রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

১৪ বছরে ১৪৮৬ কোটি টাকা ব্যয়েও কাটেনি সিলেটের জলাবদ্ধতা

সিলেট নগরবাসীর অন্যতম প্রধান সমস্যা জলাবদ্ধতা। অল্প বৃষ্টিতেই এই সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে। এর কারণে ময়লা-অবর্জনার স্তুপ থেকে দুর্গন্ধ ছড়ায়। বাসা-বাড়ি ও রাস্তাঘাটে যত্রতত্র ভেসে উঠে আবর্জনার স্তুপ। সামনেই বর্ষার মৌসুম। অথচ বর্ষার আগেই জলাবদ্ধতার আতঙ্কে নগরবাসী। গ্রীস্মকালীন অল্প বৃষ্টিতেও এমন রূপ এখন ভীতি চড়াচ্ছে নগরজুড়ে। প্রাপ্ত তথ্য বলছে, জলাবদ্ধতা নিরসনে গেল ১৪ বছরে ১ হাজার ৪৮৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। তবে সুফল পায়নি নগরবাসী। এর জন্য সিসিককে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন তারা। তাদের দাবি, সিসিকের সুস্পষ্ট পরিকল্পনা না থাকায় সরকারি টাকায় অপচয় আর লোটপাট হয়েছে কিন্তু জলাবদ্ধতার নিরসন হয়নি। এত টাকা খরচের পরও নগরের জলাবদ্ধতামুক্ত না হওয়ায় এসব প্রকল্পের অনিয়ম নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

নগরবিদরা বলছেন, যেকোনো নগরের অবকাঠামোগত উন্নয়নের পিছনে থাকে একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা। আর পরিকল্পনা হতে হবে সেই নগরের ভূ-প্রকৃতি, জলবায়ু, নগর জীবন ও সংস্কৃতি নির্ভর। আর নগর পরিকল্পনাবিদরা সেই কাজটিই করে থাকেন। তাদের সুপারিশ কিংবা পরামর্শ গ্রহণ করা হলে নগরীর জলাবদ্ধতা স্থায়ীভাবে সমাধান করা সম্ভব হতো। তবে সিসিকের প্রতি ক্ষোভ নাগরিকদের। তাদের বক্তব্য, কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নে সিসিক কখনো সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞদের পরামর্শ গ্রহণ করে না।

জলাবদ্ধতা নিরসনে যত প্রকল্প
নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে গেল ১৪ বছরে প্রকল্প হয়েছে ৪ টি। এর মধ্যে তিন প্রকল্পে সরকার বরাদ্ধ দেয় ১১ কোটি টাকা। ২০০৯ সালে এই প্রকল্পের আওতায় নগরীর ছড়াগুলো উদ্ধার কার্যক্রম চালায় সিটি করপোরেশন। এরপর ২০১৩ সালে একই লক্ষ্যে গ্রহণ করা হয় ২০ কোটি টাকার আরেকটি প্রকল্প। এরপর ২০১৬ সালে নেওয়া হয় ২৩৬ কোটি ৪০ লাখ টাকার প্রকল্প। এর মধ্যে এই ৩টি প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। তবে অভিজ্ঞরা বলছেন, সিসিকের নির্ধারিত অ্যাকশন প্ল্যান না থাকায় প্রকল্পগুলো থেকে দৃশ্যমান অগ্রগতি চোখে পরেনি। যার ফলে দুর্ভোগ আরও বেড়েছে বরং কমেনি।

সর্বশেষ ২০২০ সালের ডিসেম্বেরে জলাবদ্ধতা নিরসন, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ১ হাজার ২২৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। প্রশ্ন উঠেছে গেল একযুগ ধরে এত প্রকল্প, এত বরাদ্ধ স্বত্বেও কি পেল নগরবাসী? তারা না জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেয়েছে, না বন্যার গ্রাস থেকে মুক্তির সম্ভাবনা দেখতে পেরেছে। সব মিলিয়ে আসন্ন বর্ষার আগেই শঙ্কায় সিলেট নগরবাসী।

নগরীতে যতো নদী, খাল ও ছড়া
বাপা’র দেওয়া তথ্য মতে, সিলেট নগরীর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে সুরমা ও কুশী নদী। তাছাড়া গাভীয়ার খাল (নবাব রোড, কানিশাইল), জৈন্তার খাল ( ২৫ নং ওয়ার্ড বারখলা) রত্নারখাল ( ২৫ নং ওয়ার্ড বারখলা) ও বসুর খাল (কুয়ারপাড়) নিয়ে মোট ৪টি খাল রয়েছে । আর ছড়া রয়েছে প্রায় ২৫টি। ছড়াগুলো হলো- বারুতখানা ছড়া, জল্লার ছড়া, মির্জাজাঙ্গাল ছড়া, কেওয়া ছড়া, বৈঠা ছড়া, মালনী ছড়া (চৌকিদেখি-হাউজিং এস্টেত-মিরেরময়দান-সাগরদিঘি-বাঘবাড়ি),মংলী ছড়া (রিকাবীবাজার),মঙ্গলী ছড়া (লোহারপাড়া-দরগাগেইট),মোগলী ছড়া,মুগনী ছড়া (কাজিরবাজার), গোয়ালী ছড়া (তেররতন-উপশহর-ছড়ারপাড়), কালীবাড়ী ছড়া, হলদি ছড়া (শাপলাবাগ, ব্রাম্মণপাড়া, সাদীপুর), যুগনী ছড়া, ধোপা ছড়া, বুবি ছড়া,বাবু ছড়া (দক্ষিণ সুরমা) বলরাম ছড়া (জিন্দাবাজার-জামতলা-তালতলা)।

সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, সিলেট নগরীর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ছোট-বড় প্রায় ২৫টি ছড়া। তবে দখল-দূষণে এখন অনেক স্থানে ছড়ার অস্তিত্বই হারিয়ে গেছে। নগরের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া ১৩টি বড় ছড়ার দৈর্ঘ্য প্রায় ৭৩ কিলোমিটার। দীর্ঘদিন ধরে এসব ছড়ার দুই পাশ দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করেছেন অবৈধ দখলদাররা। এই ছড়াগুলো উদ্ধারে এই ৩টি প্রকল্পে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪০০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে সিলেট সিটি করপোরেশন । সর্বশেষ ২০১৬ সালে ছড়া-খাল দখলমুক্ত করতে ২৩৬.৪০ কোটি টাকার বৃহৎ একটি প্রকল্প নেওয়া হয়। তবে এসব বৃহৎ প্রকল্পের পরও ছড়া দখলমুক্ত করা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

যে কারণে জলাবদ্ধতা
প্রথমত, সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে ছড়া-খাল দখলদারদের একটি তালিকা করা হয় ২০১৬ সালে। এতে ২৬৮ জনকে দখলদার হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। দখলদারদের বেশিরভাগই প্রভাবশালী। এ ছাড়াও কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। ছড়া-খাল দখল করে এরা গড়ে তুলেছেন বহুতল ভবন। অনেকে পরিবর্তন করে ফেলেছেন ছড়ার গতি। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে পানি নিষ্কাশনের পথ। এতে বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এ ছাড়াও এই সময়ে নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে আরও কয়েকটি ছোট ছোট প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়। তবে এত প্রকল্প, এত অর্থব্যয় সত্বেও প্রভাবশালী দখলদারদের উচ্ছেদ করতে না পারায় এসব প্রকল্পে তেমন সাফল্য আসেনি। মুক্তি মেলেনি জলাবদ্ধতা থেকে।

দ্বিতীয়ত, পানির অবাধ প্রবাহ রক্ষায় ছড়া-খালকে অবৈধ দখলবাজদের কবল থেকে রক্ষা করতে হবে। প্রাকৃতিক ছড়ার বৈশিষ্ট্য নষ্ট করে দুই পাশে গার্ডওয়াল নির্মাণ করে পাহাড় থেকে নেমে আসা ‘ছড়া’ নামের পানির এই প্রবাহকে ড্রেনে রূপান্তরিত বন্ধ করতে হবে। এতে ছড়াগুলো তাদের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য হারায়। ঢাকা ব্যতীত বাংলাদেশের আর কোনো বিভাগীয় শহরে সিলেটের মতো এতগুলো প্রাকৃতিক ছড়া বা খাল নেই। প্রতিটি ছড়ার ছিল নিজস্ব বাস্তুতন্ত্র। বিভিন্ন পণ্য প্রাণী ও জলজ প্রাণের উপস্থিতি ছিল এই ছড়াগুলোতে। গার্ডওয়ালের জন্য ছড়ার এই বৈশিষ্ট্য নষ্ট হয়ে গেছে। তা ছাড়াও পয়: নিষ্কাশনের পানি ও নাগরিক বর্জ্য ছড়া বা খালে নিক্ষেপ অব্যাহত আছে। এর কারণ যে পরিমাণ অর্থ দখল-দূষণ থেকে বাঁচানোর জন্য ছড়ার পেছনে ব্যয় হয়েছে এর সামান্য অংশ দূষণবিরোধী সচেতনতামূলক কার্যক্রমে ব্যয় করা হয়নি। দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে একটি বড় অংকের অর্থ বরাদ্দ রাখাও প্রাসঙ্গিক।

যেভাবে করতে হবে সমাধান
ভূ-প্রকৃতিগত বা অবস্থানগত কারণে যেমন সব নগর সমান নয়, একইভাবে সব নগরের জীবনধারণ প্রণালীও এক নয়। যেমন সিলেট অঞ্চল অনেকটা সমতল ও পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত। এর আশেপাশে প্রচুর টিলা এবং চা বাগান রয়েছে। ফলে বর্ষাকালে নেমে আসা ঢল সেগুলো শহরের বিভিন্ন ছড়া, নালা ও খাল দিয়ে প্রবাহিত হয়। এই পানির অবাধ প্রবাহ রক্ষায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা এমন হতে হবে যেন সবটুকু পানি গিয়ে মিলিত হয় নদীর সাথে। কিন্তু সিলেটের ক্ষেত্রে সেটি হচ্ছে না। এর ফলে অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার কবলে পরে সিলেট। একই সাথে ড্রেনগুলোতে ঢাকনা না থাকায় কিছু সংখ্যক মানুষ ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য খোলা ড্রেনগুলোকে ব্যবহার করেন। সুরমা নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। এর কারণে নগরের পানি নিষ্কাশন হতে পারে না। নগরকে জলাবদ্ধতামুক্ত করতে হলে সুরমা নদী খনন করতে হবে। তা না হলে কেবল ছড়া উদ্ধার করে কোনো সুফল মিলবে না।

এ ছাড়াও ময়লা-আবর্জনা ফেলার জন্য যত সম্ভব নগরীতে বাস্কেট ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। মাইকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে বাড়াতে হবে সচেতনতা। তদারকি টিম গঠন করে মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। একই সঙ্গে ধর্ম প্রচারকদের ব্যবহার করে নোঙড়া আবর্জনার কুফল সম্পর্কে সম্যক ধারণা প্রদানসহ ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সম্পৃক্ত করতে হবে।

যা বলছে সিসিক
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান বলেন, নগরীতে আগের মতো আর জলাবদ্ধতা হয় না। অধিক বৃষ্টিতে নগরীর কিছু এলাকায় পানি জমলেও অল্প সময়ের মধ্যে তা নেমে যায়।

তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে আমরা দখলদারদের উচ্ছেদ করার পর ফের ছড়া দখল হয়ে যায়। এ ছাড়াও ময়লা-আবর্জনা ফেলেও ছড়ার পানি নিষ্কাশনে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা হয়। এজন্য সমন্বিত উদ্যোগ দরকার। এটা কোনোভাবেই সিটি করপোরেশনের একার পক্ষে সম্ভব নয়।

অভিজ্ঞজনদের মতামত
সিলেট নগরের উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও পুর প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. জহির বিন আলম বলেন, সুরমা নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। এর কারণে নগরের পানি নিষ্কাশন হতে পারে না। নগরকে জলাবদ্ধতামুক্ত করতে হলে সুরমা নদী খনন করতে হবে। তা না হলে কেবল ছড়া উদ্ধার করে কোন সুফল মিলবে না।

শিক্ষাবিদ মো. তাজুল ইসলাম বলেন, নাগরিক সেবা সুনিশ্চিত করার জন্য সুপরিকল্পিত নগরায়নের পূর্বশর্ত। এক্ষেত্রে জরুরি, সেবা প্রদানকারী বিভিন্ন সংস্থার সমন্বিত অংশগ্রহণ ও সময়ের প্রয়োজনে একই ছাতার নিচে নিয়ে আসা। গুরুত্ব বিবেচনায় সময়ানুগ প্রকল্প গ্রহণ এবং বরাদ্দ সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন।

তিনি আরও বলেন, নদীর নাব্যতা রক্ষার জন্য নদী শাসনের পাশাপাশি ড্রেনেজ সিস্টেমের আধুনিকিকরণ। সর্বোপরি বিশেষজ্ঞ নগরবিদদের মতামতকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়ার মধ্য দিয়ে সরকারি অর্থের যথাযথ ব্যবহারে নাগরিক জীবনে সেবা নিশ্চিত করা যাবে বলে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি।

সিলেটের নাগরিক আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সিলেট শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম বলেন, সিলেট নগরীর ছড়া বা খাল দখলদারদের থেকে উদ্ধার ও সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন মেয়াদে সরকারের কাছ থেকে বিরাট অংকের অর্থ বরাদ্দ পেয়েছে সিলেট সিটি করপোরেশন। কিন্তু দখলদারদের থেকে এখনও মুক্ত হয়নি অনেক ছড়া। উপরন্তু ছড়া রক্ষা করতে যেয়ে প্রাকৃতিক ছড়ার বৈশিষ্ট্য নষ্ট করে দুই পাশে গার্ডওয়াল নির্মাণ করে পাহাড় থেকে নেমে আসা 'ছড়া' নামের পানির এই প্রবাহকে ড্রেনে রূপান্তরিত করা হয়েছে। এর ফলে ছড়াগুলো তাদের প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য হারিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এই অপকর্মের জন্য এককভাবে সিটি করপোরেশনকে দায়ী করা ঠিক হবে না। এর দায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপরেই বর্তায়।

বাপার এই নেতা বলেন, যে পরিমাণ সরকারি অর্থ দখল-দূষণ থেকে বাঁচানোর জন্য ছড়ার পেছনে ব্যয় হয়েছে এর সামান্য অংশ দূষণবিরোধী সচেতনতামূলক কার্যক্রমে ব্যয় করা হয়নি। উচিত ছিল দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে একটি বড় অংকের অর্থ বরাদ্দ রাখা। তা করা হয়নি। তাই সামগ্রিকভাবে বলতে হবে, সিলেট নগরীর ছড়া বা খাল দখল ও দূষণমুক্ত করতে সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় হয়েছে ঠিকই কিন্তু সেই ব্যয় রয়েছে দূরদর্শিতার অভাব। সেই ব্যয় কোনোভাবেই প্রকৃতি বান্ধব নয়।

এসআইএইচ

 

Header Ad

বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন ব্রিটিশ রাজা চার্লস

ফাইল ছবি

বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস। সরকারি সফরের অংশ হিসেবে ভারতীয় উপমহাদেশে আসার পরিকল্পনা করছেন তিনি। চলতি বছরের শুরুর দিকে শরীরে ক্যানসার শনাক্ত হওয়ার পর বিদেশ সফর থেকে বিরত রয়েছেন ব্রিটিশ এই রাজা। তবে কিছু দিনের মধ্যে তিনি বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তান সফর করতে পারেন বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিররের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

শুক্রবার প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় চার্লস ও তার স্ত্রী রানি ক্যামিলা অদূর ভবিষ্যতে ভারতীয় উপমহাদেশ সফরের পরিকল্পনা করছেন। রাজা তৃতীয় চার্লস ক্যানসার থেকে ধীরে ধীরে সেরে ওঠায় শিগগিরই এই সফরে বের হতে পারেন। ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটেনের রাজার সফরের পরিকল্পনাকে তার শারীরিক অবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নতির লক্ষণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

ঠিক কবে নাগাদ ব্রিটিশ রাজা ও রানির এই সফর শুরু হতে পারেন, সেই বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনও তথ্য জানায়নি ডেইলি মিরর।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর তৃতীয় চার্লস সব ধরনের সফর বাতিল করতে বাধ্য হন। তবে ভারতীয় উপমহাদেশের তিন দেশ—বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তান সফরের এই পরিকল্পনার মাধ্যমে পুনরায় তার সফর শুরু হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ব্রেক্সিট পরবর্তী বিশ্বে তাৎপর্যপূর্ণ অর্থনৈতিক সংযোগ প্রতিষ্ঠা করতে চায় ব্রিটেন। এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্রিটিশ রাজা ও রানির সফর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

দেশটির একটি সূত্র বলেছে, ‘‘রাজা এবং রানির জন্য এই ধরনের সফরের পরিকল্পনা করাটা অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক। ভারতীয় উপমহাদেশে তাদের একটি সফর শুরুর কথা রয়েছে; যা বিশ্ব মঞ্চে ব্রিটেনের জন্য রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক দিক থেকে ব্যাপক তাৎপর্যপূর্ণ হবে। এই সময়ে ব্রিটেনের জন্য রাজা এবং রানিই জুতসই রাষ্ট্রদূত।’’

ডেইল মিরর বলছে, রাজ সফরের জন্য সম্ভাব্য আয়োজক দেশগুলোর সাথে আলোচনার করতে ব্রিটেনের পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ, ভারত এবং পাকিস্তান সফরের খসড়া তৈরি করা হচ্ছে। গত বছর ভারত সফর বাতিল করার পর রাজা ও রানিকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে দেশটিতে ব্রিটিশ রাজা ও রানির সফর নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। গত মাসে ব্রিকসের শীর্ষ সম্মেলনে সাক্ষাৎ করেছিলেন এই দুই রাষ্ট্রনেতা। এছাড়া গত মঙ্গলবার ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার ‘‘কৌশলগত অংশীদারত্বে’’ স্বাগত জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। যদিও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইউক্রেন যুদ্ধ ‘‘শান্তিপূর্ণভাবে শেষ’’ হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছিলেন।

২০০৬ সালে ক্যামিলাকে সঙ্গে নিয়ে ওয়েলসের যুবরাজ হিসেবে এক সপ্তাহের জন্য পাকিস্তান সফর করেছিলেন চার্লস। সেই সময় শুভাকাঙ্ক্ষীদের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আপনাদের কাছে পৌঁছাতে আমার প্রায় ৫৮ বছর লেগেছে। তবে এটা যে চেষ্টা করার অভাবে নয়, তা আমি বলতে পারি।’’

Header Ad

নির্বাচনের ফাঁকা মাঠ ভেবে খুশি হচ্ছেন, সাবধান হন : তারেক রহমান

ছবি: সংগৃহীত

যেসব নেতাকর্মী সামনে নির্বাচনের ফাঁকা মাঠ ভেবে খুশি হচ্ছেন। তারা সাবধান হন। সামনে ভয়ংকর অন্ধকার দেয়াল আছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেল পাঁচটায় রাজশাহী জেলা পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠানটি ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপি নেতাকর্মীদের নামে মামলার বিষয়ে আইনজীবীর প্রশ্নের উত্তরে তারেক রহমান বলেন, স্বৈরাচার পড়ে গেছে, পালিয়ে গেছে। তারা তো বসে নাই, তারা ষড়যন্ত্র করছে। যদি তাদের ষড়যন্ত্র সফল হয়- মামলা তো উঠবেই না বরং নেতাকর্মীদের নামে জ্যামিতিক হারে ২০টা মামলা হয়ে যাবে। সেই সম্ভাবনাও আছে। সেই সম্ভাবনাকে যদি নস্যাৎ করে দিতে হয়, তাহলে আজকে থেকে আপনাদের প্রত্যেকেই সতর্ক হতে হবে।

তিনি বলেন, আপনাদের একটাই টার্গেট হতে হবে। জনগণ, জনগণ অ্যান্ড জনগণ। এর বাইরে যদি কিছু চিন্তা করেন। তাহলে পতিত স্বৈরাচার সফল হবে। তারা সফল হলে আইনজীবী সহকর্মীর বক্তব্য অনুযায়ী মামলা আপনাদের মিটবে না। বরং মাথার ওপরে আরও ১০টি, ২০টি মামলা চেপে বসবে। আপনাদের নিজেকে যদি বাঁচাতে হয় তাহলে উপায় একটাই- জনগণের আস্থা অর্জন করেন। আপনার পরিবার-পরিজনকে রক্ষা করতে হলে উপায় একটাই জনগণের আস্থা আর্জন করেন।

তিনি বলেন, ফারাক্কা বাঁধের বিষয়ে আমাদের একটি ধারণা আছে। এটি একটি আন্তর্জাতিক বিষয়। বিএনপির বাইরে অন্য সরকার যখন ক্ষমতায় এসেছে, তারা যথাযথভাবে এটা দেখেনি। পতিত স্বৈরাচার সরকার প্রতিবেশী দেশকে খুশি করার জন্য ইচ্ছা করেই করেনি। আমরা সময়মতো অবশ্যই বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কাজ করবো। আমাদের ন্যায্য হিস্যা আদায়ের জন্য প্রয়োজনে দেশের স্বার্থে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের নিয়েই কাজ করবো।

তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে পাঁচ বছরে পাঁচ কোটি বৃক্ষরোপণের ইচ্ছে আছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সমুদ্রের পানি বাড়ছে। গবেষণায় উঠে আসছে বাংলাদেশের অনেকাংশ, অর্ধেক বা তার কম অংশ ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। এই দেশের মানুষকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। খালেদা জিয়া সরকারের সময় আমরা বৃক্ষমেলা করতাম। আমাদের যেভাবেই হোক, এই কর্মসূচি আবার শুরু করতে হবে। সবাইকে উৎসাহ দিতে হবে বৃক্ষরোপণের জন্য। গাছ প্রকৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ব্যক্তিগতভাবে আমার একটা পরিকল্পনা আছে। আগামী দিনে আমরা সুযোগ পেলে পাঁচ বছরে আমরা পাঁচ কোটি বৃক্ষরোপণ করব।

এর আগে সকাল ১০টায় প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু হয়। এসময় বক্তব্য দেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ, চেয়ারপারসনের বিদেশ বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য ড. মাহাদী আমিন।

কর্মশালায় আলোচনা করেন, বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রাশিদা বেগম হীরা ও কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদা হাবিব। সভাপতিত্ব করেন, বিএনপির রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহীন শওকত।

বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক কমিটির সদস্য সচিব এবিএম মোশাররফ হোসেনের সঞ্চালনায় কর্মশালায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- কেন্দ্রীয় নেতা ওবায়দুর রহমান চন্দন, আমিরুল ইসলাম আলীম প্রমুখ।

Header Ad

গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল

ছবি: সংগৃহীত

একইসঙ্গে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করছেন জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক নারী। স্ত্রীর অধিকার থেকে বঞ্চিত করেননি দুই স্বামীর কাউকেই। গোপনে মন জয় করে চলছিলেন দুই স্বামীর। প্রায় দুই বছর দুই স্বামীর সংসার করার পর অবশেষে বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

চার বছরের প্রেমের সম্পর্কের পর ২০২২ সালের ২৭ অক্টোবর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ে হলফনামার মাধ্যমে গোপনে বিয়ে করেন রাজবাড়ী সদরের আলীপুর ইউনিয়নের ইন্দ্রনারায়ণপুর গ্রামের আবু হানিফ শেখের ছেলে ইউটিউবার সাগর শেখ ও আলীপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম ভূঁইয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস।

বাবা, মা ও ভাই প্রবাসে থাকায় বাবার বাড়িতে একাই বসবাস করতেন জান্নাতুল। সেখানে যাতায়াত করতেন স্বামী সাগর শেখ। সংসার জীবন ভালোই চলছিল এ দম্পতির। হঠাৎ জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় শ্বশুরবাড়ি যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায় সাগরের। এরই মধ্যে প্রথম বিয়ের কথা গোপন রেখে পরিবারের সিদ্ধান্তে অন্য এক যুবককে দ্বিতীয় বিয়ে করেন জান্নাতুল।

এদিকে স্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিজের বাড়িতে তুলে না নেয়ায় শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে নিয়মিত সময় কাটান জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। প্রথম স্বামী সাগরের দাবি, প্রায় দুই বছর ধরে তার সঙ্গেও স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক ঠিক রেখে চলছিলেন জান্নাতুল।

স্ত্রীর পরিবার তাকে মেনে না নেয়ায় তার বোনের বাসাসহ বিভিন্ন স্থানে একান্তে সময় কাটাতেন স্বামী-স্ত্রী। চলতি মাসের ২ নভেম্বর তারা একসঙ্গে নিজেদের দ্বিতীয় বিবাহবার্ষিকী পালন করেছেন বলেও দাবি করেন সাগর।

তবে দুই সপ্তাহ আগে স্ত্রীর সঙ্গে দ্বিতীয় স্বামীর ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে জানতে পারেন সাগর। আর এতেই বাঁধে বিপত্তি। তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন জান্নাতুল। এখন দ্বিতীয় স্বামী নিয়েই সংসার করতে আগ্রহী তিনি। বাধ্য হয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি আদালতে মামলা করেছেন সাগর।

সাগর শেখ বলেন, জান্নাতুল ও আমার বিয়ের বিষয়টি জান্নাতুলের মা ও বোন জানতো। বিয়ের পর আমাদের সংসার জীবন ভালোই কাটছিল। তবে হঠাৎ করে জান্নাতুলের বাবা প্রবাস থেকে দেশে ফেরায় তাদের বাড়িতে আমার যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। আমাদের বিয়ের চার মাসের মাথায় আমি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরির কাজে কয়েকদিনের জন্য রাজবাড়ীর বাইরে যাই।

কাজ থেকে এসে শুনি আমার স্ত্রী জান্নাতুল অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমি আমার স্ত্রীকে প্রশ্ন করলে সে বলে, ‘পরিবারের চাপে বিয়ে করেছি। ওই ছেলের সঙ্গে আমার কোন সম্পর্ক হয়নি। আমি তোমার স্ত্রী আছি, তোমারই থাকবো। আমার আম্মু দেশে আসলে আমি তোমার কাছে চলে আসবো।’

সাগর বলেন, ‘আমি জান্নাতুলদের বাড়ি যাতায়াত করতে না পারার কারণে বিভিন্ন সময় আমরা রাজবাড়ী শহরে আমার বোনের বাসায় ঘনিষ্ঠ সময় কাটাতাম। ওর কলেজে আনা-নেয়াসহ সবকিছু আমিই করতাম। এমনকি গত ২ নভেম্বরও আমরা আমার বোনের বাসায় আমাদের দ্বিতীয় বিবাহ বার্ষিকী পালন করেছি।

তবে বিবাহ বার্ষিকী পালনের দুদিন পরে আমি জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে ওই ছেলের (দ্বিতীয় স্বামীর) ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক চলছে। ওই ছেলে নিয়মিত জান্নাতুলের বাবার বাড়িতে এসে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সময় কাটাচ্ছে। এ বিষয়ে আমি জান্নাতুলকে প্রশ্ন করলে সে আমাকে গালাগালি করে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এক পর্যায়ে সে আমার সঙ্গে সংসার করবে না বলেও জানায়।’

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি জান্নাতুলের মা প্রবাস থেকে দেশে ফিরেছে। তিনিও এখন আমাকে মেয়ের জামাই হিসেবে অস্বীকার করছেন। অথচ তার মেয়ের সঙ্গে আমার প্রেম থেকে শুরু করে বিয়ে পর্যন্ত সবকিছুই তিনি জানতেন।

এখন বাধ্য হয়ে আমি আমার স্ত্রীকে ফিরে পেতে আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে গত ১১ নভেম্বর লিখিত অভিযোগ করেছি। এছাড়া ১৭ নভেম্বর রাজবাড়ীর বিজ্ঞ ১নং আমলি আদালতে মামলা করেছি।’

সাগর আরও বলেন, ‘আমাকে ডিভোর্স না দিয়ে আমার স্ত্রী অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে আমার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। সে আমাকেও ম্যানেজ করে চলেছে, একইভাবে তার দ্বিতীয় স্বামীকেও ম্যানেজ করে চলেছে।

এটা আইন ও ধর্মীয় দুই দিক থেকেই অপরাধ। এছাড়া আমি এ পর্যন্ত আমার স্ত্রীর পেছনে ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা ব্যয় করেছি। তারপরও আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই। তাকে আমি আমার জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসি।’

এদিকে, বিষয়টি নিয়ে ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজী হননি জান্নাতুলের দ্বিতীয় স্বামী। তবে তার দাবি, জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে তিনি জানতেন। সাগরের সঙ্গে বিয়ের বিষয়টি তিনি জানতেন না।

জান্নতুলের দ্বিতীয় স্বামীর বাবা বলেন, ‘কোন এক সূত্রে আমার শ্বশুর জান্নাতুলদের বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে তাকে পছন্দ করে। পরে আমি গিয়ে তার বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব দিলে বিয়ের দিন ধার্য হয়। বিয়ের আগের দিন সাগর নামে এক ছেলে আমার ছেলেকে ফোন করে বলে জান্নাতুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক আছে।

সে জান্নাতুলের সঙ্গে নিজের একটি ছবিও আমার ছেলেকে পাঠায়। এরপর আমি ওই এলাকায় আমার আত্মীয়দের কাছে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি জান্নাতুলের সঙ্গে সাগরের কোন সম্পর্ক ছিল না। এছাড়া জান্নাতুলকেও আমি সরাসরি প্রশ্ন করলে সেও সম্পর্কের বিষয়টি অস্বীকার করে।

পরে ঘরোয়া আয়োজনে জান্নাতুলের সঙ্গে আমার ছেলের বিয়ে হয়। এখন সাগর নামে ছেলেটি জান্নাতুলকে তার স্ত্রী হিসেবে দাবি করছে। আমি যতদূর জেনেছি সাগরের স্ত্রী ও সন্তান আছে। এখন বিষয়টি আইনগতভাবেই সমাধান হবে।

আর জান্নাতুল ফেরদৌসের সঙ্গে কথা বলতে তার বাবার বাড়িতে গেলে ভেতরে ঢোকার অনুমতি মেলেনি।’

বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখে তার মা হাচিনা বেগম বলেন, ‘সাগরের সঙ্গে আমার মেয়ের বিয়ে হয়েছিল৷ তবে বিয়ের দুই মাসের মাথায় তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। আমার মেয়ে তো ছোট বুঝে নাই, যে কারণে সেসময় ওরা ডিভোর্সের কাগজ ছিঁড়ে ফেলেছে। এর ৪/৫ মাস পরে আমার মেয়ের আবার বিয়ে হয়েছে। সাগর আমার মেয়েকে চাপে ফেলে এতোদিন তার সঙ্গে সময় কাটাতে বাধ্য করেছে।’

আলীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু বকর সিদ্দিক জানান, ‘সাগর ও জান্নাতুলের বিবাহ বিচ্ছেদ হলে তার নোটিশের একটি কপি ইউনিয়ন পরিষদে আসার কথা। এরকম কোন কপি কখনো পাননি তারা।’

তিনি বলেন, ‘সাগর আমার ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করেছে। আমিও খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি সাগর জান্নাতুলের প্রথম স্বামী। সে সাগরকে তালাক না দিয়েই বিয়ের চার মাসের মাথায় অন্য এক ছেলেকে বিয়ে করে। প্রায় দুই বছর সে চালাকি করে দুই স্বামীর সঙ্গেই সংসার করেছে। সাগরের কাছ থেকে জান্নাতুল অনেক টাকা-পয়সা খেয়েছে বলেও আমি জানতে পেরেছি।’

আবু বক্কার বলেন, ‘সাগরের অভিযোগের ভিত্তিতে আমি জান্নাতুলের বাবাকে নোটিশের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদে ডাকি। তবে নোটিশ পেয়ে তিনি তার ছোটভাই ও তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামকে সঙ্গে নিয়ে আমার বাড়িতে এসে বলেন, আমি যেন পরিষদে বসে বিষয়টি সমাধান করে দেই। তবে এর ১/২ দিন পরে তিনি জানান, এ বিষয়ে তারা বসতে চান না।

আইনগতভাবে তারা বিষয়টি সমাধান করতে চান। পরে আবার তারা বসতে সম্মত হলে জান্নাতুল ও তার বাবা এবং তাদের এলাকার ইউপি সদস্য আবুল কালামসহ পরিষদের অন্য সদস্যদের নিয়ে বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলাম। সাগরও সেখানে ছিল। তবে সেখানে জান্নাতুল বলে দিয়েছে সে কোনভাবেই সাগরের সঙ্গে ঘর সংসার করবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের পুরুষ শাসিত সমাজে নারীরা নির্যাতিত হয়। কিন্তু ছেলেরা যে কতোটুকু নির্যাতিত হয় তা এই সম্পর্কের জের দেখলে বোঝা যায়। আমাদের সমাজে ছেলেরা আরও বেশি নির্যাতিত হচ্ছে। সেটা নীরবে নিভৃতে ছেলেরা সহ্য করে যাচ্ছে। আমি আশা করবো আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা বিষয়টি তুলে ধরবেন।

আপনাদের সংবাদের মাধ্যমে মানুষ যাতে সচেতন হতে পারে। আজকে আমার ইউনিয়নে এমন ঘটনা ঘটেছে। আর কোন ইউনিয়নে যেন এমন ঘটনা কোনদিন না ঘটে।’

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন ব্রিটিশ রাজা চার্লস
নির্বাচনের ফাঁকা মাঠ ভেবে খুশি হচ্ছেন, সাবধান হন : তারেক রহমান
গোপনে দুইজনকে বিয়ে, কাউকেই অধিকার বঞ্চিত করেননি জান্নাতুল
শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ