কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে জানালা ভেঙে ঘরে ঢুকে গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টা
কুড়িগ্রামের রাজিবপুরে জানালা ভেঙে ঘরে ঢুকে গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টা। ছবি : ঢাকাপ্রকাশ
কহিনুর আক্তার। স্বামীর সংসারে জায়গা না পেয়ে ১২ বছরের ছেলে হামিদুরকে নিয়ে ৫ বছর আগে বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন। এখানে এসেও ধরতে হয়েছে সংসারের হাল। বৃদ্ধ বাবা-মা ও ছেলেকে নিয়ে অভাবের সংসারের খরচ যোগাতে নিজেই রোজগার করেন। কিন্তু বাবার বাড়িতে থেকেও ভালো নেই কহিনুর আক্তার। একদিকে অসহায়ত্ব আরেকদিকে সমাজের নেতিবাচক দৃষ্টিতে অতিষ্ট কহিনুরের জীবন।
গ্রামের বখাটে ছেলেদের দ্বারা প্রায়ই অশ্বিল মন্তব্য ও কটুক্তি শুনতে হয় তাকে। তবে এবার যেন সব ঘটনা ছাপিয়ে গেছে। ঘরের জানালা ভেঙে, ঘরে ঢুকে ঘুমন্ত কহিনুরের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে এলাকার তিন বখাটে। জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে তারা। পরে কহিনুরের চিৎকার চেচামেচিতে পালিয়ে যায় ওই তিনজন।
ঘটনাটি ঘটেছে কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুরের জাউনিয়ারচর মিয়াপাড়া গ্রামে। গত শনিবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় কহিনূর রাজিবপুর থানায় ওই তিন জনের নাম উল্লেখ করে একটি অভিযোগ করেছেন।
অভিযুক্ত ওই তিন জন একই এলাকার মৃত-আব্দুর রশিদের ছেলে মামুন, মৃত জয়নুদ্দিনের ছেলে আব্দুল্লাহ এবং মৃত-আব্দুল গণির ছেলে কেসমত।
কহিনূরের অভিযোগ, মামুন, আব্দুল্লাহ এবং কেসমত দীর্ঘদিন ধরে মোবাইল ফোন ও অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে তাকে উত্ত্যক্ত করে আসছে। বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তারা উত্ত্যক্ত করা বন্ধ করেনি। এমনকি তাদের আত্মীয় স্বজন এবং অভিভাবকদের বিষয়টি জানালেও এর কোন সুরুহা হয়নি।
এরমধ্যে গত ৬ জুলাই শনিবার দুপুর দেড়টার সময় বৃষ্টি থাকায় নিজ ঘরে শুয়ে ছিলেন কহিনুর। এ অবস্থায় মামুন, আব্দুল্লাহ এবং কেসমত পূর্ব-পরিকল্পিত ভাবে ঘরে ঢুকে কহিনুর কে জড়িয়ে ধরে জোর পূর্বক বিবস্ত্র করে ধর্ষনের চেষ্টা করে। এরপর কহিনুরের চিৎকার চেচামেচিতে লোকজন ছুটে আসলে তারা পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় কহিনূর রাজিবপুর থানায় মামুন, আব্দুল্লাহ এবং কেসমতের নামে অভিযোগ করায় তারা কহিনুরকে আবারও ধর্ষণসহ বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। বর্তমানে ছেলে আব্দুল্লাহকে নিয়ে অসহায় জীবন যাপন করছেন কহিনূর।
এ ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে দ্রুত বিচারের দাবি জানান কহিনুর আক্তার।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত মামুন, আব্দুল্লাহ এবং কেসমতের সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলেও নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে অভিযুক্ত ওই তিনজনকে পুলিশ গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাজিবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশিকুর রহমান।