বাংলাদেশ ২১৭ রানে অলআউট, ফলোঅন করায়নি দ. আফ্রিকা
হলো না। মুশফিক ও ইয়াসির আলী ষষ্ট উইকেট জুটিতে ৭০ রান যোগ করে ফলোঅন এড়ানোর যে আশার আলো দেখিয়েছিলেন, ১৮ রানের ব্যবধানে এই দুই ব্যাটসম্যানের বিদায়ে তা ফুৎ করে নিভে গেছে। মাত্র ১ রানের ব্যবধানে শেষ ৩ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে মাত্র ২১৭ রানে। তখনো ফলোঅন থেকে বাংলাদেশ দূরে ৩৬ রানে। দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম ইনিংসে করেছিল ৪৫৩ রান। তারা এগিয়ে আছে ২৩৬ রানে। কিন্তু বাংলাদেশকে তারা ফলোঅন না করিয়ে নিজেরাই আবার ব্যাট করতে নেমেছে।
দ্বিতীয় দিন ১২২ রানে ৫ উইকটে হারানোর পর বাংলদেশ দল ব্যাকফুটেই ছিল। কোনো রকমে দ্বিতীয় দিনের বাকি সময় পার করলেও তৃতীয় দিন ছিল চিন্তার আকাশে রাজ্যের মেঘের আনাগুনা। চোখের সামনে ফলোঅনের চোখ রাঙ্গানি। বাকি ৫ উইকেট নিয়ে করতে হবে আরও ১১৫ রান। আদৌ কী সম্ভব? উইকেটে আছেন মুশফিক ৩০ ও ইয়াসির আলী ৮ রানে।
অবশেষে এই দুই ব্যাটেসম্যানের ব্যাটে ভর করেই ৭০ রানের জুটিতে বাংলাদেশ কিছুটা স্বস্তি পেয়েছে। যদিও লাঞ্চের কিছুক্ষণ আগেই দুই ব্যাটসম্যনকেই হারাতে হয়েছে। মুশফিক ৫১ ও ইয়াসির ৪৬ রানে আউট হন। বাংলাদেশের সংগ্রহ ৭ উইকেটে ২১০। মিরাজ ৯ ও তাইজুল ০ রান নিয়ে আবার ব্যাট করতে নামবেন। এই সেশনে বাংলাদেশ সংগ্রহ করে ২ উইকেটে ৭১ রান। ফলোঅন এড়াতে হলে করতে হবে আরও ৪৩ রান। হাতে আছে ৩ উইকেট।
দ্বিতীয় দিন দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৪৫৩ রানে আটকে রাখার পর বাংলাদেশ ব্যাট করতে নেমে মোটেই ভালো করতে পারেনি। ৫ উইকেটে ১৩৯ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করেছিল। এমতাবস্থায় বাংলাদেশ আর কতোদূরই বা যাবে। লাঞ্চের আগেই কী অলআউট হয়ে যাবে? একটা বিশাল শঙ্কা কাজ করছিল সবার মধ্যে। কিন্তু সব শঙ্কা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দেন মুশফিক ও ইয়াসির। বিশেষ করে ইয়াসির। দিনের শুরু থেকেই তিনি আগ্রসী ব্যাটিং শুরু করে প্রোটিয়া বোলারদের উপর পাল্টা চাপ তৈরি করেন। প্রথম তিন বলেই চার হাঁকান। তার এই ধারা অব্যাহত থাকে। যে কারণে জুটিতে যে ৫০ রান আসে তাতে ইয়াসিরেরই অবদান ছিল ৩৫ রানের। জুটিতে ৫০ রান আসার পর তারা ছুটে চলেন সামনের দিকে। লক্ষ্য শতরানের জুটি গড়া আর দলকে ফলোঅন থেকে বাঁচানো। কিন্তু জুটিতে ৭০ রান আসার পর ইয়াসির আলী আউট হলে ভেঙে যায় জুটি। কেশভ মহারাজের বল ফ্লিক করতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় করে ফেলেন। ফলে ক্যাচ উঠে যায়। আর তা জমা পড়ে মহারাজের হাতেই। তিনি তখন হাফ সেঞ্চুরি থেকে ৪ রান দূরে। দুই জনে যেভাবে খেলছিলেন তাতে মনে হচ্ছিল নিরাপদেই বাংলাদেশ যাবে লাঞ্চে। কিন্তু ইয়াসিরের বিদায়ের পর মুশফিকুর রহিমও ফিরে যান দ্রুতই। ১৩৪ বলের ধৈর্য্যশীল ইনিংস খেলে ২৫তম হাফ সেঞ্চুরি করার পরপরই তিনি আউট হয়ে যান ৫১ রানে হার্মারের বলে বোল্ড হয়ে। তার ইনিংসে ছিল ৮টি বাউন্ডারি।
মুশফিক আউট হওয়ার পর একামাত্র মিরাজ ছাড়া আর কোনো প্রতিষ্ঠিত ব্যাটসম্যান ছিলেন না। তাইজুল অবশ্য উইকেটে টিকে থাকতে পারেন। কিন্তু তারপরও বাংলাদেশের ফলোঅন নিয়ে বড় ধরনের একটা শঙ্কা থেকেই যায়। সেই শঙ্কাকে বাতস্তবে পরিণত করতে মোটেই হার্মার এবং মিরাজকে মাহরাজ আউট করেন অলিভার ক্যাচ ধরলে।
এমপি/আরএ/