৮ নেতায় তিন বছর পার লাখাই উপজেলা আওয়ামী লীগ
কাউন্সিলের মাধ্যমে ৮ জন নেতা নির্বাচিত হয়েছিলেন। এই ৮ নেতা দিয়েই তিন বছর পার করল লাখাই উপজেলা আওয়ামী লীগ। ৩ বছরের মেয়াদ পেরিয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়নি। এভাবে আর কত দিন চলবে, কবে হবে কিংবা আদৌও কমিটি হবে কি-না এ নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগে চলছে গুঞ্জন। তৃণমুল নেতা-কর্মীদের অভিযোগ,দলে একনায়কতন্ত্র, স্বজনপ্রীতি কারণেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি হচ্ছে না। তৃণমুল নেতা-কর্মীদের অভিযোগের অনেকটাই সত্যতা মিলে সধারণ সম্পাদকের কথায়। তিনি বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি সর্ম্পকে তিনি কিছুই জানেন না। ভালো বলতে পারবেন সভাপতি।
উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ৬ ডিসেম্বর ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি হন অ্যাডভোকেট মুশফিউল আলম আজাদ। সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সোবাহান, অ্যাডভোকেট মাহফুজ মিয়া, জুয়েল মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট খোকন চন্দ্র গোপ, রাসেল আহমেদ ও সফিকুল ইসলাম শাকিল ভোটে নির্বাচিত হন।
কাউন্সিলের পরই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সোবাহান স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আমেরিকা পাড়ি জমায়। এর ফলে ৭ নেতা দিয়েই চলছে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম। দীর্ঘদিন ধরে কমিটি না হওয়ায় পদ-প্রত্যাশীরা দলীয় কার্যক্রমে অনেকটাই নিস্ক্রিয় হয়ে পড়েছে।
তৃণমুল নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, সভাপতি আজাদের একনায়কতন্ত্র, স্বজনপ্রীতির কারণেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি হচ্ছে না দীর্ঘদিন ধরে। ফলে তারা হতাশ হয়ে পড়েছেন। পূর্ণাঙ্গ কমিটি যেদিন অনুমোদন হবে সেদিন থেকে ৩ বছরের মেয়াদ। তাই সভাপতি ইচ্ছা করে কমিটি দীর্ঘায়িত করার জন্য অনুমোদন নিচ্ছেন না।
তারা আরো বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি না হওয়ায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এর প্রভাব পড়তে পারে।
এ বিষয়ে উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি এনামুল হক মামুন বলেন, কাউন্সিলে আমি সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলাম। সামান্য ভোটে পরাজিত হয়েছি। কাকে কমিটিতে রাখা হবে,বাদ দেওয়া নিয়েই তিন বছর কেটে গেছে, যা হতাশাজনক।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আমিরুল ইসলাম আলম বলেন, কমিটি গঠনের দায়িত্ব সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের। উপজেলা সভাপতির সঙ্গে কথা হয়েছে তিনি বলেছেন-খুব শীঘ্রই কমিটি করা হবে। তিনি আরো বলেন- গত ইউনিয়ন নির্বাচনে সভাপতি চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ইচ্ছা মতো পদ দিয়ে দলীয় মনোনয়ন ফরম ফিলাপ করিয়ে ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খোকন চন্দ্র গোপ বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটি করে জেলায় জমা দেওয়া হয়েছে। আশা করি আগামী সপ্তাহে অনুমোদন দিবে।
সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ বলেন, সভাপতিই পূর্ণাঙ্গ কমিটি সর্ম্পকে ভালো বলতে পারবেন। উনার সাথে আলাপ করলে বিস্তারিত জানতে পারবেন। হয়তো কোনো কারণ আছে যার জন্য কমিটি করা যাচ্ছে না।
এসব ব্যাপারে জানতে লাখাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুশফিউল আলম আজাদের মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আলমগীর খান সাদেক বলেন, আমার কাছে লাখাই উপজেলা পূর্ণাঙ্গ কমিটির কোনো কাগজ আসে নাই। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ভালো বলতে পারেন।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলমগীর চৌধুরী বলেন, আমি ঢাকায় আছি। এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবু জাহির বলেন, যেসব উপজেলায় আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়েছে তাদেরকে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এসআইএইচ