রবিবার, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ | ১৯ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গন

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সঙ্গে ক্রীড়াঙ্গন যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। বাঙালি জাতির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে ১৯৭১ সালে মুক্তির সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাঙালিরা। এ সময় গঠিত হয়েছিল মুজিব নগর সরকার। তখন গঠিত হয়েছিল স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলও। সেই দল ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে প্রদশর্নী ম্যাচ খেলে তহবিল সংগ্রহ করেছে। একই সঙ্গে জনমতও তৈরি করেছে। উড়িয়েছে বাংলাদেশের পতাকা। সাঁতারু অরুন নন্দি ৯০ ঘণ্টা ৫ মিনিট সাঁতার কেটে গড়েন বিশ্ব রেকর্ড। এখান থেকে অর্জিত অর্থ মুজিবনগর সরকারের তহবিলে জমা দেন তিনি। এভাবেই ক্রীড়াঙ্গন জড়িয়ে আছে মুক্তির সংগ্রামে।

১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হয়। শুরু হয় স্বাধীন সার্বভৌম্য বাংলাদেশের পথ চলা। অন্যান্য ক্ষেত্রের ন্যায় ক্রীড়াঙ্গনও এগিয়ে যেতে থাকে। স্বাধীনতা অর্জনের ৫০ বছরের পথ পরিক্রমায় ক্রীড়াঙ্গনে আছে অনেক অর্জন। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ক্রিকেটে চ্যাম্পিয়ন হওয়া, নারী এশিয়া কাপ ক্রিকেটে শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট অর্জন, কমনওয়েলথ গেমস শ্যুটিংয়ে স্বর্ণ পদক অর্জন, বিশ্বকাপ ক্রিকেটে খেলা, টেস্ট মর্যাদা পাওয়া, উপমহাদেশে প্রথম গ্র্যান্ড মাস্টার পাওয়া, এশিয়ান গেমস ক্রিকেটে পুরুষদের বিভাগে স্বর্ণ জয়, ফুটবলে কয়েকটি শিরোপা জয়, মেয়েদের বয়স ভিত্তিক বিভিন্ন আসরে সেরা হওয়া ছিল উল্লেখ্যযোগ্য। এছাড়া গলফে সিদ্দিকুর রহমান, আর্চারিতে রোমান সানার সাফল্য যেমন আছে, তেমনি অ্যাথলেটিক্সে, বক্সিং, সাঁতারেও আছে কিছু কিছু সাফল্য।

স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল
বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগেই গঠিত হয় স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল। অধিনায়ক ছিলেন জাকারিয়া পিন্টু। ম্যানেজার ছিলেন তানভীর মাজহার তান্না। দলে অন্যদের মাঝে ছিলেন বাফুফের বর্তমান সভাপতি কাজী সালাহউদ্দিনও। ভারতের কয়েকটি রাজ্যে এই দল ১৪টির মতো প্রদশর্নী ম্যাচ খেলে। ২৫ জুলাই নদিয়ার কৃষ্ণনগর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় প্রথম খেলা। বাজানো হয় জাতীয় সংগীত। উড়ানো হয় জাতীয় পতাকা।

অবদান রেখেছিলেন অরুন নন্দিও
স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল অবদান রেখেছিল ফুটবল মাঠে। আর সাঁতারু অরুন নন্দি অবদান রেখেছিলেন পানিতে। ১৯৭১ সালের অক্টোবরে তিনি কলকাতার কলেজ স্কয়ারে ৯০ ঘন্টা ৫ মিনিট সাঁতার কেটে গড়েন বিশ্ব রেকর্ড। আগের রেকর্ড ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সিমুনের। ১৯৩২ সালে ৮৯ ঘন্টা ৩৬ মিনিট সাঁতার কেটে এই রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। বিশ্ব রেকর্ড গড়ে পেয়েছিলেন এক লাখ রুপি। সেই পুরো টাকাটা তিনি জমা দিয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধে তহবিলে। ২০১৮ সালের ১৬ নভেম্বর কলকাতায় মারা যান তিনি।

ক্রিকেটে সাফল্য
স্বাধীনাত্তোর বাংলাদেশের সেরা সাফল্য ক্রিকেটে। স্বাধীনতার সময় গোটা জাতি এক হলেও পরবর্তীতে সেই একতা আর থাকেনি। তৈরি হয় বিভাজন। সেই বিভাজন দূর হয়ে গিয়েছিল ক্রিকেটের কল্যাণে। ১৯৯৭ সালে বিশ্বকাপ ক্রিকেটে খেলার সুযোগ আসার পর গোটা জাতি নেমে এসেছিল রাস্তায়। মালয়েশিয়ার কিলাত ক্লাব মাঠে আকরাম বাহিনীর সেই সাফল্যে বাংলাদেশে তৈরি হয়েছিল এক অভূতপূর্ব দৃশ্য। পরে সেই আসরে বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নও হয়েছিল। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় তখন আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গোটা দলকে বিমানবন্দর থেকে নিয়ে এসে দেওয়া হয়েছিল সংবর্ধনা। এরপর ক্রিকেটে শুধুই এগিয়ে চলা।

১৯৯৯ সালে টেস্ট মযার্দা পাওয়ার পর ২০০০ সালের ১০ নভেম্বর প্রথম টেস্ট খেলে বাংলাদেশে ক্রিকেট দল। প্রতিপক্ষ ভারত। ক্রিকেটের কোনো ফরম্যাটে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত মুকুট অর্জন করতে না পারলেও ২০১৭ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমি-ফাইনালে খেলেছিল। ২০১৫ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা ছিল সেরা অর্জন। ঘরের মাঠে পরপর তিন সিরিজে পাকিস্তান, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জয় ছিল অনেক বড় সাফল্য। এশিয়াতে প্রথম স্বর্ণ এসেছে এই ক্রিকেটের মাধ্যমেই ২০২০ সালে বেইজিংয়ে। টেস্ট ক্রিকেটে তেমন কোনো সাফল্য না থাকলেও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে শততম টেস্ট ম্যাচ জিততে পেরেছিল।


ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশের পোস্টার বয় সাকিব আল হাসান। ২০১৫ সালে তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটে অলরাউন্ডার ছিলেন তিনি।

খেলার মাঠের চেয়ে আয়োজনের দিক দিয়ে অনেক এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। বেশ কয়েকবার আয়োজন করেছে এশিয়া কাপ ক্রিকেট। এখন যেটি আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি, শুরুতে এর নাম ছিল নক আউট বিশ্বকাপ। এই আসরের প্রথম আয়োজক ছিল বাংলাদেশ, যা বিসিবি আয়োজন করেছিল টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার আগেই। ২০১১ সালে ভারত ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে যৌথভাবে ওয়ানডে বিশ্বকাপ আয়োজন করেছিল। ২০১৪ সালে পুরুষ ও নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের একক আয়োজক ছিল বাংলাদেশ। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপও আয়োজন করেছে দুইবার।


ফুটবলে আশা পূরণ হয়নি
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ফুটবল ছিল বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। আবাহনী- মোহামেডানের নামে দেশ দুই ভাগ হয়ে পড়তো। মারামারি, সংঘর্ষে মারা যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। সমর্থকদের পাশাপাশি ফুটবলারদের জেলে যাওয়ার মতোও ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু ফুটবলের সেই জনপ্রিয়তা পরে আর থাকেনি। এখন আর আবাহনী-মোহামেডানের খেলায় দর্শকরা স্টেডিয়ামমুখি হন না। ফুটবলের এই অসম্ভব জনপ্রিয়তার মাঝেও কিন্তু জাতীয় দলের সে রকম কোনো সাফল্য ছিল না। ১৯৭৪ সালে ফিফার সদস্য পদ লাভ করে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। বিশ্ব ফুটবলের আসরে বাংলাদেশ ফুটবলের সর্বোচ্চ দৌড় বিশ্বকাপ বাছাই পর্যন্ত। ফুটবলের শিরোপা আছে তিনটি। একটি ১৯৮৯ সালে ঘরের মাঠে প্রেসিডেন্ট কাপ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল লাল-সবুজের দল। ১৯৯৫ সালে মিয়ানমারে চার জাতি শিরোপা জিতেছিল। আর অধরা হয়ে থাকা সাফ গেমস ফুটবলে শিরোপা জিতেছিল ১৯৯৯ সালে নেপালে। তবে এখন পর্যন্ত উপমহাদেশের বিশ্বকাপ হিসেবে পরিচিত সাফ ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি বাংলাদেশ।

ছেলেদের ফুটবল যখন নিম্নমুখি তখন ক্রমেই উঠে আসছে মেয়েদের ফুটবল। জাতীয় দল তেমন কোনো সাফল্য না পেলেও অনূর্ধ্ব-১৫ ও অনূর্ধ্ব-১৮ সাফ আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ।

কমনওয়েলথ গেমসে বাংলাদেশ প্রথম স্বর্ণ
সাফ গেমস ছাড়া অন্য যেকোনো গেমসে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ মূল কথা। দুই/একটা পদক আসা ছিল অনেক বড় প্রাপ্তি। সেখানে ১৯৯০ সালে প্রথমবারের মতো অকল্যান্ডে কমনওয়েলথ গেমসে শ্যুটিংয়ে এয়ার পিস্তল ইভেন্টে স্বর্ণ জিতেন বাংলাদেশের আতিকুর রহমান ও আব্দুস সাত্তার। এরপর ২০০২ সালে ম্যানচেষ্টার কমনওয়েলথ গেমসে এয়ার রাইফেলে স্বর্ণ জিতেন আসিফ হোসেন খান।

উপমহাদেশের প্রথম গ্র্যান্ড মাস্টার নিয়াজ মোর্শেদ 
ক্রিকেটে সাফল্য আসার অনেক আগে দাবাতে ছিল বড় সাফল্য। আর সেটি ছিল নিয়াজ মোর্শেদের গ্র্যান্ড মাস্টার খেতাব লাভ। তার এই খেতাব ছিল উপমহাদেশেরও প্রথম। নিয়াজ এই খেতাব পেয়েছিলেন মাত্র ২১ বছর বয়সে ১৯৮৭ সালে। তিনি ছিলেন সেই সময়ে এশিয়ার পঞ্চম গ্র্যান্ড মাস্টার। তার এই খেতাব জেতার পর এগুতে পারেনি বাংলাদেশের দাবা। তবে দাবায় নিজের সাফল্যের জন্য নিয়াজ মোর্শেদ স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন।

নিয়াজ মোর্শেদের মতো করে না হলেও দাবায় নাম আসবে রানী হামিদের। তাকে বলা হয় দাবার রানী। বাংলাদেশের প্রথম নারী আর্ন্তজাতিক দাবা মাস্টার। ১৯৮৫ সালে তিনি এই খেতাব পান। ১৫ বারের জাতীয় দাবা চ্যাম্পিয়ন রানী হামিদ এখনও খেলে চলেছেন।

গিনেস বুকে লিনুর নাম
জোবেরা রহমান লিনু হলেন বাংলাদেশের নারী টেবিল টেনিতে মুকুটহীন রানী। ১৬ বারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন। এই অর্জনে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে তার নাম উঠে যায় গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ডে। টেবিল টেনিস ছাড়াও তিনি সাইক্লিংয়ে তিনবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন। ইউনেসেফের শুভেচ্ছাদূক হয়েও কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে।

এশিয়া গেমসে মোশাররফই প্রথম
প্রতি চার বছর পরপর অনুষ্ঠিত এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ শুধুই অংশগ্রহণ করে থাকে। কোনো পদকের আশা থাকে না। সেখনে বাজিমাত করেন বক্সার মোশাররফ হোসেন। ১৯৮৬ সালে এশিয়ান গেমসে তিনি প্রথমবারর মতো ব্রোঞ্জ পদক জিতে পদক তালিকায় বাংলাদেশের নাম লেখান। এই অর্জনে ১৯৯৯ সালে জাতীয় পুরস্কার পেয়েছিলেন তিনি।

ট্র্যাকের রাজা শাহআলম
যেকোনো গেমসের সেরা ইভেন্টে হলো নারী-পুরুষের ১০০ মিটার দৌঁড়। সাফ গেমসে শাহ আলম পরপর দুইবার এই ইভেন্টে সেরা হয়ে উপমহাদেশের দ্রুততম মানব হয়েছিলেন। সড়ক দুর্ঘটনায় ১৯৮৯ সালে তার অকাল প্রয়াত হয়। শাহআলম ছাড়া বিমল চন্দ্র রায়ও সাফের দ্রুততম মানব হয়েছেন একাবর। এই সাফ গেমসেই ১৯৯৩ সালে সাঁতারে মোশাররফ হোসেন একাই ৫টি স্বর্ণ উপহার দিয়েছিলেন দেশবাসীকে।

বলবয় থেকে গলফার সিদ্দিকুর
গলফের কোর্টে সিদ্দিকুর রহমান ছিলেন প্রথমে বলবয়। সেখান থেকে তিনি নিজেকে ধীরে ধীরে জড়িয়ে ফেলেন খেলোয়াড় হিসেবে। এখন তিনিই দেশসেরা গলফার। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে তিনিই বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করছেন। এখনো সাফল্যের সেরা পালক না জুটলেও বেশ কয়েকবার নজর কেড়েছেন। এশিয়ান ট্যুরে কয়েকবার রানার্সআপ হওয়ার কৃতিত্ব আছে তার। এছাড়া শ্রীলঙ্কা, সিঙ্গাপুর, থাই ওপেনে চ্যাম্পিয়ন হয়ে মহাদেশীয় গলফে নিজের নামকে আরো উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তিনি।

উঠে আসছে আর্চারি
বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে ক্রমেই উঠে আসছে আর্চারি। ব্যক্তিগত এই ইভেন্টে ক্রমেই নিজেকে উপরের দিকে নিয়ে যাচ্ছেন রোমান সানা। ২০১৯ সালে বিশ্ব আর্চারির মঞ্চে তিনি ব্রোঞ্চ পদক জিতেছিলেন। এই অর্জনে তিনি প্রথমবারের মতো চলতি বছর টোকিও অলিম্পিকে খেলেছিলেন। রোমান সানার পাশাপাশি মেয়েরাও এই ইভেন্টে ভালো করতে শুরু করেছেন। বাংলাদেশের আগামীর সম্ভাবনার নাম আর্চারি।

এমপি/এসআইএইচ/

Header Ad
Header Ad

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো ‘হিজাব র‍্যালি’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো ‘হিজাব র‍্যালি’। ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক হিজাব দিবস উপলক্ষে প্রথমবারের মতো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘হিজাব র‍্যালি’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার দুপুরে র‍্যালির আয়োজন করে ‘প্রোটেস্ট এগেইনস্ট হিজাবোফোবিয়া ইন ডিইউ’ নামের একটি সংগঠন।

র‍্যালিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে টিএসসি হয়ে রাসেল টাওয়ার ঘুরে রাজু ভাস্কর্যের সামনে এসে শেষ হয়। এরপর একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা অন্যান্য ক্ষেত্রে পোশাকের স্বাধীনতার কথা বলে থাকি, কিন্তু যখন হিজাবের কথা আসে, তখন স্বাধীনতার সম্মানটা কেউ করে না। তাঁরা বলেন, হিজাব আমাদের অধিকার। আমাদেরকে আমাদের কাজ দিয়ে বিবেচনা করুন, পোশাক দিয়ে নয়।’

র‍্যালির আয়োজন করে ‘প্রোটেস্ট এগেইনস্ট হিজাবোফোবিয়া ইন ডিইউ’ নামের একটি সংগঠন। ছবি:সংগৃহীত

সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মিশকাতুল জান্নাত বলেন, ‘যেকোনো বিষয়ে জানার জন্য আমাদের তার পেছনের ইতিহাস জানা সব থেকে জরুরি। আমরা যেমন দেখেছি, জুলাই অভ্যুত্থানের মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে বিভিন্ন প্রকার প্রোপাগান্ডার শিকার হয়েছি, ইতিহাস বিকৃত করা হচ্ছে। তাই আমরা যদি আমাদের ইতিহাস না জানি তাহলে এই হিজাব ডে এটি আস্তে আস্তে হারিয়ে যাবে।’ তিনি বলেন, বিগত চার বছর ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ বিশ্ব হিজাব দিবস ঘিরে কিছু কিছু ইভেন্ট করেছে। তবে সার্বিকভাবে এটা এখনো বাংলাদেশে পপুলার (জনপ্রিয়) না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী উম্মে ছালমাও এই হিজাব র‍্যালিতে অংশ নেন। তিনি বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে অনেক নিকাব–হিজাব পরিহিত আপু থাকলেও পরবর্তীতে আমরা কোনো নিকাব করা নারী নেতৃত্ব দেখতে পাইনি।’

তিনি বলেন, ‘নিকাব করে নামাজ পড়বে, রোজা রাখবে, সংসার করবে, রান্না করবে এমন ধারণায় বিশ্বাসী আমাদের সমাজ। আমি মনে করি, আমরা হিজাব–নিকাব করেও দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজ যোগ্যতায় দেশের উন্নয়নে কাজ করতে পারি। এজন্য আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত। আপনার অধিকার আপনাকেই আদায় করে নিতে হবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘হিজাব র‍্যালি’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ছবি:সংগৃহীত

র‍্যালিটির অন্যতম আয়োজক স্বাধীন বাংলাদেশ ছাত্র সংসদ নামে একটি সংগঠনের আহবায়ক জামালুদ্দিন খালেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘যাঁরা ফ্যাসিবাদের আমলে হিজাব–নিকাব পরিধান করেছেন, তাঁরা বিভিন্নভাবে হেনস্তার শিকার হয়েছেন। শুধু হিজাব–নিকাবই নয়, যাঁরা দাড়ি–টুপি পরতেন, তাঁরাও বৈষম্যের শিকার হয়েছেন। পশ্চিমারা এগুলোকে একধরনের জঙ্গিবাদের চিহ্ন হিসেবে উপস্থাপন করেন। এই সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার জন্যই মূলত আমাদের এই প্রচেষ্টা।’

হিজাব র‍্যালি শেষ হলে রাজু ভাস্কর্যে এক সমাবেশে পাঁচজন শিক্ষার্থীকে পুরস্কৃত করা হয়। অনলাইন প্রচারণার মাধ্যমে যাঁরা র‍্যালির উপস্থিতি বাড়িয়েছেন, তাদের মধ্য থেকে পাঁচজনকে দেওয়া হয় এই পুরস্কার। তাছাড়া রোববার সকাল ৯টায় ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ১০০তম ব্যাচের উদ্যোগে হিজাব বিষয়ে সচেতনতার জন্য একটি সেমিনারও আয়োজন করা হবে। সেমিনারটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর সি মজুমদার মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

Header Ad
Header Ad

কুমিল্লায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিহত

স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিহত। ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে বিএনপি’র দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হাজী সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়া (৫০) নামে এক স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিহত হয়েছেন। শনিবার বিকালে এ ঘটনা ঘটে। নিহত সেলিম উপজেলার হেসাখাল ইউনিয়ন দায়েমছাতী গ্রামের আব্দুল খালেকের পুত্র। তিনি হেসাখাল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক।

জানা যায়, উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়ন যুবদলের কর্মী সম্মেলন শনিবার বিকাল ৩টায় বাঙ্গড্ডা বাদশা মিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া। অপরদিকে সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূঁইয়া নেতাকর্মীদের নিয়ে উপজেলার রায়কোট দক্ষিণ ইউনিয়নের বাসন্ডা গ্রামে একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে পূর্বনির্ধারিত একটি প্রোগ্রামে পেরিয়া ইউনিয়নের কাকৈরতলার উদ্দেশ্যে রওনা করেন। আব্দুল গফুর ভূঁইয়ার গাড়ি বহর বাঙ্গড্ডা পশ্চিম বাজার পার হওয়ার সময় মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া সমর্থিত নেতাকর্মীরা পেছন থেকে হামলা চালায় বলে দাবি করেন আব্দুল গফুর ভূঁইয়ার নেতাকর্মীরা।
হামলায় ৫ জন আহত হয়। তাদের পরিচয় জানা যায়নি। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়াকে নাঙ্গলকোট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূঁইয়া বলেন, আমি আমার নেতাকর্মীদের নিয়ে উপজেলার রায়কোট দক্ষিণ ইউনিয়নের বাসন্ডা গ্রামে সামাজিক একটি অনুষ্ঠানে যোগদান করি। দাওয়াত শেষে পেরিয়া ইউনিয়নের কাকৈরতলায় পূর্বনির্ধারিত মতবিনিময় সভায় আসার পথে বাঙ্গড্ডা পশ্চিম বাজারে মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়ার নেতাকর্মীরা আমার গাড়ি বহরের পিছনে হামলা চালায়। হামলায় ৫ জন আহত হয় এবং হামলায় হেসাখাল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দল আহ্বায়ক সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়া নিহত হয়েছেন। আমরা গভীরভাবে শোকাহত। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়ার হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানাই।

কেন্দ্রীয় বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য মোবাশ্বের আলম ভূঁইয়া বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা সর্ম্পকে আমি জানি না। আমার একটি প্রোগ্রাম ছিল, শান্তিপূর্ণভাবে আমি সে প্রোগ্রাম শেষ করে এসেছি। আমার প্রোগ্রামে কোনো বিশৃঙ্খলা ঘটেনি।

নাঙ্গলকোট থানা অফিসার ইনচার্জ একে ফজলুল হক বলেন, সেলিম উদ্দিন ভূঁইয়া নামে একজন মৃত্যুবরণ করেছেন শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

 

Header Ad
Header Ad

প্রতিটি ডলারের পাল্টা জবাব দেওয়া হবে: ট্রাম্প শুল্ক নিয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী  

কানাডার প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী মার্ক কার্নি। ছবিঃ সংগৃহীত

কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর জবাবে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছেন কানাডার শীর্ষ নেতারা।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, দেশটির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী মার্ক কার্নি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক আরোপের বিরুদ্ধে 'ডলার-প্রতি-ডলার পাল্টা জবাব দেওয়া হবে'।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার পর তার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার জন্য এখন পর্যন্ত পাঁচজন প্রার্থী ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন, যাদের একজন কার্নি। ব্যাংক অব কানাডা এবং ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের সাবেক এই গভর্নর কানাডার ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টির সর্বাধিক এমপির সমর্থন পেয়েছেন।

আগামী ৯ মার্চ লিবারেল পার্টির শীর্ষ নেতা নির্বাচিত হবে। আগামী ২০ অক্টোবর বা তার আগেই জাতীয় নির্বাচন হতে পারে।

বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ৫৯ বছর বয়সী কার্নি বলেন, 'প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হয়তো ভাবছেন কানাডা ভেঙে পড়বে। কিন্তু আমরা এর বিরুদ্ধে দাঁড়াব, পিছু হটব না। ঐক্যবদ্ধ হয়ে আমরা পাল্টা ব্যবস্থা নেব।'

এমন শুল্কের জন্য বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের যে সুনাম, তা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

'এই শুল্ক (যুক্তরাষ্ট্রের) প্রবৃদ্ধিতে আঘাত হানবে। মূল্যস্ফীতি বাড়াবে। সুদের হারও বাড়াবে,' যোগ করেন তিনি।

শুল্ক আরোপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র 'এক দশকের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো তাদের সবচেয়ে কাছের বাণিজ্যিক অংশীদারের সঙ্গে করা চুক্তি ভঙ্গ করেছে' বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

আরেক প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে 'ডলার-প্রতি-ডলার' পাল্টা শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন।

বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো বলেছেন, নতুন শুল্কের বিরুদ্ধে কানাডা 'জোরালো' ও 'তাৎক্ষণিক' জবাব দেবে।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমবারের মতো ‘হিজাব র‍্যালি’
কুমিল্লায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা নিহত
প্রতিটি ডলারের পাল্টা জবাব দেওয়া হবে: ট্রাম্প শুল্ক নিয়ে কানাডার প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী  
সেই ইমনের ব্যাটে চড়েই কোয়ালিফায়ারে চিটাগাং
সুুষ্ঠু নির্বাচনে বাঁধা দিলে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে: জামায়াতের নায়েবে আমির
নওগাঁয় বাড়ি ফেরার পথে সড়কে প্রাণ গেল ২ বন্ধুর
বই ছাপানোর আগে বাংলা একাডেমি পড়তে দেয়া হাস্যকর : ফারুকী    
ঈদ পর্যন্ত মাকে নিজের কাছে রাখতে চান তারেক রহমান  
মোটরসাইকেলে ওড়না পেঁচিয়ে প্রাণ গেল এক তরুনীর দুলাভাই হাসপাতালে  
বিজয়ের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা নেই, জানালো বিসিবি  
ইজতেমায় গেলেন হাসনাত আবদুল্লাহ, কুশল বিনিময় করলেন মামুনুল হক সাথে  
ট্রাম্পের প্রেয়ার ব্রেকফাস্টে যোগ দিতে কাল যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন ফখরুল-খসরু  
সাবিনা ইয়াসমীন আইসিইউতে    
ডাস্টবিনে শেখ হাসিনার ‘ঘৃণা স্তম্ভে’র ছবি, ময়লা ফেললেন প্রেসসচিব  
দেশের পুনর্গঠনে একমাত্র বিএনপি সক্ষম: তারেক রহমান  
কুমিল্লায় যুবদল নেতার মৃত্যুর ঘটনায় দ্রুত তদন্তের নির্দেশ সরকারের
যমুনার দুর্গম চরে সুবিধাবঞ্চিতদের ফ্রী স্বাস্থ্যসেবা দিচ্ছে হিউম্যান কনসার্ন
প্লে-অফে খুলনা টাইগার্স কপাল পুড়ল রাজশাহীর
অমর একুশে বইমেলার পর্দা উঠল  
সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বললেন ‘রাষ্ট্র চলছে না’