টি-টোয়েন্টিকে বিদায় জানালেন মুশফিক
ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ৩৫ বছর বয়সী উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম। আজ রবিবার দুপুরের দিকে তিনি তার ফেসবুক পেজে বাংলা ও ইংরেজিতে স্ট্যাটাস দিয়ে সরে যাওয়ার এই ঘোষণা দেন। বাংলায় ৭৮ ও ইংরেজিতে ৯২ শব্দে লেখা ছিল স্ট্যাটাস।
যেখানে তিনি বাংলায় লিখেছেন, 'সবাইকে সালাম এবং শুভেচ্ছা। দীর্ঘ ক্রিকেট ক্যারিয়ারের যাত্রায় আমি আপনাদের সবাইকে পাশে পেয়েছি। ভালো এবং খারাপ দুই সময়েই আপনাদের অকুন্ঠ সমর্থন আমার প্রেরনা।
টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ক্যারিয়ার থেকে আজ আমি অবসর নিচ্ছি। তবে বাংলাদেশের হয়ে টেস্ট এবং ওয়ানডে খেলা চালিয়ে যাব। আশা করছি এই দুই ফরম্যাটে আমি আরও কিছু নিয়ে আসতে পারব দেশের জন্য।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) সহ অন্যান্য ফ্রাঞ্চাইজি লিগে আমি আমার খেলা চালিয়ে যাব টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে। আলহামদুলিল্লাহ। সবার নিকট কৃতজ্ঞতা। ধন্যবাদ। আল্লাহ হাফেজ।'
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের শুরু থেকেই বাংলাদেশ দলে ছিলেন মুশফিকুর রহিম। ২০০৬ সালের ২৮ নভেম্বর খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচের সেরা একাদশে ছিলেন তিনি। ম্যচে বাংলাদেশ জিতেছিল ৪৩ রানে। মুশফিক করেছিলেন ৫ বলে ২ রান। এরপর তিনি অবসরের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের হয়ে ১০২টি ম্যাচ খেলে রান করেন ১৫০০। গড় ১৯.৪৮। স্ট্রাইক রেট ১১৫.০৩। কোনো সেঞ্চুরি ছিল না। হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন ৬টি। সর্বোচ্চ রান ছিল অপরাজিত ৭২ রানের দুটি ইনিংস। একটি করেছিলেন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২০১৮ সালে নিদাহাস ট্রফিতে। পরের ম্যাচেই আবার ভারতের বিপক্ষে করেছিলেন এই রান।
মাহমুদউল্লাহর পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় ক্রিকেটার হিসেবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে শততম ম্যাচ খেলা মুশফিকের সাম্প্রতিক সময় মোটেই ভালো যাচ্ছিল না। এশিয়া কাপসহ সর্বশেষ খেলা ৫ ম্যাচের মাত্র একটিতে দুই অংকের (৩০) রান করতে পেরেছিলেন তিনি। বাকি ৪টি ছিল ০,১,১ ও ৪। এশিয়া কাপের আগে তিনি সর্বশেষ ম্যাচ তিনটি খেলেছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১টি ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে ২টি।
উইন্ডিজ সফরে পবিত্র হজ করতে যাওয়ার কারণে মুশফিক ছুটিতে ছিলেন। কিন্তু জিম্বাবুয়ে সফরে তাকে টি-টোয়েন্টি দলে রাখা হয়নি বিশ্রামের কথা বলে। তখনই এক প্রকার ধারণা করা হয়েছিল টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মুশফিকের দিন শেষ হয়ে আসছে। কিন্তু নতুনদের উপর ভরসা রাখতে গিয়ে জিম্বাবুয়ে সফরে বাংলাদেশ দলের ভরাডুবি হলে বিসিবির কর্তারা এশিয়া কাপে আবার মুশফিককে দলে ডাকেন। কিন্তু সেই সুযোগও মুশফিক কাজে লাগাতে পারেননি। দুইটি ম্যাচে ব্যাট হাতে (১ ও ৪) ব্যর্থ হওয়ার পর উইকেটের পেছনেও তিনি ছিলেন ব্যর্থ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে তিনি শুরুতেই শ্রীলঙ্কার ওপেনার কুশাল মেন্ডিসের সহজ ক্যাচ ফেলে দেওয়া ছাড়াও পরে একবার আউটও হয়েছিলেন। মুশফিক নিজেই সেই ক্যাচ ধরেছিলেন। কিন্তু আম্পায়ারও আউট দেননি, বাংলাদেশ দলও রিভিউ নেয়নি। রিভিউ নেওয়ার প্রশ্নে নিজেদের মাঝে আলোচনায় মুশফিক জানিয়েছিলেন তিনি কোনো শব্দ শুনতে পাননি। পরে অধিনায়ক সাকিবও আর রিভিউ নেননি। এসময় রিভউ নিলে ম্যাচের ফলাফল ভিন্ন হতে পারত। হয়তো বাংলাদেশ দলকে দেশে ফিরে না এসে এশিয়া কাপের সুপার ফোরে খেলত।
এমপি/আরএ/এসজি