আইরিশ চমকে ইংল্যান্ড হারল ৫ রানে

বিশ্বকাপের সুপার-টুয়েলভে প্রথম চমক উপহার দিল আয়ারল্যান্ড। বুধবার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ইংল্যান্ডকে ৫ রানে হারিয়েছে তারা। গ্রুপ-১ এর ম্যাচে আইরিশদের এই জয়ে ছিল ভাগ্যের ছোঁয়াও।
মেলবোর্নে বৃষ্টিবিঘ্নিত দিনে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৫৭ রানে অলআউট হয় আইরিশরা। রান তাড়ায় ১৪.৩ ওভারে ৫ উইকেটে ১০৫ রান করে ইংলিশরা। এরপরই বৃষ্টির বাগড়া। তাতে পুনরায় খেলা শুরু করা সম্ভব না হলে বৃষ্টি আইনে ৫ রানে জয়ী ঘোষণা করা হয় আয়ারল্যান্ডকে।
ইংলিশ পরীক্ষায় আইরিশদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল প্রতিপক্ষের পেসারদের সামলানো। কঠিন এই চ্যালেঞ্জ দারুণভাবে সামলে নেয় তারা। মারমুখী ছিল প্রথম থেকেই। এতে পাওয়ারপ্লের ৬ ওভারে তাদের খাতায় যোগ ৫৯ রান। ১০ ওভার শেষে ৯২। সেটাও মাত্র এক উইকেট হারিয়ে। এরপরই ছন্দপতন আইরিশ ব্যাটারদের। আর উত্থান ইংলিশ বোলাদের।
দুর্দান্ত শুরুর পরও পুরো ২০ ওভার ব্যাটিং করতে পারেনি আয়ারল্যান্ড। ১৯.২ ওভারে ১৫৭ রানে গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। অর্থাৎ ৬৫ রান করতে শেষ ৯ উইকেট হারায় দলটি। কৃতিত্বটা মার্ক উড (৩/৩৪) এবং লিয়াম লিভিংস্টোনের (৩/১৭)। দুই উইকেট পান স্যাম কুরান। বেন স্টোকস পান একটি।
ম্যাচের শুরুতে প্রথম আঘাতটা হানেন উড। এই ইংলিশ পেসার আউট করেন ৮ বলে ১টি করে চার-ছক্কায় ১৪ রান করা পল স্টার্লিংকে। এরপর অ্যান্ড্রু বালব্রিনি ও লরক্যান টাকার শো। প্রতিপক্ষের আগুন ঝরানো বোলিং আর বৃষ্টির বাগড়া কোনোটিই থামাতে পারেনি তাদের রান তোলার গতি।
উইকেটে টিকে থাকা অবধি ঝড়ো ব্যাটিং করেন বালব্রিনি আর টাকার। এই যুগলের ৫৭ বলের জুটিতে আয়ারল্যান্ডের খাতায় যোগ হয় ৮২ রান। অধিনায়ক বালব্রিনি আউট হন ৬২ রানে। তার ৪৭ বলের ইনিংসে ছিল ৫ চার ও ২ ছক্কার মার। টাকার ২৭ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ৩৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন।
এই দুজন আউট হতেই ধস নামে আয়ারল্যান্ডের ব্যাটিং লাইনআপে। থামে নির্ধারিত ২০ ওভারের আগে। এরপর বোলিংয়েও দুর্দান্ত শুরু পায় তারা, বিশেষ করে জস লিটল। এই বাঁহাতি পেসার ইনিংসের প্রথম ও দ্বিতীয় ওভারে আউট করেন দুই ইংলিশ ওপেনার জস বাটলার (০) ও অ্যালেক্স হেলসকে (৭)।
ইংল্যান্ডের সেরা তারকা বেন স্টোকসকে উইকেটে থিতু হওয়ার সুযোগ দেননি ফিওন হ্যান্ড। ইংলিশ অলরাউন্ডারকে বোল্ড করেন তিনি। ৮ বল খেলে ৬ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরত যান স্টোকস। এতে ৫.১ ওভারে ২৯ রান করতেই ৩ উইকেট খুঁইয়ে বসে ক্রিকেটের জনকরা।
বিপদে পড়া দলের হাল ধরেন ডেভিড মালান এবং হ্যারি ব্রুক। দুজনের চতুর্থ উইকেট জুটির স্থায়িত্ব ছিল ৩৪ বল। ইনিংসে ১১তম ওভারের পঞ্চম বলে এই জুটি ভাঙেন জর্জ ডকরেল। দলীয় ৬৭ এবং ব্যক্তিগত ১৮ রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন ব্রুক। খানিকবাদে মালানকে (৩৫) আউট করেন ম্যাককার্থি।
এরপর লিভিংস্টোনকে সঙ্গে নিয়ে লড়াই করছিলেন মঈন আলি। কিন্তু তাদের লড়াইয়ের শেষ সুযোগটা দিল না বৃষ্টি। ইংলিশরা জয় থেকে ৫২ রান দূরে থাকতেই ফের শুরু হয় আকাশের কান্না এবং জয়ের আনন্দে ভাসায় আইরিশদের। ব্যাট হাতে ঝড় তুলে ম্যাচসেরা হয়েছেন বালব্রিনি।
বিশ্বকাপের মূলপর্বে এটাই আয়ারল্যান্ডের প্রথম জয়। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হার দিয়ে সুপার-টুয়েলভ শুরু করেছিল তারা। অপরদিকে টুর্নামেন্টে প্রথম হারের মুখ দেখল ইংল্যান্ড। নিজেদের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানকে ৫ উইকেটে পরাস্ত করেছিল বাটলারের দল।
আরএ/
