শেখ রাসেলের নামে একমাত্র খেলার মাঠ বছরজুড়ে ব্যবসায়ীদের দখলে
শুক্রবার, ৯ ফেব্রুয়ারি, সকাল ১০.২৫ মিনিটে রাজিবপুর শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম। ছবি : ঢাকাপ্রকাশ
কুড়িগ্রাম জেলার রাজিবপুরে 'শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম' এর নামে একমাত্র খেলার মাঠ দখল করে বছরজুড়েই ব্যবহার করছে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। গত পাঁচ বছর আগেও যেখানে উপজেলায় খেলার উপযুক্ত ছয়টি মাঠ ছিল। বর্তমানে সেখানে খেলার উপযুক্ত একটি মাত্র মাঠ রাজিবপুর উপজেলায়। এই মাঠটিতেও মাটি উঁচু-নিচু এবং মাঠের বিভিন্ন প্রান্তে ভাঙ্গা।
ক্রীড়াঙ্গনের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ এই একমাত্র খেলার মাঠটি দখল করে নিয়েছে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। এতে খেলাধুলার অনুশীলন এর সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এ এলাকার তরুণ প্রতিভাবান খেলোয়াড়রা। বছরজুড়ে রাজিবপুর উপজেলার শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম মাঠে পাট, গোম, ভুট্টা, সরিষা, আলুর ব্যবসায়ীরা ব্যবহার করছে তাদের নিজেদের ইচ্ছামত।
উপজেলার রাজিবপুর বাজার সংলগ্ন খেলার মাঠটি দখল করে সেখানে ওই এলাকার প্রভাবশালী অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে আসছেন। প্রভাবশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ এ বিষয়ে প্রতিবাদ করছে না।
জানা গেছে, রাজিবপুর বাজার সংলগ্ন সরকারি খেলার মাঠে সপ্তাহের প্রায় সব দিনগুলোতেই বিভিন্ন পণ্য শুকানো হয়। মাঠটি অনেক আগে থেকেই খেলার মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু বর্তমানে মাঠটি দখল করে রেখেছে সরিষার আড়তদাররা।
সরেজমিনে তিন দিন পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে, গত মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাঠজুড়ে দখলে নিয়ে সরিষা শুকানোর কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক যুবক বলেন, ছোটবেলা থেকে মাঠটিতে ফুটবল, ক্রিকেট ও ব্যাটমিন্টন খেলে আসছি। কিন্তু মাঠটি দখল রাখায় এখন আর খেলাধুলা করা যায় না। রাতে তো আর খেলাধুলা করা সম্ভব না। মাঠের সম্পন্ন অংশ দখলে থাকায় দিনে খেলাধুলার কোন পরিবেশ থাকে না।
এসব বিষয়ে মৌসুমী ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের সাথে যোগাযোগ করা যায়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার একজন সদস্য ঢাকাপ্রকাশকে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত ছেলেপেলেরা আমার কাছে বিষয়টি নিয়ে এসেছিল। মাঠে মৌসুমী ব্যবসায়ীদের কারণে তারা খেলাধুলার সুযোগ পাচ্ছে না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত এর প্রতিফলন দেখা যায়নি।
মাঠ ব্যবহারের জন্য ব্যবসায়ীদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে কিনা এ প্রসঙ্গে রাজিবপুর উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক ঢাকাপ্রকাশকে জানান, বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই।
উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি ও রাজিবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার তানভীর আহমেদ ছুটিতে থাকায়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) এর অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপে ঢাকাপ্রকাশ যোগাযোগ করার চেষ্টা করে, এসব বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কিংবা হবে কিনা, মাঠ ব্যবহারে ব্যবসায়ীদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে কিনা, ক্রীড়া সংস্থার কেউ বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করেছিল কিনা। এসব প্রশ্ন করলেও কোন উত্তর পাওয়া যায়নি।