অসুস্থ সন্তানের চিকিৎসার খরচ যোগাতে সড়কে পিঠা বিক্রি করছেন নূর ছবি বেগম
ছবি : ঢাকাপ্রকাশ
জীবনের তাগিদে মানুষ কতভাবেই না সংগ্রাম করে। এমনই এক সংগ্রামী মায়ের নাম নূর ছবি বেগম (৪৫)। দুর্ঘটনায় পঙ্গু হওয়া সন্তানের চিকিৎসার খরচ যোগাতে তিনি দিনাজপুরের বিরামপুর শহরের পূর্বপাড়া মোড়ে সড়কের পাশে একটি পিঠার দোকান চালাচ্ছেন। তবে তার এই সীমিত আয়ের ব্যবসা দিয়ে সংসারের পাঁচ সদস্যের খাবার এবং সন্তানের চিকিৎসার ব্যয়ভার মেটানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
নূর ছবি বেগমের স্বামী হাছেন আলী একজন রিকশাচালক। তার ছেলে রুবেল মিয়া (২০) আগে রংয়ের কাজ করতেন। কিন্তু ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে ঢাকায় একটি ভবনে কাজ করার সময় তৃতীয় তলা থেকে পড়ে রুবেল গুরুতর আহত হন। তার কোমরের হাড় ভেঙে যায়। জীবন বাঁচাতে তাকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জায়গা-জমি বিক্রি এবং আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে ধার নিয়ে প্রায় ৬ লাখ টাকা খরচ করে তার একটি অপারেশন করানো হয়।
অপারেশনের পর রুবেল বেঁচে গেলেও পুরোপুরি শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। প্রতিদিন নিয়মিত ওষুধ ও চিকিৎসা চালাতে গিয়ে পরিবারটি আর্থিকভাবে সম্পূর্ণভাবে নিঃস্ব হয়ে যায়। চিকিৎসা চালানোর জন্য একমাত্র আয়ের উৎস, অটোরিকশাটিও বিক্রি করতে বাধ্য হন হাছেন আলী। এরপর থেকেই পরিবারটি খাবার জোগাতেও হিমশিম খাচ্ছে।
দারিদ্র্যের কষাঘাতে নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার পরও ছেলের চিকিৎসার আশা ছাড়েননি নূর ছবি বেগম। তিনি ইসলামী পর্দা মেনে প্রতিদিন বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চিতই পিঠা, পেঁয়াজি ও চটপটি বিক্রি করেন। তবে তার দৈনিক আয় মাত্র ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। এই আয়ে সংসারের খরচ মেটানোই কঠিন হয়ে পড়েছে, ছেলের চিকিৎসার ব্যয় বহন করা তো দূরের কথা।
নূর ছবি বেগম জানান, তার স্বামীর জন্য একটি অটোরিকশা হলে অন্তত সংসারের দৈনন্দিন খরচ মেটানো সম্ভব হতো। পাশাপাশি সমাজের বিত্তবান ও সহৃদয় ব্যক্তিদের কাছে তিনি তার ছেলের চিকিৎসার জন্য সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন। রুবেলের চিকিৎসা সম্ভব হলে তিনি সুস্থ হয়ে সংসারের দায়িত্ব নিতে পারবেন বলে আশাবাদী নূর ছবি।
এই অসহায় পরিবারকে বাঁচাতে এবং রুবেলের চিকিৎসায় সাহায্য করতে ইচ্ছুকরা তাদের বিকাশ বা নগদ নম্বরে সহায়তা পাঠাতে পারেন।
রুবেলের বিকাশ ও নগদ নম্বর: ০১৩২০৪২৫৭১৭।
সমাজের মানুষের সাহায্যই হয়তো পারে এই পরিবারের জীবনে আলো ফেরাতে।