বাচ্চাদের ঝগড়া, মুয়াজ্জিনকে পিটিয়ে হত্যা
ছোট বাচ্চাদের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে সুনামগঞ্জে মসজিদের এক মুয়াজ্জিনকে পিটিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত মুয়াজ্জিনের নাম আব্দুল হাসিম (৬৫)। তিনি জেলার তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী বড়গোফ টিলার মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে এবং বড়গোফ টিলার মসজিদের মুয়াজ্জিন। এ ঘটনায় নিহতর পুত্রবধূ জুবাইদা ও সাত বছরের নাতি শাকিব নামে আরো দুই জনকে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে রক্তাক্ত করেছে। তাদের মমুর্ষ অবস্থায় সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বুধবার রাতে উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের বড়গোফ টিলার পশ্চিম অংশের নীচে কড়ুইগড়া রাস্তার মধ্যে এই ঘটনাটি ঘটেছে। এই নিয়ে এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। তবে, পুলিশ বলছে পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে।
জানা যায়, মঙ্গলবার (২৩ আগষ্ট) বিকালে নিহত আব্দুল হাসিমের নাতি শাকিব (৭) পালিত একটি ছাগল নিয়ে পরিত্যক্ত ধান খেতে ঘাস খাওয়াতে গেলে একই গ্রামের জমির হোসেনের নাতি ও নজির হোসেনের ছেলে বাধা দেয় এবং তাকে মারপিট করে আহত করে। এই নিয়ে দুই পক্ষের লোকজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়।
এক পর্যায়ে স্থানীয় লোকজন বিষয়টি মিমাংসা করে দেওয়ার জন্য বুধবার (২৪ আগষ্ট) সকালে এক সালিশের আয়োজন করে। সালিশে নিহতর পরিবারের লোকজন উপস্থিত হলেও প্রতিপক্ষ জমির আলির লোকজন উপস্থিত হননি। পরে শালিসকারীরা চলে যান।
একই দিনের (বুধবার) সন্ধার দিকে নিহতর পুত্র বধু জুবাইদা মসজিদের টিউবওয়েল থেকে পানি নিতে গেলে জমির আলীর লোকজন তাকে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে। এ সময় তার চিৎকার শুনে নিহত আব্দুল হাসিম এগিয়ে গেলে তাকেও বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে রাস্তায় ফেলে রাখে।
পরে স্থানীয়রা আব্দুল হাসিমকে উদ্ধার করে চাঁনপুর বাজারে নিয়ে গেলে রাত ৯ টার দিকে স্থানীয় এক চিকিৎসক তাকে মৃত্যু ঘোষণা করেন। নিহতর মাথা ও শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। পরে বিষয়টি তাহিরপুর থানায় জানালে পুলিশ রাত ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে এসে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করে।
নিহতর ছেলে মাসুক মিয়া বলেন, তার ছোট ছেলে ছাগল নিয়ে খেতে গেলে তাকে প্রথমে মারধর করে। পরে পরিকল্পিতভাবে আমার বাবাকে আমাদের প্রতিপক্ষ জমির আলী, নজির হোসেন, কবির হোসেন, রাশিদ মিয়া, আল আমিন, সুহেলসহ আরও কয়েকজন সংঘবদ্ধ ভাবে বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে এবং আমার স্ত্রীকে দা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে। তিনি এই খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
তাহিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মো.আব্দুল লতিফ তরফদার বলেন, রাতেই আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সুনামগঞ্জ মর্গে পাটিয়েছি। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এএজেড