‘তেল নাই ভাই, মাফ চাই’
শুক্রবার (৫ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টা থেকে সিলেটে শুরু হয় হুলুস্থুল কান্ড! পেট্রোল পাম্পগুলোতে বাড়তে থাকে মোটরসাইকেলের ভিড়। কিন্তু শত পীড়াপিড়ীতেও মিলছে না পেট্রোল। পাম্পগুলো থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে ক্রেতাদের। কিন্তু নাছোড়বান্দা ক্রেতারা কিছুতেই পাম্প ছাড়তে চাইছেন না। পাম্পগুলো বলছে তেল নেই আর ক্রেতারা বলছেন, রাত ১২টার পর থেকে দাম বৃদ্ধি কার্যকর করার কথা থাকলেও সাড়ে ১০টা থেকে তেল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে পেট্রোল পাম্পগুলো। পাম্পে কর্মরতরা বলছেন, ‘তেল নাই ভাই, মাফ চাই’। এ ঘটনাটি ঘটেছে সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের কদমতলি এলাকার এম এস মো. সোলেমান বক্স সিএনজি ফিলিং স্টেশনে। এর মধ্যে থেকে সিলেটের অন্যান্য পাম্পগুলোও বন্ধ হচ্ছে-এমন খবর ঘটনাস্থলে আসলে বাড়তে থাকে ক্রেতাদের মধ্যে ক্ষোভ।
এর আগে রাত ১০টায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। ভোক্তা পর্যায়ে লিটার প্রতি ডিজেল ১১৪ টাকা, কেরোসিন ১১৪ টাকা, অকটেন ১৩৫ টাকা এবং পেট্রোলের দাম ১৩০ টাকা নির্ধারণ করেছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। নতুন দাম কার্যকর হচ্ছে শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে।
এদিকে জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে সিলেটের নগরীর বিভিন্ন সিএনজি ফিলিং স্টেশন ও পেট্রোল পাম্পগুলোতে ঘটছে হুলস্থুল কান্ড। প্রায় প্রত্যেকটি পাম্পে গাড়ি ও মোটরসাইকেল চালকদের প্রচন্ড ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। এই সুযোগে অধিক লাভের আশায় সিলেটের কতিপয় অসাধু জ্বালানি তেল ব্যবসায়ী সন্ধ্যা রাত থেকে পাম্পে ‘তেল নেই’ বলে বিক্রি বন্ধ করে দেন। অনেকে ১০০ টাকা লিটারে পেট্রোল বিক্রি করতে চাইছেন।
রাত ১১টার দিকে নগরীর শাহজালাল উপশহর এলাকার এমএ হক এর পাম্পেও ছিল একই অব্স্থা। এ সময় তেলের দাম বাড়িয়ে বিক্রির পায়তারায় ক্ষুব্ধ হয়ে সড়ক অবরোধ করেন গ্রাহকরা। তাদের টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করতে দেখা যায়। এসব গ্রাহকের মধ্যে মোটরসাইকেলচালকের সংখ্যাই বেশি ছিল।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী গতকাল রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সিলেটের কোনো পাম্পই জ্বালানি বিক্রি না করার খবর পাওয়া গেছে। তবে বিভিন্ন জায়গায় সড়ক অবরোধ ও ক্ষুব্ধ গ্রাহকদের বিক্ষোভ চলছিল লক্ষ্যনীয়। এতে রাস্তায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় এবং লোকজন চরম ভোগান্তিতে পড়েন। তবে এসব স্থানে পুলিশ কোনো কার্যকর ভূমিকা পালন করছে না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
নগরীর দক্ষিণ সুরমার চন্ডিপুলস্থ মেসার্স দিবারাত্রি ফিলিং স্টেশনে মোটরসাইকেল নিয়ে পেট্রোল ক্রয় করতে আসা সিলাম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য নোমানুল ইসলাম সাজু বলেন, বাড়িতে ছিলাম। গাড়িতে তেল কম। তাই তেল নিতে এসেছি। পাম্পে এসে দেখি পা ফেলার জায়গা নাই। মূলত দাম বৃদ্ধির কারণে মানুষের এমন অবস্থা।
এ ব্যাপারে ফিলিং স্টেশনের ক্যাশ ম্যানেজার আবদুল আলিম বলেন, ‘আমরা প্রত্যেক ক্রেতাকে ২০০ টাকার উপর তেল দিচ্ছি না। এত লোক কখনো আমাদের পাম্পে পেট্রোল নিতে আসেনি। তা ছাড়াও সবাইকে তেল দেওয়ার মতো স্টকও আমাদের হাতে নেই’।
তিনি বলেন, আমরা সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক রাত ১২টায় নতুন দামে তেল বিক্রি করব।
এসআইএইচ