নাসুমের ৬ উইকেট
মোহাম্মদ মিঠুন, সৌম্য সরকার, মিজানুর রহমান এই তিন ব্যাটসম্যান বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগের প্রথম রাউন্ডে ওয়ালটন মধ্যাঞ্চলের হয়ে সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন বিসিবি উত্তরাঞ্চলের বিপক্ষে। কিন্তু দ্বিতীয় রাউন্ডের দ্বিতীয় দিন ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চলের বিপক্ষেও তিন জনের অবস্থান ছিল একই কাতারে। তিন জনেই ২ রান করে আউট হয়েছেন। শুরুর এই বিপর্যয়ে মধ্যাঞ্চল পড়ে বিপদে। নিতে পারেনি পূর্বাঞ্চলকে ২৪৫ রানে আটকে রাখার ফায়দা। পরে জাকের আলী (৯২) ও তাইবুর রহমানের (৭৬) ব্যাটে চড়ে তারা কোনো রকমে বিপদ এড়িয়ে অলআউট হয়নি। ৯ উইকেটে করেছে ২২৩ রান। পিছিয়ে আছে ২২ রানে। উইকেটে আছেন রবিউল ২২ ও হাসান মুরাদ ৩ রানে।
মিরপুরে প্রথম দিনের পর দ্বিতীয় দিনও বোলারদের দাপটে যেমন অব্যাহত ছিল, তেমনি চট্টগ্রামে প্রথম দিনের পর দ্বিতীয় দিনও দাপট ছিল ব্যাটসম্যানদের। আগের দিন বিসিবি উত্তরাঞ্চল ৪ উইকেটে ২৪৬ রান নিয়ে খেলতে নেমে ৩৮৫ রানে অলআউট হয়। নাঈম ইসলাম তার ১২৬ রানের ইনিংসকে টেনে নিয়ে যান ১৩৭ রানে। নাসুম আহমেদ ৬ উইকেট নিয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে শততম উইকেট নেয়ার মাইলফলক স্পর্শ করেন। জবাব দিতে নেমে বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল ২ উইকেটে করেছে ১১২ রান।
মিরপুরে দিনের প্রথম বলেই ফিরে যান মিঠুন। পরের ওভারের দ্বিতীয় বলে মিজানুর। সৌম্য সরকার ফিরেন দিনের ষষ্ঠ ওভারে। মিঠুন ও সৌম্যকে, এনামুল এবং মিজানুরকে আসাদুজ্জামান পিয়াল। দিনের নবম ওভারে সালমানকেও ফিরিয়ে দেন পিয়াল। নাঈম হাসান বল হাতে নিয়ে ফিরিয়ে দেন দলপতি শুভাগত হোমকে। তখন মধ্যাঞ্চলের রান ৫ উইকেটে মাত্র ৩২। ভয়াবহ ব্যাটিং ব্যর্থতাকে আরো ঘণিভূত হতে দেননি তাইবুর ও জাকের আলী। দুইজনে বিপদ সামলে দলকে টেনে নিয়ে যেতে থাকেন। ক্রমেই আকাশের মেঘ কেটে গিয়ে সূর্য উঁকি দিতে থাকে মধ্যাঞ্চলের ইনিংসে। এই জুটি যখন ভাঙ্গে তখন, মধ্যাঞ্চলের আকাশে তেজোদ্দীপ্ত সূর্য। জুটিতে ১৫২ রান যোগ হওয়ার ফলে দলের রান ১৮৪। এ সময় তাইবুর আউট হন ৭৬ রান করে নাঈমের শিকার হয়ে। অপরদিকে সেঞ্চুরির কাছাকাছি জাকের আলী। কিন্তু এই জুটি ভেঙ্গে যাওয়ার পর শেষ বিকেলে আবার ওয়ালটনের আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে যায়। পটাপট পড়তে থাকে উইকেট। যেখানে ছিলেন সেঞ্চুরি বঞ্চিত জাকের আলীও। ৯২ রানে তাকে ফিরিয়ে দেন তানভীর ইসলাম। এসময় মাত্র ১৯ রানে পড়ে ৪ উইকেট। ফলে ৫ উইকেটে ১৮৪ রান থেকে দলের রান দাঁড়ায় ৯ উইকেটে ২০৩। তারপরও মধ্যাঞ্চল অলআউট হয়নি, রবিউল এক প্রান্ত আগলে রেখে ২২ রানে অপরাজিত থাকলেন। তার সঙ্গে ৩ রান নিয়ে সোমবার (২০ ডিসেম্বর) ব্যাট করতে নামবেন হাসান মুরাদ। পূর্বাঞ্চলের হয়ে আসাদুজ্জামান পিয়াল ৪৮ রানে ৩টি, তানভীর ইসলাম ৪২, এনামুল হক ৫০ ও নাঈম হাসান ৭০ রানে ২টি করে উইকেট।
চট্টগ্রামে প্রথম দিনই উত্তরাঞ্চল বড় সংগ্রহের আভাস দিয়েছিল। কিন্তু সে তুলনায় তারা খুব বড় ইনিংস গড়তে পারেনি। ৪ উইকেটে ২৪৬ রান নিয়ে খেলতে নেমে ১৩১ রান যোগ করতেই পতন হয় অবশিষ্ঠ ৬ উইকেটের। আর এ কাজটি করেন স্পিনার নাসুম আহমেদ। তিনি আজ পতন হওয়া ৬ উইকেটের ৫টিই নিজের পকেটে ভরে নেন। আগের দিন নিয়েছিলেন ১ উইকেট। ৪৪ ওভার বোলিং করে ১২৬ রান নিয়েছেন ৬ উইকেট। প্রথম ম্যাচেও তিনি পেয়েছিলেন ৫উইকেট। নাসুমের কারণে নাঈম ইসলাম যেমন তার ১২৬ রানের সঙ্গে মাত্র ১১ রান যোগ করতে পেরেছিলেন, তেমনি আরেক অপরাজিত ব্যাটসম্যান মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনও ৭৬ রানে থেমে যান। দিনের অপর উইকেট নেন ব্যাট হাতে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে যাওয়া শরিফুলকে ৫৬ রানে আউট করে মেহেদী হাসান।
জবাব দিতে নেমে দক্ষিণাঞ্চল শুরুতে মিশুকুরের উইকেট হারালেও বিপদ আসেনি। এনামুল হক বিজয় ৩৫ রানে ফিরে যাওয়ার পর অমিত হাসান (৩১*) ও তৌহিদ হৃদয় ( ৩৯*) দিন পার করে আগামীকাল আবার ব্যাট করতে নামবেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়ালটন মধ্যাঞ্চল বনাম ইসলামী ব্যাংক পূর্বাঞ্চল-
পূর্বাঞ্চল: ২৪৫।
মধ্যাঞ্চল: ২২৩/৯, ওভার ৮৬.৪ ( জাকের আলী ৯২, তাইবুর ৭৬, রবিউল হক ২২*. আসাদুৃজ্জামান পিয়াল ৩/৪৮, তানভীর ইসলাম ২/৪২, এনামুল হক ২/৫০, নাঈম হাসান ২/৭০)।
বিসিবি উত্তরাঞ্চল বনাম বিসিবি দক্ষিণাঞ্চল-
উত্তরাঞ্চল: ৩৮৫/১০, ( আগের দিনের ২৪৬/৪) , ওভার ১৩৮.৪ ( নাঈম ইসলাম ১৩৭, মাইদুল ইসলাম অঙ্কন ৭৬, শরিফউল্লাহ ৫৬, মার্শাল আইয়ুব ৪৭,আরিফুল হক ৩১, নাসুম আহমেদ ৬/ ১২৬, নাহিদুল ইসলাম ২/৩১, মেহেদী হাসান ২/৬৩)।
দক্ষিণাঞ্চল:১১২/২, ওভার ৩৯ তৌহিদ হৃদয় ৩৯*, এনামুল হক ৩৫, অমিত হাসান ৩১*,শফিকুল ইসলাম ১/২২, নোমান চৌধুরী ১/২৮)।
এমপি/এএস