৪১৩ রানের টার্গেটে ধুকছে বাংলাদেশ
জিততে হলে করতে হবে আকাশ ছোঁয়া রান ৪১৩। কিন্তু বাংলাদেশের এমন নজির নেই। এমনকি বিশ্ব ক্রিকেটেও নজির আছে হাতে গুনা। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড ২১৫। ২০০৯ সালে উইন্ডিজের বিপক্ষে গ্রানাডায়। তাই দক্ষিণ আফ্রিকার ছুড়ে দেওয়া চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের পক্ষে গ্রহণ করা কঠিন। হারটা বলা যায় এক প্রকার নিশ্চিত। যেভাবে স্পিনাররা সুবিধা পাচ্ছেন, তাতে করে দক্ষিণ আফ্রিকার দুই স্পিনার কেশভ মহারাজ ও সাইমন হার্মারকে মোকাবিলা করা কঠিনই হবে। কারণ দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের সময় বাংলাদেশের দুই স্পিনার তাইজুল ও মিরাজও একইভাবে বল ঘুরিয়ে তাদের পতন হওয়া ৬ উইকেটের ৫টিই ভাগাভাগি করে নিয়েছিলেন। তাই সেখানে দেখার বিষয় বাংলাদেশ নিজেদের হারের ব্যবধান কতটা কমিয়ে নিয়ে আসতে পারে? কিন্তু এখানে বাংলাদেশ শুরুতেই চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা ৬ উইকেটে ১৭৬ রান ইনিংস ঘোষণার পর দিনের বাকি সময় খেলতে নেমে বাংলাদেশ মাত্র ৯ ওভার ১ বল খেলে উইকেট হারিয়েছে ৩টি। রান জমা করতে পেরেছে মাত্র ২৭। জয়ের জন্য প্রয়োজন ৩৮৬ রানের! কাপ্তান মুমিনুল ৫ রান নিয়ে নতুন ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে নামবেন সংগ্রামে।
ডারবান টেস্টে বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসের মতো এই টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসেও এলগার দুই স্পিনার মহারাজ ও হার্মারকে দিয়ে আক্রমণ শুরু করান। আর এখানে তিনি দারুণভাবে সফল হন। মহরাজ ২টি ও হার্মার ১টি উইকেট তুলে নেন। শুরুটা করেন মহারাজ। মাহমুদুল হাসান জয়কে ‘পেয়ার’ উপহার দেন মহারাজ। প্রথম ইনিংসে ৩ বল খেলে জয় কোনো রান না করে আউট হয়েছিলেন। এবার প্রথম বলেই। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ওপেনার হিসেবে তিনি উভয় ইনিংসে শূন্য রানে আউট হন। তার আগে এভাবে আউট হয়েছিলেন জাভেদ ওমর বেলিম গুল্লু। ২০০৮ সালে ভারতের বিপক্ষে মিরপুরে জাভেদ আউট হয়েছিলেন দুইবারই প্রথম বলে। এরপর ৭ রানে শান্তকে ফেলেন এলবিডব্লিউর ফাঁদে। তিনি করেন ৭ রান। নাইটওয়াচ ম্যাচ না পাঠিয়ে কাপ্তান মুমিনুল নিজেই নামেন ব্যাটিংয়ে। কিন্তু তিনি টিকে গেলেও তামিম ইকবাল পারেননি। হার্মারের বল রক্ষণাত্বক খেলতে গিয়ে ব্যাটের কোণায় লেগে অনেক উপরে ক্যাচ উঠে যায়। সহজেই সেই বল তালুবন্দি করেন মুল্ডার। তামিমের নামের পাশে তখন রান ১৩। এরপরই আম্পায়ার দিনের খেলা শেষ করে দেন।
এর আগে বাংলাদেশকে ২১৭ রানে অলআউট করে দক্ষিণ আফ্রিকা এগিয়ে থাকে ২৩৬ রানে। বাংলাদেশ পড়েছিল ফলোঅনে। কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকা বাংলাদেশকে ফলোঅনে না করিয়ে নিজেরাই ব্যাটিং করতে নেমে দ্রুত রান তুলতে থাকে। সেই সঙ্গে পড়তে থাকে উইকেটও। মূলত উইকেট প্রাপ্তিতে এগিয়ে থাকেন দুই স্পিনার তাইজুল ও মিরাজ। দুই জনে নেন ৫টি। তাইজুল ৩টি, মিরাজ ২টি। অপর উইকেটটি ছিল পেসার খালেদের।
দক্ষিণ আফ্রিকার উদ্বোধনী জুটিতে এলগার ও এরইউ ৬০ রান এনে দেন। এরপর তাইজুল আঘাত হেনে আগের তিন ইনিংসে ফিফটি হাঁকানো এরগারকে বোল্ড করেন ২৬ রানে। কিগার পিটারসেনও বেশি সময় টিকতে পারেননি। তাইজুলের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন। এরপর আঘাত হানেন খালেদ, ওপেনার এরউইকে ৪১ রানে আউট করে। তখন স্বাগতিকদের রান ছিল ৩ উইকেটে ৯০। রিকেলটনও এসে বেশি সময় টিকতে পারেননি। ১৮ রানে তাকে ফিরিয়ে দিয়ে আবারও আঘাত হানেন তাইজুল। এরপর দুই উইকেট নেন মিরাজ। ৩০ রানে বাভুমাকে ফেলেন এলবিডব্লিউর ফাঁদে। মুল্ডারকে ৬ রানে বোল্ড করার সঙ্গে সঙ্গে অধিনায়ক এলগার ইনিংস ঘোষণা করেন ১৭৬ রানে। তখন ৩০ বলে ৩৯ রান করে অপরাজিত ভেরেইনা। তাইজুল ৬৭ রানে ৩টি, মিরাজ ৩৪ রানে ২টি ও খালেদ ৩৬ রানে নেন ১ উইকেট।
এমপি/টিটি