এশিয়া কাপে সেমিতে বিদায় বাংলাদেশের যুবাদের
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের শিরোপা জিতলেও এশিয়া কাপের শিরোপা কখনোই জেতা হয়নি বাংলাদেশের। এবার বিশ্বকাপের শিরোপা ধরে রাখার পাশাপাশি এশিয়া কাপের শিরোপা জেতা-এই দুই মিশন নিয়ে বাংলাদেশ দল প্রথমে গিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত।
সেখান থেকে ভান্ডারে এশিয়া কাপের শিরোপা ভরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্দেশ্যে বিমানে চড়বে। কিন্তু এশিয়া কাপের শিরোপা অধরাই থেকে গেছে। সেমি ফাইনালে ভারতের কাছে ১০৩ রানে হেরে খালি হাতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজরে উদ্দেশ্যে বিমানে চড়বে।
ভারতের ৮ উইকেটে ২৪৩ রানের জবাব দিতে নেমে বাংলাদেশ অলআউট হয় মাত্র ১৪০ রানে।
শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) ভারত দুবাইতে ফাইনাল খেলবে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। এই ভারতের কাছে ফাইনালে ২০১৯ সালে ৫ রানে হেরেছিল। অপর অপর সেমিতে শ্রীলঙ্কা ২২ রানে পরাজিত করে পাকিস্তানকে।
শারজাহতে টস জিতে বাংলাদেশের দলপতি আকবর আলী বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে ভারতের সংগ্রহকে ২৪৩ রানে আটকে রাখেন। ওয়ানডে ক্রিকেট বিবেচনায় এই রান খুব বেশি নয়। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন বিবেচনায় কঠিনই ছিল বলা যায়। গ্রুপ পর্বের ম্যাচের দিকে তাকালে সে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে উঠে। নেপালের বিপক্ষে ৪ উইকেটে ২৯৭ রান প্রতিপক্ষ বিবেচনায় কিন্তু আত্মতুষ্টিতে ভোগার নয়। কুয়েতের বিপক্ষে ২৯১ রান সংগ্রহ করলেও এমন দলের বিপক্ষে বাংলাদেশের অলআউট হওয়া ছিল ব্যাটিং দূর্বলতারই নামান্তর। তারই প্রতিফলন দেখা গেছে সেমিতে ভারতের বিপক্ষে মাত্র ১৪০ রানে অলআউট হওয়ার মাধ্যমে।
ভারতের রবি কুমার, রাজ বাভা, ভিকি রাজবর্ধনের সামনে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা মোটেই সুবিধা করতে পারেননি। শুরু থেকেই ব্যাটিং বিপর্যয় ছিল লাল-সবুজের। শতরানের আগেই হারায় ৭ উইকেট। গ্রুপ পর্বের দুই সেঞ্চুরিয়ান প্রান্তিক নওরোজ নাবিল (১২) কিংবা মাহফিজুল ইসলাম (২১) কেউই রানের চাকা সচল করতে পারেননি। দলীয় ৫০ রানেই এই দুইজনসহ চারজনকে হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় বাংলাদেশ। এই বিপর্যয় পরে ফাইনালে যাওয়ার আশা নিভে যায়। দেখার বিষয় হয়ে উঠে শেষ পর্যন্ত কতোদূর যেতে পারে বাংলাদেশ। কতোটা ব্যবধান কমিয়ে আনতে পারে হারের। এখানে কিছুটা সফল হয়েছে বলা যায় দল। ৬৮ রানে ৬ উইকেট হারানোর পর মনে হয়েছিল শতরানের গন্ডি ওপার হতে পারবে না। সেখান থেকে দলের রান শতরান অতিক্রম করে, আবার হারের ব্যবধানও কমে আসে। আর এখানে এগিয়ে আসেন পাঁচে ব্যাট করতে নামা আরিফুল ইসলাম। সপ্তম উইকেট জুটিতে তিনি আশিকুর জামানকে নিয়ে ১৯ রান যোগ করেন। এখানে আশিকুরের অবদানই ছিল ১৫। তিনি ২৩ বলে একটি করে চার ও ছয় মেরে এই রান করেন। আশিকুর আউট হওয়ার পর আরিফুল অষ্টম উইকেট জুটিতে নাঈমুর রহমানকে নিয়ে যোগ করেন আরও ২০ রান। নাঈমুরের অবদান ছিল মাত্র ৬। নবম উইকেট জুটিতে দলপতি রকিবুল হাসানকে নিয়ে আরিফুল যোগ করেন ৩৩ রান। এবারও আরিফুল অক্ষত থাকেন। রকিবুল আউট হন ৩২ বলে এক ছক্কায় ১৬ রান করে। অবশেষে আরিফুল আউট হন শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে সিন্ধুর একমাত্র শিকার হয়ে। আউট হওয়ার আগে তিনি করেন ৪২ রান। তার ৭৭ বলের ইনিংসে ছিল মাত্র একটি চার।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ভারত ৭ উইকেটে ২৪৩ রান দাঁড় করালেও শুরুতে ছিল চাপে। ২০ ওভার শেষে রান ছিল ২ উইকেটে ৫৭। ভারতের ইনিংসে সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারি রশিদ ১০৮ বলে অপরাজিত ৯০ রান করলেও ২০ ওভারের সময় তার রান ছিল ৪২ বলে ২১ রান। পরে এই রশিদই রানের চাকা সচল করতে অগ্রনী ভূমিকা রাখেন। তাতে ছোট ছোট অবদান রেখে সহায়তা করেন ইয়াস ধুল ( ২৯ বলে ১ ছক্কা ও ২ চারে ২৬ রান) রাজ ভাবা ( ৪০ বলে ২৩ রান)। শেষের দিকে ঝড় তুলেন রাজবর্ধন ও ভিকি। রাজবর্ধন ৭ বলে ২ ছক্কা ও ১ চারে ১৬ রান করেন। ভিকি ১৮ বলে ৩ চারে ২৮ রান করে অপরাজিত থাকেন। মেষ ৫ওভারে তারা ৫০ রান যোগ করে। বাংলাদেশের হয়ে রকিবুল হাসান ৪১ রানে নেন ৩ উইকেট। একটি করে উইকেট নেন তানজিম হাসান, নাঈমুর রহমান, মেহরব ও আরিফুল ইসলাম।
এমপি/এমএমএ/