। ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ম্যাচে বাংলাদেশর হেরেছে। তাও বিশাল ব্যবধানে, ১০৪ রানে।
শুরুটা বাংলাদেশের তারপর ধপাস
ম্যাচে বাংলাদেশ বিশাল ব্যবধানে হারলেও উভয় ইনিংসের শুরুটা ছিল বাংলাদেশের। বিশেষ করে প্রথম ওভার। টস জিতে ব্যাট করতে নামার পর দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের প্রথম ওভারেই তাসকিন তার শেষ বলে প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাকে উইকেটের পেছনে নুরুল হাসান সোহানের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট করে স্টেডিয়ামে বাংলাদেশি দর্শকদের বাঁধ ভাঙা উল্লাসে মেতে উঠার উপলক্ষ এনে দেন। কিন্তু এই শেষ। এরপর ৫ উইকেট হারিয়েও ২০৫ রানের পাহাড় সমান রান। বিশাল রানের জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশ ব্যাট করতে নামার পর প্রথম ওভারেই তুলে নেয় ১৭ রান। কাগিসো রাবাদার ওভারের প্রথম ৪ বল খেলেও নাজমুল হাসান শান্ত ৫ রান নেওয়ার পর শেষ ২ বল খেলে সৌম্য সরকার ছক্কা হাঁকিয়ে ১২ রান নিলে রান আসে ১৭। কিন্তু এই শেষ। এরপর বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা নিজেদের চিরাচরিত পথে হাঁটতে শুরু করলে অলআউট হয় ১৬.৩ ওভারে ১০১ রানে। ।
দুর্দান্ত রাইল রোশোর টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি
ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ক্রিজে এসেছিলেন রাইলি রোশো। শুরুতেই উইকেট পড়া মানে. দলের উপর চাপ সৃষ্টি হয়। কিন্তু এখানে হয় উল্টো। রোশো আসার পর এমন ব্যাটিং শুরু করেন, দেখে মনেই হবে না যে প্রথম ওভারেই তারা অধিনায়ককে হারিয়েছেন। রোশো পরে তুলে নেন সেঞ্চুরি। মাত্র ৫৬ বলে ৮ ছক্কা ও ৭ বাউন্ডারিতে তিনি মাত্র ৫৬ বলে করেন ১০৯ রান। এটি ছিল তার টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। এর আগে তিনি ভারতের বিপক্ষে ইন্দোরে করেছিলেন অপরজিত ১০০ রান।
এই দুই ম্যাচের মাঝে বিশ্বকাপের প্রস্ততি ম্যাচে তিনি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছিলেন ৫৪ রানের অপরাজিত ইনিংস। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়েছিল। ২৩ ম্যাচের ক্যারিয়ারে এটি তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। রোশো যখন ক্রিজে আসেন তখন জনপ্রিয় ক্রিকেট ওয়েব সাইট ক্রিকইনফো লিখেছিল, বাংলাদেশ বাভুমাকে আউট করে ভুল করল। কারণ, এখন যে ব্যাটসম্যান আসবে, তিনি খুব দ্রুতই রান তুলেন। বল নষ্ট করকে চান না। শেষ পর্যন্ত ক্রিকইনফোর ভবিষ্যৎবাণীই সত্য হয়েছে।
রোশো-কুকের রেকর্ড জুটি
প্রথম ওভারে ৭ রানে অধিনায়ক বাভুমাকে আউট করার পর আরেক ওপেনার কুইন্টন ডি কক ও রাইলি রোশো মিলে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১৩.৩ ওভারে ১৬৩ রান যোগ করে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ইতিহাসে কোনো জুটিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানের জুটি গড়েন। সর্বোচ্চ রানের জুটিও দ্বিতীয় উইকেটে। ২০০১ সালে উইন্ডিজের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার জয়াবর্ধনে ও সাঙ্গাকারা করেছিলেন ১৬৬ রান।
বাংলাদেশের বিপক্ষে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ
দক্ষিণ আফ্রিকার করা ৫ উইকেটে ২০৫ রান বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ। আগের সর্বোচ্চ ছিল পাকিস্তানের ৫ উইকেটে ২০১ রান। ২০১৬ সালে ভারেতর কলকাতাতে করেছিল এই রান। আবার বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার সর্বোচ্চ রান নয়। তাদের সর্বোচ্চ রান ৪ উইকেটে ২২৪। ২০১৭ সালে করেছিল এই রান।
এমপি/এমএমএ/