১০ টাকায় প্রতিবন্ধি ও অটিজম শিশুদের চিকিৎসা
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধিনে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্বাবধানে শিশু বিকাশ কেন্দ্রে চলছে শারিরিক ও মানষিক প্রতিবন্ধী শিশুদের চিকিৎসা। প্রতিদিন এখানে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসছেন অটিজম ও প্রতিবন্ধি প্রায় অর্ধশতাধিক শিশু কিশোর যুবকরা। প্রায় বারো বছর আগে এ চিকিৎসা ব্যবস্থা চালু হলেও এখন এর সুফল মানুষের মাঝে এখন ছড়িয়ে পড়েছে। এখানে চিকিৎসা নিয়ে ১২ হাজারের অধিক শিশু এখন সুফল ভোগ করছে।
বিশেষায়িত এ চিকিৎসা কেন্দ্রে উত্তর অঞ্চলের ৯ জেলার শারিরিক ও মানষিক ভাবে পিছিয়ে যেমন, দেরীতে ঘাড় শক্ত হওয়া, দেরীতে বসা,দেরীতে কথা বলা,বয়সের সাথে বুদ্ধির বৃদ্ধি নাহওয়া,পড়াশোনায় অমনোযোগী,অতিরিক্ত চঞ্চল, ওঅটিষ্টিক শিশু কিশোররা চিকিৎসাসেবা পাচ্ছে। নাম মাত্র ১০ টাকা খরচে চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায়।পাঁচ সদস্যের চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ টিম প্রতিদিন কাজ করছেন এই কেন্দ্রে। এতথ্য নিশ্চিত করেছেন শিশু বিকাশ কেন্দ্রের পেরামেডিক ডাঃ মোঃ ইনতেহাজ মিয়া।
লালমনিরহাটের কালিগজ্ঞ থেকে চিকিৎসা নিতে আসা এক প্রতিবন্ধি শিশুর মা আসমা আক্তার (২৭) বলেন, আমার সন্তানের বয়স ২৭ মাষ চলছে। সে হাটতে পারেনা ডাক্তার দেখালাম ডাক্তার সাহেব দেখে ডেভেলপ মেন্টাল থেরাপিষ্ট প্রয়োজনীয় ব্যাম ও ষ্টিমুলেশন শিখিয়ে দিয়েছেন এবং বলেছেন নিয়মিত ব্যাম করতে। ঔষধ পত্র সহ দিয়েছেন এবং বলেছেন শিশুটি অল্প কয়েক দিনের মধ্যে হাটতে শুরু করবে। থেরাপিশেষ হলে তার সন্তান অনেকটা সুস্থ্য হয়ে যাবে।
বগুড়া জেলার সোনাতলা থেকে এসছেন সাম্মিয়ারা বেগম তার ১১ মাষ বয়সের শিশুকে নিয়ে তিনি বলেন, আমার শিশুটির নয় মাষ বয়সে জন্ম হয়। শিশুর ঘাড় শক্ত ছিল না ছয় সপ্তাহ চিকিৎসার পর এখন অনেক সুস্থ হতে শুরু করেছে। আমি আবার আমার শিশুকে এখানে তৃতিয় বারের মত চিকিৎসা নিতে নিয়ে এসেছি।
রংপুর শিশুবিকাশ কেন্দ্রের চাইলল্ড হেল্থফিজিসিয়ান আব্দুল্লা আল মাসুদ বলেন, এ কেন্দ্রে প্রতিবন্ধিততা নিয়ে আসা যে কোন শিশিু কিশোরকে তার সকল ইতিহাস রেজিষ্টারে লিপিবদ্ধ করি এবং চুরান্ত রোগ নির্নয় করি। প্রয়োজনীয় ব্যাম.থ্যারাপি অথবা সাইকোলেজিক্যাল এসেসমেন্টের জন্য পরামর্শ দেই।
এ ছাড়াও অন্যকোন বিভাগের ফিজিক্যাল মেডিসিন, নিউরোমেডিসিন, চক্ষু, নাক, কান, গলা, মানষিক নিউরো সার্জারী সমন্বয়ে প্রয়োজন হয় সে বিভাগে রেফার করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করা হয়।সঠিক ও উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে এ রোগীদের ধীরে-ধীরে সুস্থ করা সম্ভব।
রংপুর জেলা সুজনের সাধারন সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আকরর আলী বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এই বিশেষ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে অভিজ্ঞ জনেরা। উত্তর অঞ্চলে অনেক দরিদ্র মানুষ আছে যারা অর্থের অভাবে তাদের প্রতিবন্ধি ও অটিজম শিশুদের চিকিৎসা করাতে পারেন না। তাদের জন্য এই উদ্বোগ অনেক সুফল নিয়ে আসবে বলে মনেকরি।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিকাশ কেন্দ্রের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ আহাদ শাহ বলেছেন, বলেছেন সঠিক ও উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীদের পুরোপুরি সুস্থ করা সম্ভব। চাইল্ড ফিজিসিয়ান তিনি প্রথমে শিশু টিকে দেখে এবং শিশুটির এফিলিপ্স বা খিচুনি থাকে তিনি সেই রোগের জন্য যে ঔষুধর দরকার তা তিনি প্রয়োগ করেন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ শরিফুল হাসান জানান, অনেকে হাটতে পারছেনা,অনেকে কথা বলতে পাছেনা,এটা অথেনটিক সার হিসাবে শিশু বিকাশ কেন্দ্র হিসাবে চালু আছে। সঠিক ও উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে রোগীদের পুরোপুরি সুস্থ্য করা সম্ভব।
প্রতিবন্ধি শিশুদের জন্য ব্যতিক্রমী ও অপরিহার্য এক উদ্যোগ নিয়েছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নাম মাত্র খরচে চিকিৎসা সুবিধা পাচ্ছে উত্তরাঞ্চলের ৯ জেলার ৫০ হাজারেরও বেশি শারিরীক ও মানসিক প্রতিবন্ধী ও অটিজম শিশুরা। মাত্র দশ টাকার টিকেট কেটে চিকিৎসা নিচ্ছে প্রতিবন্ধী শিশুরা।
একজন শিশু বিশেষজ্ঞ, একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, একজন ফিজিওথেরাপিষ্ট সহ ৫ সদস্য বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞ টীম কাজ করছে এই কেন্দ্রে। প্রতিদিন উত্তর অঞ্চলের ৯ জেলার বিভিন্ন জেলা- উপজেলা ও গ্রমাঞ্চল থেকে তাদের চিকিৎসা নিতে ভীড় করছে শিশু সন্তানের অবিভাবকেরা।
এএজেড