সিলেটে বিপৎসীমার ওপরে ৫ নদীর পানি, তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট-বাড়িঘর
সিলেটে বিপৎসীমার ওপরে ৫ নদীর পানি, তলিয়ে গেছে রাস্তাঘাট-বাড়িঘর। ছবি: সংগৃহীত
কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি এবং উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিলেটের গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলায় আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। এতে প্লাবিত হয়েছে ওই ৪ উপজেলার বেশিরভাগ নিম্নাঞ্চল। তলিয়ে গেছে গ্রামীণ রাস্তাঘাট ও বাড়িঘর। এদিকে সিলেটের প্রধান ৫ নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে থাকায় বন্যাপরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) সকালে সুরমা নদী কানাইঘাটে, কুশিয়ারা অমসিদে, সারি নদী সারিঘাটে, ডাউকি জাফলংয়ে, সারিগাঙ্গ গোয়াইনঘাট বিপৎসীমার প্রায় এক মিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে দেখা গেছে। ইতোমধ্যেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র। পানিবন্দি মানুষরা বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে উঠতে শুরু করেছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং, বিছনাকান্দি, রাতারগিল, কোম্পানিগঞ্জের সাদাপাথর পর্যটন এলাকাও পানিতে তলিয়ে গেছে।
সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নের হাওর ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ ছাড়া পানিতে সালুটিকর-গোয়াইনঘাট সড়ক তলিয়ে যাওয়ার কারণে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।
এ দিকে গোয়াইনঘাট-রাধানগর-জাফলং সড়কের শিমুলতলা পয়েন্ট প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার হাওরাঞ্চলের বাড়িঘরের মানুষ এখন পানিবন্দি। এ ছাড়া উপজেলার রুস্তমপুর, লেংগুড়া, ডৌবাড়ি, নন্দীরগাঁও ইউনিয়ন, পূর্ব ও পশ্চিম আলীরগাঁও, পশ্চিম জাফলং ও মধ্য জাফলং বেশি প্লাবিত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ জানান, নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বেশ কয়েকটি পয়েন্টে নদীর পানি ইতিমধ্যে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করেছে। তবে তিনি আশা প্রকাশ করে আরও জানান, এই পানি আরেকটু বৃদ্ধি পাবে; তারপর নেমে যাবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের তথ্যমতে, বুধবার সন্ধ্যা ৬টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ১২০ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারা নদীর পানি জকিগঞ্জের অমলশীদ পয়েন্টে ১২০ সেন্টিমিটার, সারি নদীর পানি জৈন্তাপুরের সারিঘাট পয়েন্টে ৯১ সেন্টিমিটার, সারিগোয়াইন নদীর পানি গোয়াইনঘাট পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার ও ডাউকি নদীর পানি জাফলংয়ে ৪১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
এর আগে বুধবার দুপুর ১২টায় সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৮৫ সেন্টিমিটার, কুশিয়ারা নদীর পানি জকিগঞ্জের অমলশীদ পয়েন্টে ৩৭ সেন্টিমিটার, সারি নদীর পানি জৈন্তাপুরের সারিঘাট পয়েন্টে ৫৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
সিলেট আবহাওয়া অফিস বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় (মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা) পর্যন্ত সিলেটে ১৪৬ দশমিক ০১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মোহাম্মদ সজিব হোসেন বলেন, আগামী ৩ দিন সিলেটে অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।