সাংবাদিককে জেলে পাঠানোর হুমকি, এখনো বদলি হননি সেই এসিল্যান্ড
ছবি: সংগৃহীত
সাংবাদিকদের অফিসে আটকিয়ে রেখে জেলে পাঠানোর হুমকি ও হেনস্থাকারী লালমনিরহাট সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আব্দুল্লাহ-আল-নোমান সরকারের বদলির আদেশ কাযর্কর করা হয়নি এখনো।
গত ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার রাতে তার বদলির আদেশ দেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার। তাকে লালমনিরহাট সদর উপজেলা থেকে বদলি করা হয় ঠাকুরগাঁও জেলার হরিপুর উপজেলায়। কিন্তু তিনি মঙ্গলবার পযর্ন্ত লালমনিরহাট সদর উপজেলায় কর্মরত ছিলেন। আদেশের পরও এসিল্যান্ডের বদলি দ্রত কার্য্যকর না হওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন লালমনিরহাটে কর্মরত সাংবাদিকরা।
সোমবার দুপুরে লালমনিরহাট প্রেসক্লাবে জরুরী সভার আয়োজন করে সাংবাদিকরা তাদের উদ্বিগ্ন হওয়ার বিষয়টি লিখিতভাবে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে অবহিত করেছেন।
সাংবাদিকরা জানান, এসিল্যান্ডের বদলির আদেশকে কেন্দ্র করে কিছু তরুণ এসিল্যান্ডের পক্ষ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সাংবাদিক সম্পর্কে কুরুচি মন্তব্য করছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে এসব তরুণ বিএনপি, জামায়াত ও আহলে হাদীস সমর্থিত পরিবারের সদস্য। এসিল্যান্ডের বদলির আদেশে বলা হয়েছে ‘অবিলম্বে এই আদেশ কাযর্কর করা হবে’ কিন্তু এখনো তা কাযর্কর করা হয়নি। তার বদলি বাতিলের জন্য একটি সুবিধাবাদী পক্ষ আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে।
সাংবাদিকরা জানান, ১৪ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে অফিসে জমির খারিজ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহের জন্য যাওয়া ৫ সাংবাদিকদের আটকিয়ে হেনস্থা করেন এসিল্যান্ড আব্দুল্লা-আল-নোমান সরকার। ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে সাংবাদিকেদর জেলে পাঠানোর প্রস্তুতিও নিয়েছিলেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) টি. এম. এ. মমিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত অফিসের তালা খুলে সাংবাদিকদের মুক্ত করেন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে এসিল্যান্ড সাংবাদিক সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য করলে সেখানকার পরিস্থিতি উত্তেজিত হয়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সৃষ্ট পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করেন। এ ঘটনার কিছুক্ষন পরই এসিল্যান্ড বিক্ষুদ্ধ হয়ে তার অফিস চত্বরে অবস্থানকারী চ্যানল আইয়ের ক্যামেরা পার্সনের মোটরসাইকেলের কাগজপত্র থাকা সত্বেও তা আটক করে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
মাই টিভি ও ডেইলি অবজারভার পত্রিকার লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি মাহফুজ সাজু জানান, এসিল্যান্ড আমাদেরকে অবর্ণনীয়ভাবে হেনস্থা করেছেন। এডিসি রেভিনিউ অফিসের তালা খুলে আমাদের মুক্ত না করলে সেদিন এসিল্যান্ড আমাদেরকে জেলে পাঠিয়ে দিতেন। এসিল্যান্ড সাংবাদিকদের প্রতি ক্ষুদ্ধ-বিক্ষুদ্ধ। তার বদলি দ্রুত কাযর্কর না হওয়ায় আমরা উদ্বিগ্ন। তিনি তার বদলি ঠেকাতে নানাভাবে অপচেষ্টা চালাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
লালমনিরহাট প্রেসক্লাবের আহবায়ক আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা প্রেসক্লাবে জরুরী সভা করেছি। সাংবাদিকদের উদ্বিগ্ন হওয়ার বিষয়টি লিখিতভাবে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। এসিল্যান্ডের বদলি দ্রুত কাযর্কর ও তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছি।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্ল্যাহ মঙ্গলবার দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, এসিল্যান্ডের বদলির আদেশ দ্রুত কাযর্কর করা হবে। লালমনিরহাট সদর উপজেলায় যোগদান করতে বলা হয়েছে কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার এসিল্যান্ডকে। লালমনিরহাটে তার যোগদানে কিছুটা বিলম্ব হওয়ায় লালমনিরহাট সদর উপজেলার এসিল্যান্ডের বদলির আদেশ কাযর্কর করতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। এ আদেশ অবশ্যই কাযর্কর হবে।