জমে উঠেছে বিসিএলের ফাইনাল
আক্রমণ, প্রতি আক্রমণে দারুণভাবে জমে উঠেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের ফাইনাল। পাঁচ দিনের ফাইনালে প্রায় প্রতিদিনই চিত্রনাট্য বদল হয়েছে। প্রথম দিন বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল। দ্বিতীয় দিনে ফিরে আসে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল। তৃতীয় দিন সুবিধাজনক অবস্থানে চলে যায় মধ্যাঞ্চল। চতুর্থ দিন আবার অবস্থানের বদল। কোনো দলই নেই ভালো অবস্থানে। আগামীকাল শেষ দিন তাদের জয়ের জন্য করতে হবে ১৯২ রান। কিন্তু হাতে আছে ৭ উইকেট। দক্ষিণাঞ্চলের ছুড়ে দেওয়া ২১৮ রানের জবাব দিতে নেমে তারা চতুর্থ দিন শেষ করেছে ৩ উইকেট হারিয়ে ২৬ রানে। দক্ষিণাঞ্চলের ইনিংস শেষ হয়েছিল ২৬৮ রানে। চ্যাম্পিয়ন হতে হলে দক্ষিণাঞ্চলের প্রয়োজন ৭ উইকেট।
প্রথম তিন দিনই ছিল ব্যাটসম্যানদের দাপট। প্রতিদিন একটি করে সেঞ্চুরি হয়েছে। একটি ছিল আবার ডবল সেঞ্চুরি। আজ চতুর্থ দিন ছিল বোলারদের দাপট। উইকেট পড়েছে দুই দল মিলে ১২টি। দক্ষিণাঞ্চলের ৯টি, মধ্যাঞ্চলের ৩টি। আগের তিন দিন এতো উইকেট পড়েনি। সবচেয়ে বেশি উইকেট পড়েছিল প্রথম দিনে ৯টি। আজ কোনো সেঞ্চুরি হয়নি। দক্ষিণাঞ্চলের রিশাদ হোসেন ১ রানের জন্য সেঞ্চুরি বঞ্চিত হন। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন ৯৯ রানে। মধ্যাঞ্চলের আবু হায়দার রনি নেন ৭৮ রানে ৫ উইকেট।
১ উইকেটে ৪৩ রান নিয়ে খেলতে নেমে দক্ষিণাঞ্চল ভয়াবহ ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। আবু হায়দার রনির তোপে পড়ে কোনো ব্যাটসম্যানই উইকেটে দাঁড়াতে পারেননি। দলীয় ৫৬ রানে আগের দিনের অপরাজিত ব্যাটসম্যান পিনাক ঘোষ ফিরে যাওয়ার পর দলীয় ৭০ রানে হারায় ৩ উইকেট। একে একে বিদায় নেন আগের দিনের আরেক অপরাজিত ব্যাটসম্যাস অমিত হাসান (৪১), তৌহিদ হৃদয়, প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান জাকির হাসান। এই চার উইকেটের তিনটিই নেন আবু হায়দার রনি।
শতরানের আগেই বিদায় নেন দলপতি ফরহাদ রেজাও (১৩)। দলের এই বিপর্যয়ে এক প্রান্তে দাঁড়িয়ে যান নয় নম্বারে ব্যাট করতে নামা রিশাদ হোসেন। নাসুম আহমেদ (৪১), মেহেদী হাসান রানার (১১) সহযোগিতায় তিনি দলের রান বাড়িয়ে নিতে থাকেন। নিজেও ছুটেন সেঞ্চুরির দিকে। সেঞ্চুরি যখন হাতের নাগালে। উইকেটে তখন শেষ ব্যাটসম্যান কামরুল ইসলাম রাব্বি। প্রয়োজন এক রানের। তখন নার্ভাস ৯৯ রানে আউট হয়ে যান রিশাদ হোসেন। অনিয়মত বোলার তাইবুরের শিকার হন তিনি। আবু হায়দার রনি ৭৫ রানে নেন ৫ উইকেট।
জয়ের লক্ষে ব্যাট করতে নেমে মধ্যাঞ্চলও পড়ে বিপদে। অনেকটা প্রথম ইনিংসের মতোই। প্রথম ইনিংসে তারা ১৬ রানে হারিয়েছিল ৪ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে ২০ রানে হারায় ৩ উইকেট। যেখানে আছেন প্রথম ইনিংসে বিপর্যয়রোধ করা ডাবল সেঞ্চুরিয়ান মোহাম্মদ মিঠুনও। এবারও শুরুতে আক্রমণ করেন ফরহাদ রেজা। তিনি ফিরিয়ে দেন মিঠুনকে (৮)। কিন্তু আসল কাজটি করেন নাসুম আহমেদ। তিনি বল হাতে তুলে নিয়ে ২ ওভারে কোনো রান না দিয়ে দুজনকে আউট করেন। প্রথমে ওপেনার আব্দুল মজিদকে (৫), পরে নাইটওয়াচ ম্যান হিসেবে খেলতে নামা হাসান মুরাদকে (১)। দিন শেষে সৌম্য সরকার ৮ ও সালমান হোসেন ৫ রান নিয়ে আজ নতুন করে শুরু করবেন দলকে চ্যাম্পিয়ন করার লক্ষ্যে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল: ৩৮৭ ও ২৬৮ (আগের দিনের ৪৩/১ ) ওভার ৭৫.৫ ( রিশাদ হোসেন ৯৯, অমিত হাসান ৪১, নাসুম আহমেদ ৪১, পিনাক ঘোষ ২৭, মেহেদী হাসান ২৪, ফরহাদ রেজা ১৩, আবু হায়দার রনি ৫/৭৮, তাইবুর রহমান ঙ্গ, স্যেম সরকার ১/৩০, হাসান মুরাদ ১/৩৫, মুকিদুল ইসলাম ১/৫৫)।
ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল: ৪৩৮ ও ২৬/৩, ওভার ৯ ( সৌম্য সরকার ৮*, মিঠুন ৭, সালমান হোসেন ৫*, আব্দুল মজিদ ৫, হাসান মুরাদ ১, নাসুম আহমেদ ০/২, ফরহাদ রেজা ১/১৪)।
এমপি/এসআইএইচ