৩০ শটের টাইব্রেকারে শেখ রাসেল ১৩ আবহনী ১২
এবারের ফেডারেশন কাপ যেন নাটকীয়তা ভরা। নানা ঘটনার পর বুধবার গ্রুপ পর্বে আবাহনী ও শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের খেলায় ঘটেছে অভাবনীয় ঘটনা।
গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন নির্ধারন করতে টাইব্রেকারে দুই দল মিলে নিয়েছে ১৫টি করে ৩০টি শট। যেখানে শেখ রাসেল ১৩-১২ গোলে জিতে ‘বি’গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। নির্ধারিত সময় খেলা ২-২ গোলে ড্র ছিল।
উত্তরা বারিধারা ক্লাব না খেলাতে এই দুই দলের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা আগেই নিশ্চিত হয়েছিল। যে কারণে দুই দলের খেলা ছিল গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার। ৮ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান দোরিয়েলতনের গোলে আবাহনী এগিয়ে যাওয়ার পর ২০ মিনিটে সমতা আনেন মান্নাফ রাব্বি। ৬০ মিনিটে দোরিয়েলতন আবার গোল করে আবাহনীকে এগিয়ে নেওয়ার পর শেখ রাসেলের হয়ে গোল পরিশোধ করেন কিরগিজ ডিফেন্ডার এইলতন। এরপর শুরু হয় টাইব্রেকার নাটকীয়তা।
প্রথম পাঁচ শটে দুইদলই চারটি করে গোল করে। আবাহনীর হয়ে নাবিব নেওয়াজ শট পোস্টে লাগে। শেখ রাসেলের হয়ে পঞ্চম শট নেওয়া পর্তুগীজ স্ট্রাইকার ইসমায়েল তাভারেজের শট গোল-পোস্ট এর উপর দিয়ে চলে যায়। আবাহনীর দরিয়েলতন, রাফায়েল, ইমন বাবু, কলিনদ্রেস এবং শেখ রাসেলের এইলতন, হেমন্ত, আকমেদভ ও নাসির নিশানা ভেদ করেন। এরপর শুরু হয় সাডেন ডেথ।
আবাহনীর হয়ে সাডেন ডেথের প্রথম শটে গোল করেন ইরানি ডিফেন্ডার মিলাদ শেখ। শেখ রাসেলের হয়ে পাল্টা গোল করেন মোহাম্মদ জুয়েল। আবাহনীর সোহেল রানার নেওয়া সপ্তম শটে আটকে দেন শেখ রাসেলের অভিজ্ঞ গোলরক্ষক আশরাফুল ইসলাম। কিন্তু এর সুবিধা নিতে পারেনি শেখ রাসেল। সাদ উদ্দিনের নেওয়া শটও লক্ষ্য হারায় । পরবর্তী তিন শটে দুই দলই তিনটি করে গোল করে।
আবাহনীর নুরুল নাইম, মনির ও রেজাউল ও শেখ রাসেলের হয়ে রহমত মিয়া, খালেকুজ্জামান ও মানিক মোল্লা গোল করেন। ১০টি করে শট নেওয়ার পর দুই দলের গোলরক্ষক আসেন শট নিতে। আবাহনীর মাহফুজ হাসান (প্রীতম) ও শেখ রাসেলের আশরাফুল গোল করলে ফলাফল দাঁড়ায় ৯-৯। ১১ জন করে শট নেওয়া শেষ। এরপর আবার শুরু হয় শট নেওয়া। আবাহনীর হয়ে একে একে গোল করেন দোরিয়েলতন, নাবিব নেওয়াজ ও ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার রাফায়েল।
শেখ রাসেলের হয়ে এর জবাব দেন ব্রাজিলিয়ান স্ট্রাইকার এইলতন, হেমন্ত ও আজিজুর আকমেদভ। রূদ্ধশ্বাস নিয়ে সবাই টাইব্রেকার দেখছেন। এর শেষ কোথায় হয়- এ রকম প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে সবার মাঝে। সঙ্গে দেশের ইতিহাসে প্রথম, এমন কি বিশ্বে এ রকম দ্বিতীয় নজির আছে কি না তা নিয়ে আলোচনা, গবেষণা চলছে।
এ রকম অবস্থায় পনেরতম শট নিতে আসেন আবাহনীর ইমন বাবু। কিন্তু তার শট আটকে দেন অভিজ্ঞ আশরাফুল। আবার কী তাহলে শেখ রাসেল আগের মতো মিস করবে, না সুযোগ কাজে লাগিয়ে ম্যাচের পরিসমাপ্তি টানবে? কিন্তু না এবার আর শেখ রাসেলকে হতাশায় ডুবতে হয়নি। নাসির উদ্দিনের গোলে যবনিকা ঘটে দেশের ইতিহাসে ঘটনাবহুল টাইব্রেকারের।
এমপি/এমএমএ/