কাগজে কলমে এক প্রকল্প, বাস্তবে আরেক!
কাগজে কলমে এক প্রকল্পের নাম দেখিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রকল্পের চেয়ারম্যান এক লাখ টাকা উত্তোলন করেছেন কিন্তু বাস্তবে এর চিত্র উল্টো। ওই প্রকল্পে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণের কাজ করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। ওই প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২ লাখ টাকা। বাকি এক লাখ টাকা উত্তোলনে পায়তারা চালাচ্ছেন প্রকল্প চেয়ারম্যান বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার কমলাবাড়ী ইউনিয়নের কিসামত চরিতাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সুত্রে জানাগেছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে সাধারন টেস্ট রিলিফ (ট,আর) প্রকল্পে উপজেলা পরিষদ থেকে কিসামত চরিতাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণের জন্য ২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। যার প্রকল্প চেয়ারম্যান ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক আবু তালেব।
যথারীতি নিয়ম মেনে ওই প্রতিষ্ঠানের বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণের জন্য কাজের শুরুর আগেই এক লক্ষ টাকা বিল উত্তোলন করেন প্রকল্পের সভাপতি। কিন্তু বিল উত্তোলনের পরে প্রকল্পের সভাপতি ও প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক আবু তালেব বিদ্যালয়ের বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ না করেই বিদ্যালয়ের বারান্দার কাজ শুরু করেন। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী প্রকল্প পরিবর্তন করতে হলে পূর্ব থেকে উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু প্রকল্প চেয়ারম্যান আবু তালেব তা করেননি।
এদিকে বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারী) সরেজমিন ওই প্রতিষ্ঠানে টি,আর প্রকল্পের কাজের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে গেলে এমন চিত্র বেরিয়ে আসে। সেখানে দেখাগেছে, বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণের কাজ না করে বিদ্যালয়ের বারান্দার কাজ করা হচ্ছে। বাউন্ডারী ওয়ালের কাজ না করে বারান্দার কাজ কেন করছেন এমন প্রশ্নের জবাবে প্রকল্পের চেয়ারম্যান ও প্রধান শিক্ষক আবু তালেব বলেন, আমরাতো কাজ করছি।
তিনি দাবী করে বলেন, প্রয়োজনে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে প্রকল্পের নাম পরিবর্তন করা হবে। এসময় প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক সুমন আহমেদ সাংবাদিকদের বিদ্যালয়টির জৈন্যদশার দৃশ্য দেখিয়ে বলেন, এত অল্প টাকায় বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ করা সম্ভব হবে না। তাই বরাদ্দকৃত টাকা দিয়ে বারান্দার ঢালাইয়ের কাজ করা হচ্ছে।
এবিষয়ে আদিতমারী উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা (পিআইও) মফিজুল ইসলাম বলেন, প্রকল্প পরিবর্তন করে কাজ করার সুযোগ প্রকল্প চেয়ারম্যানের নেই। তিনি আরো বলেন, যে কাজের জন্য অর্থ বরাদ্দ (ছাড়) দেয়া হয়েছে, সেই কাজই করতে হবে।
আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জি,আর সারোয়ার বলেন, প্রকল্প পরিবর্তন করতে হলে উদ্ধতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়। তিনি আরো জানান, এধরনের কাজ করলে প্রয়োজনে প্রকল্প বাতিল করা হবে।
এএজেড