জয়পুরহাটে বাড়িতে ঢুকে কামড় দিচ্ছে শিয়াল, শিশুসহ আহত ২৪
হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন শিয়ালের কামড়ে আহতরা। ছবি: সংগৃহীত
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর উপজেলার দুটি গ্রামে হঠাৎ করে শিয়ালের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ৪৮ ঘণ্টায় শেয়ালের কামড়ে শিশুসহ অন্তত ২৪ জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। হঠাৎ করেই শিয়ালের উপদ্রব বেড়ে যাওয়ার ফলে আতঙ্কে পড়েছেন ওই দুই গ্রামের মানুষ।
সোমবার (২৫ মার্চ) সকালে জয়পুরহাট ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার ক্ষেতলাল উপজেলার মহব্বতপুর, আক্কেলপুর উপজেলার ইসমাইলপুর ও জামালগঞ্জ এলাকায় শেয়ালে কামড়ানোর ঘটনা ঘটেছে।
ভুক্তভোগী ও এলাকাবাসী জানান, রোববার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে হঠাৎ করে কয়েকটি শিয়াল আক্কেলপুর উপজেলার ইসমাইলপুর ও ক্ষেতলাল উপজেলার মহব্বতপুর গ্রামের কয়েকটি বাড়িতে প্রবেশ করে লোকজনকে কামড় দেয়। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে জয়পুরহাট ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল ও বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করেছে। এ ঘটনায় শিয়াল আতঙ্কে পড়েছে ওই গ্রামের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ।
আক্কেলপুর উপজেলার রুকিন্দীপুর ইউনিয়নের ইসমাইলপুর গঙ্গাপ্রসাদ গ্রামের মামুন হোসেনের স্ত্রী চুমকি বেগম বলেন, আসরের নামাজের পর বাড়িতে একটি শিয়াল প্রবেশ করেই নিজেকে কামড়ানোর পর তার দুই শিশু সন্তানকেও কামড়িয়ে গুরুতর আহত করে। শুধু তার পরিবারের লোকজনকেই না ওই গ্রামে আরও বেশ কয়েক জনকে কামড়িয়ে গুরুতর আহত করে। আহতদের উদ্ধার করে তাদেরকে জয়পুরহাট ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জামালগঞ্জ এলাকার শিশু মোস্তাফিজুর (৩), চুমকি (৩২) ও পুরানাপৈল গ্রামের বিউটী (৫০) নামে তিন জনকে সোমবার সকালে শেয়ালের কামড়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে বলে জানা যায়।
ক্ষেতলাল উপজেলার মহব্বতপুর গ্রামের আব্দুল আলিমের স্ত্রী তাহেরা বেগম জানান, তিনি বিকালে মাঠে গরুর খাবারের ঘাস কাটছিলেন। এসময় হঠাৎ করে একটি শিয়াল এসে তাকে কামড়িয়ে আহত করেছে। একই গ্রামের রেনু বেগম (৫০) কেও শেয়ালের কামড় দিলে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করে।
এ বিষয়ে ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. সরদার রাশেদ মোবারক বলেন, শেয়াল, কুকুর ও বিড়ালের কামড়ানো রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। হঠাৎ করে গত ৪৮ ঘণ্টায় আহত ৭০ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা (ভ্যাকসিন) দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ালের কামড়ে আহত রয়েছেন ২৪ জন বলেও জানান তিনি।
একই হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শহীদ হোসেন বলেন, বন-জঙ্গল কমে যাওয়ার কারণে খাবার ও আশ্রয় সমস্যায় পড়েছে এসব পশু। যার কারণে হিংস্র হয়ে উঠতে পারে।