অধিনায়ক হিসেবে ক্ষমতা আছে
শিডিউল অনুযায়ী পোর্ট এলিজাবেথের টেস্ট শেষ হওয়ার কথা ছিল মঙ্গলবার (১২ এপ্রিল)। কিন্তু চতুর্থ দিন প্রথম ঘণ্টাই খেলা শেষ হয়ে যায়। তাই বাংলাদেশ দলের ফেরাটাও এগিয়ে এসেছে। টিকিট না পাওয়ায় সব ক্রিকেটার এক সঙ্গে আসতে পারেননি। অধিনায়ক মুমিনুল হকের নেতৃত্বে কয়েকজন ক্রিকেটার আজ সকালে বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছেন। বিমান বন্দরে পৌঁছার পর সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মুমিনুল।
ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ জিতলেও টেস্ট সিরিজে হয়েছে হোয়াইটওয়াশ। মুমিনুল জানান, টেস্ট সিরিজ সারা বছর খেললেও উন্নতি করার শেষ নেই। তিনি বলেন, ‘ ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে এটা অনেক ইতিবাচক ছিলো। টেস্টে যদি বলেন আমি যদি আগামী দুই বছরও খেলি, সারা বছরও খেলি টেস্টে উন্নতির শেষ নেই। টেস্ট এমন একটা খেলা ওয়ানডের মতো না, এটা পাঁচ দিনের খেলা। এ পাঁচ দিনে ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিং সব জায়গাতে ভালো করতে হবে। টেস্টে আমাদের অনেক উন্নতি করা লাগবে। এটা আমি সব সময় বলি। ম্যাচ জিতলে বলি, হারলেও বলি। আমার কাছে তাই মনে হয়।’
দুই টেস্টে বাংলাদেশ বাজেভাবে হারলেও শেখার অনেক কিছুই শেখার আছে বলে জানান অধিনায়ক। তিনি বলেন,‘ ম্যাচ হারি –জিতি প্রত্যেক সিরিজেই কিন্তু শেখার অনেক কিছুই থাকে। আপনি যদি শিক্ষা বাদ দেন তাহলে উন্নতি করতে পারবেন না। আমাদের শেখার অনেক কিছুই আছে। আমার মনে হয় ব্যাটিংয়ে স্পিন কীভাবে আপনি হ্যান্ডেল করবেন। টেস্ট ক্রিকেটে সেশনগুলোতে কীভাবে ডমিনেট করা যায়। পিছিয়ে পড়লে যেভাবে ব্যাক করে এগিয়ে যাওয়া যায়। টেস্ট বোলাররা নতুন বলে কীভাবে কোন জায়গায় বোলিং করবে। পুরোনো বলে কোথায় বোলিং করবে। শেষ সেশনে কীভাবে বোলিং করবে। শেখার আসলে অনেক কিছুই আছে। আমার কাছে মনে হয় আমাদের বাস্তবায়নটা করাটা গুরুত্বপূর্র্ণ।
শেষ ৩ টেস্টেই বাংলাদেশ হেরেছে। তাও বাজেভাবে। এটা অ্যালার্মিং কি না জানতে চাওয়া হলে মুমিনুল বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয় না। আপনাদের প্রত্যাশাটা একটু বেশি ছিল। আপনারা হয়তো অনেকে মনে করছেন আমরা একটা টেস্ট ম্যাচ জেতার পর বিশ্বের এক নম্বর দল হয়ে গেছি। এটা কিন্তু আপনাদের ভুল ধারণা। ওয়ানডেতে বাংলাদেশে অনেক স্ট্যাবল দল। টেস্টে কিন্তু আমরা ওইভাবে স্ট্যাবল না। আপনি যেটা বললেন নড়বড়ে হয়ে গেছি আসলে সেটা হয়নি। ওই যে যেটা বললাম আমরা যখন স্পিনে খেলব কোন দিকে রান করলে ভালো হবে কোন দিকে রান করলে রিস্ক থাকবে- এ জিনিসগুলো আমাদের মানিয়ে নিতে হবে।
টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশ ব্যর্থ হওয়ার পাশাপাশি অধিনায়ক হিসেবে মুমিনুলও চূড়ান্তভাবে ব্যর্থ হয়েছেন। এটা তার জন্য ‘চাপ’ কি না? জবাবে মুমিনুল বলেন, ‘রেজাল্ট না করলে বিশ্বের যেকোনো অধিনায়কের কাছেই চাপ আসবে। যদি দেখেন রুট কিন্তু এক বছরে ৬/৭ সেঞ্চুরি করেছে তারপরও কিন্তু তার কাছে চাপ আসে। ক্যাপ্টেনসি এমনটা একটা জিনিস আপনি পারফরম্যান্স না করলে চাপ আসবে। এ লেভেলে এ চাপ আপনাকে নিতে হবে। আর আমি এটা নিয়ে চিন্তিত নই। একটা দেশকে প্রতিনিধত্ব করবেন, একটা দেশের অধিনায়ক হবেন, আপনার কাছে প্রেসার আসবেই। চাপ নিতে না পারলে তো হবে না। যেটা আমি বিশ্বাস করি। আপনি বিশ্বাস করেন কি না আমি জানি না।’
প্রথম টেস্টে টস জিতে ব্যাটিং না নেওয়ায় অনেক সমালোচনা হয়েছে। বাইরে রটেছে কোচ চাইলেও দলের সিনিয়র ক্রিকেটারদের পরামর্শে মুমিনুল এ রকম সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে মুমিনুল বলেন, ‘এ জায়গায় আসার সিদ্ধান্তটা আমি নিজেই নিয়েছি। এখানে কিন্তু আপনারাও বলেন নাই বা ওয়াসিম ভাইও বলে নাই যে আসতে হবে, আমি নিজ থেকেই এসেছি। যেহেতু আমি দলের অধিনায়ক সিদ্ধান্ত আমিই নেই। কেউ আমাকে জোর করে না, ওই ক্ষমতাটুকু আমার আছে। হয়তো আমি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে প্রথমে বোলিং নিয়ে হেরেছি বলে এ কথাটা এসেছে। আপনি যদি দেখেন নিউজিল্যান্ডের উইকেটও কিন্তু ফ্ল্যাট ছিল। দ্বিতীয় টেস্টটা হয়তো চ্যালেঞ্জিং ছিল। আপনাদের মনে আছে কি না জানিনা, প্রথম যে টেস্টটা জিতলাম তখন কিন্তু টস জিতে বোলিং নিয়েই জিতেছি। সমস্যা হয়েছিল আমাদের পেসাররা যখন নতুন বলে বোলিং করেছিল প্রথম ১০ ওভারে দুইটা উইকেট বের করতে পেরেছিল কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকায় সেটা হয়নি। সে কারণে আমরা হয়তো ব্যাকফুটে চলে গেছিলাম। পাঁচ দিনের খেলায় চার দিন খুব ভালো খেলেছি, আমরা দ্বিতীয় ইনিংসে খুব বাজে খেলেছি।’
এমপি/এসএন