সাকিবদের সন্ধান পেতে হেরাথের কাজ শুরু
বাংলাদেশের ক্রিকেট পঞ্চ পান্ডবের দিন শেষে হয়ে আসছে। মাশরাফি নেই কোন ফরম্যাটে। মাহমুদউল্লাহ নেই টেস্টে। টি-টোয়েন্টিতে অভিমানে নেই তামিম ইকবাল। সাকিব আল হাসানকে তিন ফরম্যাটে সবসময় পাওয়া কঠিন হয়ে উঠে। শুধুমাত্র মুশফিকই আছেন। এর বাইরে যারা আছেন তাদের খুব কম সংখ্যকই নিজেদের ধারাবাহিকভাবে ধরে রাখতে পারছেন। সৌম্য সরকারের মতো অমিত সম্ভাবনাময়ী ক্রিকেটারও এখন দলের বাইরে। নাম আসতে পারে সাব্বির রহমান রুম্মানেরও। এরকম আরো অনেকেই আছেন আসা-যাওয়ার মিছিলে। এঁরা যেন অনেকটাই ওয়ান টাইম গ্লাসের মতো। তার মাঝেও টিকে আছেন লিটন, মোস্তাফিজরা। কিন্তু এতে কেউ কখনো ইনজুরিতে পড়লে শূন্যতা প্রকট হয়ে উঠে। যা এবার চেখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে। সিরিজে আগে মিরাজ, তার শূন্যস্থান পূরণে নাঈম হাসান, পরে তিনিও ইনজুরিতে পড়লে বিকল্প না থাকাতে তাদের পরিবর্তে কোনো অফ স্পিনার আর নেয়া হয়নি। এতে টনক নড়ে বিসিবির। দ্রুতই তারা নেমে পড়ে নতুন মুখের সন্ধানে। জাতীয় দলের স্পিন বোলিং কোচ রঙ্গনা হেরাথের তত্ত্বাবধানে নতুন-পুরাতন মিলে ৩২ ক্রিকেটারকে নিয়ে চারদিনের সংক্ষিপ্ত মেয়াদে শুরু করেছে এই ক্যাম্প। শুরু হয়েছে আজ থেকে। এখান থেকেই খোঁজে বের করা হবে আগামীদিনের সাকিব-তাইজুলদের। প্রথম দিনের ক্যাম্পে উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু ও সদস্য হাবিবুল বাশার সুমন। তারও পর্যবেক্ষণ করেছেন প্রতিভাবানদের।
প্রথম দিন সব বোলারদের অনুশীলন ভিডি ধারণ করা হয়েছে। এই ভিডিও দেখে হেরাথ তাদের নিয়ে কাজ করবেন বাকি কদিন। প্রথম দিনের কাজ শেষে তিনি বলেন, ‘সম্ভাবনাময় স্পিনারদের চিহ্নিত করাই মূল কাজ। সে ভাবেই আমি শুরু করেছি। প্রথম দিন ভালো একটা সেশন কেটেছে আমাদের। আমাদের হাতে আরও কয়েকদিন সময় আছে। আশা করছি সব স্পিনারকে দেখার সুযোগ পাবো এর মাঝে। তারপরও আমরা সেভাবে আগামী কিছুদিন আমরা কাজ করতে পারবো।’ তিনি বলেন, ‘আমি আশা করছি দ্রুতই ফলাফল পাবো। এই ফলাফল পেতে প্রচুর স্পিনারের সঙ্গে কাজ করতে হবে। আমি সেভাবেই সামনেন দিকে তাকাচ্ছি।’
প্রথম দিনের অনুশীলন শেষে সাকিব-তাইজুলদের মতো কাউকে চোখে পড়েছে কি-না জানতে চাওয়া হলে হেলাথ বলেন, ‘আজ প্রথম দিন গেল। এখনই চোখে পড়েনি। আমরা কাজ শুরু করেছি। তাদের প্রোফাইল দেখব। ভিডিও দেখব। অনেকেই বেশ ভালো। আশা করছি আগামী কয়েকদিনে সম্ভাবনাময় স্পিনার আমরা খুঁজে পাবো।’
বাংলাদেশে বিশেষজ্ঞমানের স্পিনারের ঘাটতি প্রসঙ্গে হেরাথের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘এটা আসলে সব সময় নির্ভর করে। আগের ম্যাচে নাঈম ছয় উইকেট পেয়েছেন। তাইজুল ভালো বোলিং করেছেন। এরপর সাকিব পাঁচ উইকেট পেয়েছেন। এটি আসলে একটি টিম ওয়ার্ক। আসলে আমাদের বুঝতে হবে একজন বোলার প্রতিটি উইকেট নিতে পারবে না। আপনি যদি তখন উইকেট না পান, তখন জুটি বেঁধে বোলিং করতে হবে। চাপ তৈরি করতে হবে, মেডেন ওভার নিতে হবে। এখানে অবশ্যই উন্নতি করার আছে। আমি নিশ্চিত তারা উইন্ডিজ সফরে আগে এখান থেকে কিছু শিখবে। উইন্ডিজ সফরে বেশি করে তারা প্রয়োগ করবে।
এটা সবসময় নির্ভর করে। আগের ম্যাচে নাঈম ছয় পেয়েছেন, টিজে খুব ভালো বোলিং করেছেন এবং তারপর সাকিব পেয়েছেন পাঁচটি। তাই সব মিলিয়ে এটি একটি অংশীদারিত্ব। মূলত আমাদের বুঝতে হবে যে প্রতিটি বোলার প্রতিটি একক উইকেট নিতে পারে না। সেক্ষেত্রে, আপনি যদি উইকেট না পান, আপনাকে পার্টনারশীপে বল করতে হবে। কীভাবে চাপ তৈরি করবেন এবং মেডেন ওভার বল করবেন। অবশ্যই উন্নতি করার কিছু আছে তবে আমি নিশ্চিত যে তারা এখান থেকে কিছু শিখবে এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের আগে তারা ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে অতিরিক্ত প্রচেষ্টা প্রয়োগ করবে ‘এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, আমি সবসময় মনে করি স্পিনারের বল টার্ন করা প্রয়োজন। অবশ্যই লাইন ও লেন্থ বজায় রাখতে হবে। টেস্ট ক্রিকেট সবসময় আপনার দক্ষতা পরীক্ষা করে। এটা শারীরিক, মানসিক বা কৌশলগতভাবে হতে পারে। আপনি দ্রুত কোনো ফলাফল আশা করতে পারেন না। আমাকে আরো স্পিনারদের সঙ্গে কাজ করতে হবে। যে কারণে আমি এখানে। হেরাথ মনে করেন বিসিবি এ জাতীয় ক্যাম্প জাতীয় দলের জন্য ব্যাকআপ স্পিনার তৈরিতে ভুমিকা রাখবে। তিনি বলেন, ‘ব্যাকআপ হিসেবে অতিরিক্ত স্পিনার থাকলে তা বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য সুবিধা হবে। যেমন, এখন নাঈম ইনজুরিতে পড়েছেন এবং উপযুক্ত অফস্পিনার নেই। আমাদের স্পিনারদের রেকর্ড রাখতে হবে এবং সেই স্পিনারদের এগিয়ে যাওয়ার পথ হিসেবে ধরে রাখতে হবে।’
এমপি/