হবিগঞ্জে পুলিশ-শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে নিহত ১, আ.লীগ কার্যালয়ে আগুন
হবিগঞ্জে পুলিশ-শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত
হবিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে ছাত্র-জনতার মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে একজন নিহত হয়েছেন। নিহত ওই ব্যক্তির নাম মোস্তাক মিয়া (২৪)। তিনি পেশায় একজন শ্রমিক। শুক্রবার (২ আগস্ট) বিকেলে হবিগঞ্জ শহরে এ ঘটনা ঘটে।
হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মঈন উদ্দীন চৌধুরী মোস্তাক মিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মোস্তাকের হাতে বড় ধরনের আঘাত ছিল। সেটা গুলি কি না, পরে জানানো যাবে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন।
মোস্তাকের সঙ্গে কাজ করেন মারুফ হোসেন। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, মোস্তাক এখানে জুতা কিনতে এসেছিল। এসে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যায়। গুলিতে তার মৃত্যু হয়েছে।
জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘোষিত ‘প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল’এর অংশ হিসেবে জুমার নামাজের পর হবিগঞ্জে শহরের বোর্ড মসজিদের সামনে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, হবিগঞ্জ শহরের বোর্ড মসজিদ এলাকায় শিক্ষার্থীরা অবস্থান নিলে পূর্ব টাউন হল এলাকায় অবস্থান নেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মিছিলে যোগ দিয়ে সংহতি প্রকাশ করেন জেলা ছাত্রদল ও অন্য দলের নেতাকর্মীরা। এরপর মিছিল নিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে টাউন হল এলাকায় শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ বাধে। একপর্যায়ে সেখানে থাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আগুন দেন আন্দোলনকারীরা।
এ ছাড়া তারা স্থানীয় সংসদ সদস্য আবু জাহিরের বাসায় ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। এ সময় তার বাসার সামনে থাকা ১০টি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয়। পরে পুলিশ সেখানে পৌঁছালে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তাদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ সহস্রাধিক রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। আহতদের হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোস্তাক মিয়ার মৃত্যু হয়।
এ ব্যাপারে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. খলিলুর রহমান জানান, ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে বিএনপি, যুবদল-ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা প্রবেশ করে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে সংঘর্ষ বাধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করা হয়েছে।