উইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশই করলো বাংলাদেশ
শেষ ভালো যার সব ভালো তার। আসলেই কী তাই। তাহলে তো বলতেই হয় উইন্ডিজে বাংলাদেশের সফরটা ভালোই হয়েছে। টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে বাজেভাবে হারের পর একদিনের সিরিজ জিতেছে হোয়াইটওয়াশ করে বলা যায় বাংলাওয়াশ। উইন্ডিজকে হারিয়ে একদিনের তিন ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশ হোয়াইটওয়াশ করেছে ঠিকই, কিন্তু প্রথম ও দ্বিতীয় একদিনের মতো যতোটা সহজ ভাবা হয়েছিল, ততোটা সহজে জিততে পারেনি। উইন্ডিজও শক্ত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে তারা ৮ বল বাকি থাকতে ১৭৮ রানে অলআউট হয়। সেই রান পাড়ি দিতে গিয়ে বাংলাদেশকে খেলতে হয়েছে ৪৮. ৩ওভার। উইকেট হারাতে হয়েছে ছয়টি। তবেই বাংলাদেশ ম্যাচ জিতে চার উইকেটে। প্রথম ম্যাচে ৪১ ওভারের খেলায় উইন্ডিজ ৯ উইকেটে ১৪৯ ও দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচে ১০৮ রানে অলআউট হয়েছিল। যা বাংলাদেশ সহজেই পাড়ি দিয়েছিল ছয় ও নয় উইকেটে ম্যাচ জিতে। ওভার অবশিষ্ঠ ছিল যথাক্রমে ৯.১ ও ২৯.২ টি। সেখানে শেষ ম্যাচে ওভার অবশিষ্ঠ ছিল মাত্র ১.৩টি। এটি ছিল বাংলাদেশের ষোলতম হোয়াইটওয়াশ করে সিরিজ জয় আর উইন্ডিজের বিপক্ষে তৃতীয়।
শেষ ম্যাচে সেরা একাদশে ব্যাপক পরিবর্তন বা যারা খেলেননি তাদের পরখ করে নেয়ার যে অভিলাষ ব্যক্ত করেছিলেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল, তার সে ইচ্ছে শেষ পর্যন্ত পূরন হয়নি। শুধুমাত্র একটি পরিবর্তন এনেছিলেন সেরা একাদশে। শরিফুলকে বাদ দিয়ে তাইজুলকে নিয়ে আসেন। ১০ বছর পর বাংলাদেশ একজন পেসার নিয়ে খেলতে নামে। এর আগে সর্বশেষ তারা এক পেসার নিয়ে খেলেছিল এই উইন্ডিজের বিপক্ষেই মিরপুরে ২০১২ সালের ৮ ডিসেম্বর। শেষ পর্যন্ত এই তাইজুলই বাজিমাত করেন ক্যারিয়ারে সেরা বোলিং করে ২৮ রানে পাঁচ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়ে। সিরিজ সেরা হয়েছেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। একদিনের ক্রিকেটে এটি তার ষষ্ঠবার সিরিজ সেরা হওয়া।
প্রথম দুই ম্যাচের মতো এই ম্যাচেও তামিম ইকবাল টস জিতে প্রতিপক্ষকে যথারীতি ব্যাটিংয়ে আমন্ত্রণ জানিয়ে পুরো ফায়দাই তুলে নেন ১৭৮ রানে আটকে রেখে। তাইজুলের ক্যারিয়ারের সেরা বোলিংয়ে উইন্ডিজ ১৭৮ রানে অলআউট হয়। নিকোলাস পুরান করেন ৭৩ রান। এ ছাড়া কার্টি ৩৩, শেফর্ড ১৯ ও রভম্যান পাওয়েল ১৮ রান করেন। আর কোনো ব্যাটসম্যান দুই অংকের ঘরে যেতে পারেননি। তাইজুল ছাড়া নাসুম ও মোস্তাফিজ ৩৯ ও ২৪ রানে নেন দুইটি করে উইকেট। মোসাদ্দেক ২৩ রানে নেন এক উইকেট।
অবশ্য এই ম্যাচ যে বাংলাদেশ এতোটা কঠিনভাবে জিতবে তা কিন্তু বাংলাদেশের ইনিংসের সূচনায় বোঝা যায়নি। সেখানে আভাস ছিল আরেকটি সহজ জয়ের। শুরুতে নাজমুল হোসেন শান্ত ১৩ বল খেলে মাত্র ১ রান করে ফিরে গেলেও দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তামিম ও লিটনের সাবলিল ব্যাটিং বাংলাদেশকে সহজ পথের ঠিকানায় রেখেছিল। ওভার প্রতি পাঁচের কাছাকাছি তারা রান সংগ্রহ করে জুটিতে ১০.২ ওভারে যোগ করেন ৫০ রান। কিন্তু দলীয় ৭০ ও ব্যক্তিগত ৩৪ রানে তামিম এবং দলীয় ৯৬ ও ব্যাক্তিগত ৫০ (ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ফিফটি) রান করে লিটন আউট হওয়ার পরই বাংলাদেশ চাপে পড়ে যায়। বাংলাদেশকে এভাবে চাপে ফেলে দেন ষষ্ঠ বোলার হিসেবে বল হাতে তুলে নিয়ে গুদাকেশ মোটি। তিনি তামিম-লিটনসহ পরে আফিফ (০)-মোসাদ্দেককেও (১৪) আউট করে এই চাপ সৃষ্টি করেন। এরমাঝে ছিল আবার জোড়া আঘাত। ফলে দলের রান ১ উইকেটে ৭০ থেকে পরিণত হয় ৫ উইকেটে ১১৬। এ সময় উইন্ডিজ দারুণভাবে ম্যাচে ফিরে আসে। কিন্তু মাহমুদউল্লাহর (তাকে আউট করেন পুরান) ২৬ রানের সঙ্গে সপ্তম উইকেট জুটিতে নুরুল হাসান সোহান ও মেহেদি হাসান মিরাজের জুটিতে অবিচ্ছিন্ন ৩২ রান বাংলাদেশ নিরাপদে বন্দরে পৌছায়। নুরুল ৩২ ও মিরাজ ১৬ রানে অপরাজিত থাকনে। মোদী টান ১০ ওভার চমৎকার বোলিং করে ২৩ রানে নেন ৪ উইকেট।
এমপি/এএস