দক্ষিণ আফ্রিকায় অতীত ইতিহাসের পরিবর্তন চান তামিম
ছবি: ক্রিকইনফো
চার বছর পর আবারও দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে বাংলাদেশ। আগামীকাল শুক্রবার (১৮ মার্চ) সেঞ্চুরিয়ানে দিবা-রাত্রির ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে শুরু হবে সিরিজ। খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বিকাল ৫টায়। নিউজিল্যান্ডর মতো দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতেও বাংলাদেশের তিন ফরম্যাটে নেই কোনো জয়। এবার সেখানে পরিবর্তন আনতে চান ওয়ানডে কাপ্তান তামিম ইকবাল।
এই পরিবর্তনের জন্য তিনি চান শুরুটা ভালো করতে। বৃহস্পতিবার সেঞ্চুরিয়ানে ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান এ কথা। সংবাদ সম্মেলনে তার বলা কথা ঢাকাপ্রকাশের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো।
প্রশ্ন: দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশ খুব বেশি ওয়ানডে ম্যাচ খেলেনি। মাত্র ৯টি। সব কটিতেই হার। শুক্রবার (১৮ মার্চ) শুরু হচ্ছে ওয়ানডে সিরিজ। শুরুটা নিয়ে কী ভাবছেন?
তামিম ইকবাল: নরমালি এখানে ওয়ানডে খেলার খুব বেশি অভিজ্ঞতা নেই যেমনটা আপনি বললেন। এখানে খেলাটা তাই বেশ চ্যালেঞ্জিং হবে সত্যি। এই একটা মাঠ যেটাতে আমি পরিসংখ্যানের হিসাবে যাই তো দেখতে পাব যে এখানে খুব রান হয়। কারণ মাঠের সাইজ একটু ছোট ও আউটফিল্ড খুব ফাস্ট। পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে বলতেই হবে এটা রানের মাঠ। পাশাপাশি আমাকে এটাও স্বীকার করতে হবে যে যতই পরিসংখ্যান দেখিনা কেন, আমাদের মাঠে ভাল করতে হবে। আমরা এই চ্যালেঞ্জের অপেক্ষায় আছি। ওরা আমাদের ওপর শক্তভাবে ঝাঁপিয়ে পড়বে কোনো সন্দেহ নেই। তো এই দিকটায় আমাদের ভালভাবে হ্যান্ডেল করতে হবে। সম্প্রতি আমরা ওদের সঙ্গে ভাল খেলেছি যেমন বিশ্বকাপে। আর আমি বিশ্বাস করি যে এখানে ভাল করতে না পারার কোনো কারণ নেই। তবে আমি যত কিছুই বলি না কেন দেখতে হবে কাল আমরা শুরুটা কেমন করি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হবে কালকের শুরুটা ।
প্রশ্ন: দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে বাংলাদেশের কোনো ফেরম্যাটেই জয় নেই। এখানে কী নিউজিল্যান্ডের মতো পরিবর্তন আনা সম্ভব?
তামিম ইকবাল: আমরা জানি দক্ষিণ আফ্রিকা সবসময়ই আমাদের জন্য কঠিন সফর হয়। আমরা চাই এই ব্যাপারটা পরিবর্তন করতে। এর জন্য যেটা করতে হবে, আমাদের কঠিন চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে এবং সাহসী হতে হবে।
প্রশ্ন: এবারের সফরে দক্ষিণ আফ্রিকার কন্ডিশন কতোটুকু চ্যালেঞ্জিং হতে পারে?
তামিম ইকবাল: আমরা প্রায় তিন-চারটা অনুশীলন সেশন করেছি। এর মধ্যে আমরা যতটা পারি কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করেছি। কিন্তু একটা বিষয় চিন্তা করতে হবে যে, এই কন্ডিশনে আমরা সবসময় খেলি না। একদিক থেকে ভালো যে আমরা সেন্টার উইকেটে অনুশীলন করতে পারছি। যা অনুশীলন ম্যাচ খেলার মতোই। তো যতটুক আমরা পারছি মানিয়ে নিতে চেষ্টা করছি। যেমনটা আমি বললাম আমরা কয়েকটা অনুশীলন সেশনে কন্ডিশনের সঙ্গে পুরোপুরি মানিয়ে নিতে পারব না। বিষয়টা হল মানসিকতার ওপর। মানসিকভাবে যতটুকু তৈরি থাকবেন লড়াইয়ের জন্য এটা কাজে দেবে বেশি। কারণ আপনি সারাবছর এক ধরনের উইকেটে খেলেন। এখানে চার-পাঁচ দিন আগে এসে নিজেকে প্রস্তুত করছেন, ওভারঅল আপনি যত তাড়াতাড়ি তৈরি হবেন সেটাই কাজে দেবে।
প্রশ্ন: সাকিব দলে যোগ দিলেও বিসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল এক/দুইটা ম্যাচে তাকে প্রয়োজনে বিশ্রাম দেওয়া হতে পারে। এ ব্যাপারে আপনি কী বলবেন?
তামিম ইকবাল: আমার কাছে এমন কোনো বার্তা নেই, যেটাতে আমাকে বলা হয়েছে যে সাকিবকে এক-দুইটা ম্যাচ বিশ্রাম দিতে হবে। আমি জানি এখানে সব ম্যাচের জন্যই সে দলের সঙ্গে খেলতে এসেছে। তার সঙ্গে আমার স্বাভাবিক ক্রিকেট নিয়েই আলাপ হয়েছে। সাকিব কালকের ম্যাচটি খেলার অপেক্ষায় আছে, ভাল করতে চায়। এছাড়া সত্যি বলতে অন্য কোনো বার্তা আমার কাছে নেই।
প্রশ্ন: দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে এসে অ্যালেন ডোনাল্ড ও অ্যালভি মর্কেলের মতো সাবেক ক্রিকেটারদের কোচ হিসেবে পাওয়াটাকে কিভাবে দেখছেন?
তামিম ইকবাল: আমাদের সঙ্গে ডোনাল্ড নতুন জয়েন করেছেন। অ্যালবি মরকেল গত দুদিন ধরে অনুশীলনে আছেন। তো চেষ্টা করছি সবাই সবার মতো করে তাদের কাছ থেকে যতটুকু সম্ভব নেওয়ার। মাঠের ব্যাপারে মানে চেজ করলে ভালো না ব্যাটিং করলে ভালো? এছাড়া বিপক্ষের ক্রিকেটারদের ব্যাপারেও জানার চেষ্টা করছি। আর ওনারা বেশ সহযোগিতাও করছেন। আমি সবসময়ই একটা কথা বলি এসব কিছু যতই থাকুক, মাঠের বিষয়টাই দিন শেষে গুরুত্বপূর্ণ। আপনি খেলার আগে অনেক তথ্য পেতে পারেন, কিন্তু মাঠে গিয়ে কীভাবে চাপটা নিচ্ছেন বা মানিয়ে নিচ্ছেন, কীভাবে পরিকল্পনাগুলোকে সফল করছেন সেটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
এমপি/আরএ/