হাড় কাঁপানো শীতে অসহায় নিম্নআয়ের মানুষ
আনোয়ারের মা আনোয়া থাকেন রেল লাইনের ধারে ছোট একটি ঝুপরি ঘড়ে সঙ্গে রয়েছে তার আদরের নাতি। সকাল থেকে রাত অবধি ভিক্ষা করে, যা পান তা দিয়েই চলে যায় তার সংসার। তবে গত তিনদিনের হারকাপানো শীতে সে বাইরে বের হতে পারেনি। কোনমতে মুড়ি খেয়ে রাত্রি যাপন করতে হচ্ছে তাকে। আনোয়ারা বেগম জানান, এই শীতে মরার মত অবস্থা হয়েছে আমার। ঘড়ে গরম কাপর নাই। সারারাত ভাঙ্গা ঘড় দিয়ে বাতাস ঢুকে ঠান্ডার পরিমান প্রায় শতগুন বাড়িয়ে দেয়। প্রচণ্ড ঠান্ডার কারনে বিছানায় বসেই রাত কাটাতে হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কেউ তাকে সহযোগীতা করেননি।
শুধু আনোয়ারা নয় গত কয়েকদিনের ঘন কুয়াশা আর শীতল হাওয়ার কারনে প্রচন্ড ঠান্ডায় দিশেহারা হয়ে পরেছে এ অঞ্চলের মানুষ। রাত নয়টার পর থেকে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে পরে। ঘন কুয়াশার কারনে রাত থেকেই গুরি গুরি বৃষ্টির মত পানি পরতে থাকে। বইছে হিমেল হাওয়া। শীত মোকাবেলায় মানুষজন অস্থির হয়ে পরেছে। শীতবস্ত্রের অভাবে কাহিল হয়ে পরেছে নিম্নবিত্ত শ্রেনীর মানুষ। শীতের কারণে গরীব মানুষজন গরম কাপড়ের অভাবে নিদারুন কষ্ট ভোগ করছে।
শীত থেকে বাচঁতে মানুষজন খড়কুটা জ্বালিয়ে শীত থেকে নিজেকে বাচাতে চেষ্টা করলেও তা যথেষ্ট নয়। হারকাপানো শীতের তীব্রতায় অসহায় হয়ে পরেছে নিম্নবিত্ত শ্রেনীর মানুষ। গরম কাপরের আশায় মানুষজন ছুটছে গরম কাপরের দোকানগুলোতে। ঘন কুয়াশার কারনে বাস-ট্রাককে দিনের বেলায় হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। রাত যত গভীর হচ্ছে কুয়াশার পরিমান ততই বাড়ছে। রাতের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতের তীব্রতা।
শীত বাড়ার কারনে বেড়ে গেছে রেললাইনের ধারে গরমের কাপড়ের বিক্রি। সকাল থেকে রাত অবধি মানুষজন ক্রয় করছেন গরম কাপড়। গতবারের চেয়ে এবার বিক্রি অনেকটা কম বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাছাড়া কাপরের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিক্রি অনেকটা কমে গেছে বলে জানিয়েছেন দোকানদার শাহীন।
তীব্র শীতের কারণে শিশু ও বৃদ্ধদের অবস্থা নাজুক হয়ে পরেছে। সীমান্তঘেষা নীলফামারী শীতের প্রকোপ বেশি থাকলেও এবার তীব্রতা বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি বিপাকে পরেছে ঝুপরি ঘড়ে থাকা পরিবারগুলো। রেললাইনের ধারে ঝুপরি ঘড়ে থাকা পরিবারগুলো জানিয়েছে শীতের তীব্রতার কারনে সারারাত আগুন জ্বালিয়ে তাদের শীত মোকাবেলা করতে হচ্ছে।
ছায়াপাড়া এলাকার রকি জানান, শীতে গরম কাপড় না থাকায় কষ্ট করে রাত্রি যাপন করতে হচ্ছে।শীতের কারণে কাজে যাওয়া সম্ভব না হওয়ায় অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের। সুফিয়া বেগম নামে এক মহিলা জানান,জারোত হামরা কোন কাম করিবার না পারি। জারোত হামরা মরি গেলেও কাহো হামার খবর নেই নাই।
এএজেড