ওসমানী মেডিকেলের শিক্ষার্থীদের উপর হামলা, প্রধান আসামি গ্রেপ্তার
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজের দুই শিক্ষার্থীর উপর হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (৩ জুলাই) রাত সাড়ে ১২টায় শাহপরাণ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামির নাম দিব্য সরকার। তিনি নগরীর কাজলশাহ ৫২ নম্বর বাসার রমনীকান্ত সরকারের ছেলে এবং সিলেট মহানগর ছাত্রলীগের কর্মী বলে জানা গেছে।
আসামি গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার (৩১ জুলাই) দুপুরে এক রোগীর দুই স্বজনের সঙ্গে ইন্টার্ন চিকিৎসক ইমন আহমদের বাগবিতণ্ডতা হয়। এক পর্যায়ে ওই দুই স্বজনকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। পরে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বিষয়টি মিমাংসা হয়। এর জের ধরে সোমবার (১আগষ্ট) রাত ৮টার দিকে ইন্টার্ন চিকিৎসক ইমন আহমদ ও ওসমানী মেডিকেল কলেজের ৩য় বর্ষের ছাত্র রুদ্র নাথের উপর হামলা চালায় কয়েকজন দুর্বৃত্ত। আহতাবস্থায় তাদের ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে ওইদিন রাত ১০টার দিকে ধর্মঘটের ডাক দেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। তারা জরুরি, হৃদরোগ ও বহির্বিভাগ ছাড়া হাসপাতালের সকল বিভাগে সেবা বন্ধ করে দেন। এ ছাড়াও কলেজের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করেন। তাদের সঙ্গে যুক্ত হন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরাও। মেডিকেল কলেজে স্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, হামলাকারীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা, হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মেডিকেল প্রশাসনের মামলা করাসহ পাঁচ দফা দাবি জানান আন্দোলনকারীরা।
এদিকে আন্দোলরত শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো বাস্তবায়নের আশ্বাস দিলে সোমবার রাত ৩টার দিকে ধর্মঘট ও অবরোধ প্রত্যাহার করেন শিক্ষার্থীরা। তবে এ সময় তারা হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে মঙ্গলবার বেলা ২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মূল আসামিদের কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় মঙ্গলবার ২টা থেকে ফের ধর্মঘট শুরু করেন তারা।
ওসমানী মেডিকেল কলেজের দুই শিক্ষার্থীর উপর হামলা ও নারী ইন্টার্ন চিকিৎসকের শ্লীলতাহনির অভিযোগে আটজনকে আসামি করে মঙ্গলবার দুপুরে কোতোয়ালি থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়। ওসমানী হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ হানিফ এবং ওসমানী মেডিকেল কলেজের পিএ-টু প্রিন্সিপাল ও সচিব (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মাহমুদুল রশিদ বাদী হয়ে এই মামলা দুটি দায়ের করেন।
দুই মামলার আসামিরা হলেন- দিব্য, আব্দুল্লাহ, এহসান, মামুন, সাজন, সুজন, সামি ও সাঈদ হাসান রাব্বি। এরা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে। তাদের মধ্যে নগরীর মুন্সিপাড়ার মৃত রানা আহমদের ছেলে সাঈদ হাসান রাব্বি ও কাজলশাহ এলাকার আব্দুল হান্নানের ছেলে এহসান আহমদকে সোমবার (১ আগষ্ট) দিবাগত রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রাব্বি সিলেট মহানগরীর ৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
এসআইএইচ