কেউ পাস করেনি বিরামপুরের খয়েরবাড়ী মির্জাপুর দাখিল মাদ্রাসায়
খয়েরবাড়ী মির্জাপুর দাখিল মাদ্রাসা। ছবি: সংগৃহীত
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার খয়েরবাড়ি মির্জাপুর দাখিল মাদ্রাসা থেকে কেউ পাস করেনি। প্রতিষ্ঠানটি থেকে এবার ২৪ জন পরীক্ষার্থী দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল।
রবিবার (১২ মে) সারাদেশে চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হওয়ার পরে এমনই তথ্য মিলেছে। জানা গেছে, খয়েরবাড়ি মির্জাপুর দাখিল মাদ্রাসা থেকে এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ২৪ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ৪ জন ছেলে ও ২০ জন মেয়ে। পরীক্ষা চলাকালে ইংরেজি পরীক্ষার দিন বহিষ্কৃত হয় একজন। তবে, বাকি ২৩ জন পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করেও কেউ পাশ করতে পারেনি।
চলতি বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় বিরামপুর উপজেলায় ৬টি কেন্দ্রে ৫৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ২ হাজার ৭৫৬ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেয়। এর মধ্যে ভোকেশনাল ১টি, ৩৪টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ২২টি মাদ্রাসা। যার মধ্যে ৬টি ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট যুক্ত রয়েছে।
বিরামপুর উপজেলায় ২ হাজার ৭'শত ৫৬ জন এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে উত্তীর্ণ (পাস) করেন ২ হাজার ৬০ জন পরীক্ষার্থী এবং ফেল করেন ৬'শত ৯৬ জন পরীক্ষার্থী। এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেও কোনো শিক্ষার্থী পাস না করা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকায় বিরামপুর উপজেলার ৬নং জোতবানী ইউনিয়নের খয়েরবাড়ি মির্জাপুর দাখিল মাদ্রাসা নাম পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে খয়েরবাড়ি মির্জাপুর দাখিল মাদ্রাসার সুপার আঃ রশীদ এর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হরে তার ব্যবহৃত নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। তবে ওই প্রতিষ্ঠানের সহকারী সুপার আঃ লতিফ জানান, অত্র মাদ্রাসার ফলাফল খারাপ হওয়ায় আমি আতঙ্কিত। ১৯৬৫ইং সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। মাদ্রাসাটির জমির পরিমাণ এক একর। মাদ্রাসাটি ১৯৮৫ইং সালে এমপিওভুক্ত হয়। এই প্রথম অত্র মাদ্রাসার ফলাফল খারাপ হয়েছে।
আরও জানান যায়, ২০১৬ইং সালে খয়েরবাড়ি মির্জাপুর দাখিল মাদ্রাসায় বর্তমান সুপার আঃ রশীদ যোগদান করেন। প্রতিবছর ভালো ফলাফল হয়েছে। কিন্তু, এবারই পরীক্ষার খারাপ হয়েছে। এদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগ মাদ্রাসায় শিক্ষকদের গ্রুপিং ও অবহেলার কারণে থমকে গেছে পড়ালেখার মান। অপরদিকে ওই প্রতিষ্ঠানের সভাপতির দীর্ঘদিন সভাপতি পদে থাকার বিষয়েও অভিযোগ করে এলাকাবাসী।
মাদ্রাসার এসএসসি পরীক্ষার্থী মুর্শিদা নাশিদ নুহা বলেন, আমি সহ ২৪ জন পরীক্ষার্থী সকলে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করি। আমি আশাবাদী আমার ফলাফল ৪.৫ এর বেশি হবে। কিন্তু, দুর্ভাগ্যের বিষয় কেন এমন ফলাফল হলো তা মেনে নিতে আমার খুবই কষ্ট হচ্ছে।
এ বিষয়ে মাদ্রাসার মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আনিছুর রহমান জানান, আমার মাদ্রাসা একসময় উপজেলার শ্রেষ্ঠ মাদ্রাসা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিল। কিন্তু, কেন এমন ফলাফল তা মেনে নিতে পারছি না। তবে আগামীতে যেন ভালো ফলাফল করা যায়। সেই বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সমশের আলী মন্ডল জানান, খয়েরবাড়ি মির্জাপুর দাখিল মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষার ফলাফল কেন এমন হলো? এ বিষয়ে উক্ত প্রতিষ্ঠানকে শোকজ করা হবে।