ওয়ানডে ওষুধে সারবে টি-টোয়েন্টির গলার কাঁটা
বিশ্ব ক্রিকেটে তিন ফরম্যাটে বাংলাদেশের অবস্থান কী? একটি রেখাচিত্র অঙ্কন করে যদি দেখানো যায়, তাতে দৃশ্যমান হয় সর্বশেষ ১০ ম্যাচে টেস্টে জয় একটিতে, টি-টোয়েন্টিতে ১০ ম্যাচে দুইটিতে জয়। কিন্তু ওয়ানডেতে আবার বিপরীত চিত্র। ১০ ম্যাচে জয় আটটিতেই।
ফরম্যাট তিনটি। কিন্তু সেখানে পরিবর্তন খুব একটা ব্যাপক থাকে না। সর্বোচ্চ তিন থেকে চারজন ক্রিকেটারের পরিবর্তন হয়ে থাকে। কখনো এর থেকে একজন বেশি। কখনো একজন কম। কিন্তু ২২ গজের ফলাফলে ব্যাপক উত্থান-পতন। এভাবেই এগিয়ে চলছে বিশ্ব ক্রিকেটের মঞ্চে বাংলাদেশ। কখনো টেস্ট আর টি-টোয়েন্টির ব্যর্থতাকে সঙ্গী করে ওয়ানডে খেলতে নামে। কখনো ওয়ানডে ক্রিকেটের মধুর স্মৃতি নিয়ে খেলতে নামে টেস্ট আর টি-টোয়েন্টি। ওয়ানডে ক্রিকেটের সাফল্য যেন সুখের বৃষ্টি, শান্তির পায়রা, তৃপ্তির ঢেকুর।
এবারও একই রকম পরিস্থিতে বাংলাদেশ দল আজ আবার ওয়ানডে ক্রিকেটে খেলতে নামবে। জিম্বাবুয়ের মতো দুর্বল দলের কাছে তারুণ্য দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গিয়ে নিজেদের গলায় যেন কাঁটা হয়ে গেছে। সিরিজ হেরেছে ২-১ ব্যবধানে। এবার ওয়ানডে ক্রিকেটে দিয়ে সেই গলার কাঁটা বের করার সময়। খেলা শুরু হবে হারারেতে বাংলাদেশ সময় বেলা একটা ১৫ মিনিটে।
কিছুদিন আগে উইন্ডিজ সফরেও বাংলাদেশ ওয়ানডে সিরিজ খেলতে নেমেছিল টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারিয়ে। এরপর ওয়ানডে সিরিজে জিতেছিল ৩-০ ব্যবধানে। কিন্তু সেই প্রেক্ষাপট আর এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। উইন্ডিজ শক্তিশালী দল ছিল। কিন্তু জিম্বাবুয়ে দুর্বল প্রতিপক্ষ। যে কারণে টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারের ক্ষত সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে। ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে সেই ক্ষত শুকাতে হবে। কিন্তু তামিম ইকবাল খুবই সাবধান। টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের আলোকে নিজেদের কন্ডিশনে তিনি জিম্বাবুয়েকে খুবই বিপজ্জনক দল বলে মন্তব্য করেছেন। যদিও ইদানিং তারা খুব একটা ভালো করতে পারে না। কিন্তু মাঝে মাঝে অঘটন ঘটিয়ে দেয়। টেস্টে যেমন পাকিস্তানকে হারিয়েছে, ওয়ানেডতে আছে শ্রীলঙ্কাকে হারানোর রেকর্ড। বাংলাদেশের বিপক্ষে অবশ্য গত ১৯ বারের মুখোমুখিতে জিততে পারেনি একবার। সর্বশেষ জয় পেয়েছিল ২০১৩ সালে। ওয়ানডে ক্রিকেটে ভালো খেলতে থাকা বাংলাদেশের দলের জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেণ এই পরিসংখ্যানই নিজেদের ভালো করার ব্যাপারে অনেকখানি আত্মবিশ্বাসী করে তুলে। পরিসংখ্যান আরও কথা বলছে। দুই দলের ৭৮ মোকাবিলাতে বাংলাদেশ দল ম্যাচ জেতার হাফ সেঞ্চুরি করেছে। জিম্বাবুয়ের জয় প্রায় অর্ধেক কম ২৮টি। তামিম ইকবাল মনে করেন জিম্বাবুয়ে নিজেদের কন্ডিশনে বিপজ্জনক হলেও বাংলাদেশ যে সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এতদিন ধরে সাফল্য পেয়ে আসছে সেই প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে কঠিন পরিস্থিতিতেও ভালো করা যায়।
উইন্ডিজের বিপক্ষে সর্বশেষ খেলা ম্যাচে অনেক পরিবর্তন থাকবে আজকের ম্যাচ। এই ম্যাচ দিয়ে আবার মাঠে ফিরছেন মুশফিকুর রহিম। উইন্ডিজ সফর থেকে তিনি নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন হজ করতে যাওয়ার কারণে। এখানে থাকছে একটি পরিবর্তন। নুরুল হাসান সোহান ইনজুরিতে ছিটকে গেছেন। তার জায়গায় আসছে পরিবর্তন। শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ একজন মাত্র পেসার নিয়ে খেলেছিল। চার স্পিনার নিয়ে খেলেছিল। এতে চতুর্থ স্পিনার হিসেবে দলে ঢুকে পড়েন তাইজুল ইসলাম। আর ঢুকেই নিয়েছিলেন পাঁচ উইকেট। আজকের ম্যাচে আর একজন পেসার নিয়ে খেলার সম্ভাবনা নেই। একজন তো বাড়ছেই। দুইজনও বাড়তে পারে। নাসুমের শেষ ম্যাচ ছিল টিচ-টোয়েন্টি আর তাইজুলের ওয়ানডে দুই জনের শেষ ম্যাচের আলোকে নাসুমেরই একাদশের বাইরে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি এবং এক প্রকার নিশ্চিতও।
এমপি/এসএন