গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচনের সার্বিক পরিবেশে সন্তুষ্ট প্রার্থীরা
গাইবান্ধা-৫ আসনের উপনির্বাচনের সার্বিক পরিবেশে সন্তোস প্রকাশ করেছেন প্রার্থীরা। এতে জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশা প্রকাশ করেছেন নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রধান দুই দল নৌকা ও লাঙলের প্রার্থী। শেষ পর্যন্ত একই পরিবেশন নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছেন তারা।
বুধবার (৪ জানুয়ারি) ৪টা পর্যন্ত ভোটের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এমনই অভিমত প্রকাশ করেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন ও জাতীয় পার্টির গোলাম শহীদ রনজুসহ অপর প্রার্থীরা। বুধবার সকাল সাড়ে ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরুর পরপরই সাঘাটা উপজেলার ফলিয়া দিগর দাখিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোট দেন মাহমুদ হাসান রিপন।
সকাল পৌনে ৯টার দিকে বোনারপাড়া কাজী আজহার আলী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন জাতীয় পার্টির গোলাম শহীদ রনজু।
ভোট দেওয়া শেষে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মাহমুদ হাসান রিপন নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, সাঘাটা-ফুলছড়িবাসীর মধ্যে নৌকার গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। একই সঙ্গে মানুষ উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে ভোট কেন্দ্রে আসছেন। আমি বিশ্বাস করি এ অঞ্চলের মানুষ ভোট দিয়ে নৌকার বিজয় নিশ্চিত করবে।
এদিকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী গোলাম শহীদ রনজু বলেন, ভোট দেয়া নিয়ে মানুষের মাঝে যেমন শঙ্কা আছে তেমনি আমিসহ আমার নেতা-কর্মীদেরও শঙ্কা রয়েছে। তবে, ইসি-প্রশাসনের সার্বিক তৎপরতায় এখন পর্যস্ত সুষ্ঠু ভোট হচ্ছে। তবে শেষ পর্যন্ত এ পরিবেশ বহাল রাখতে প্রশাসনসহ নির্বাচনসংশ্লিষ্ট সবার কাছে দাবি জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, শেষ পর্যন্ত জনগণ সঠিকভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারলে লাঙলের জয়ের ব্যাপারে আমি শতভাগ আশাবাদী। অভিযোগ নেই, নির্বাচনে অংশ নেয়া অপর দুই প্রার্থী বিকল্পধারা বাংলাদেশের জাহাঙ্গীর আলম (কুলা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহবুবুর রহমানের। (ট্রাক)।
এর আগে বুধবার সকাল থেকেই ভোট দিতে কেন্দ্রে আসেন ভোটাররা। তবে ঘন কুয়াশা ও শীতের কারণে প্রতিটি কেন্দ্রে সকাল থেকে ভোটারদের উপস্থিতি একেবারে কম ছিল। তবে বেলা বাড়ার সাথে প্রতিটি কেন্দ্রে বাড়তে থাকে ভোটারের উপস্থিতি। পুরুষের চেয়ে নারী ভোটারের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।
ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এ আসনে ৩ লাখ ৩৯ হাজার ৪ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। নির্বাচনে ৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও মাঠে সক্রিয় আওয়ামী লীগের মাহমুদ হাসান রিপন (নৌকা) ও জাতীয় পার্টির প্রার্থী (জাপা) এএইচএম গোলাম শহিদ রঞ্জু (লাঙ্গল)। তবে ভোটের মাঠে প্রচারণায় দেখা যায়নি বিকল্পধারা বাংলাদেশের জাহাঙ্গীর আলম (কুলা) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মাহবুবুর রহমানকে (ট্রাক)।
এছাড়া গত ২৫ ডিসেম্বর অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ (আপেল) নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। এদিকে, সুষ্ঠভাবে ভোটগ্রহণে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের কথা জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও ঢাকা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে পুলিশ ও আনসার সদস্যের নিরাপত্তার পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে ১৪৫টি ভোট কেন্দ্রে স্থাপন করা হয়েছে ১ হাজার ২৪২টি সিসি ক্যামেরা। সিসি ক্যামেরায় কেন্দ্র পর্যবেক্ষণের জন্য উচ্চ পর্যায়ের মনিটরিং সেল গঠন করেছে নির্বাচন কমিশন। ভোটগ্রহণ চলাকালে কোন অনিয়ম হলে তা কঠোরভাবে দমন করার কথাও জানান তিনি।
এছাড়া নির্বাচনে যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ভোটের মাঠে বিজিবি, র্যাবের মোবাইল টিম, পুলিশের মোবাইল টিম ও স্ট্রাইকিং ফোর্সের পাশাপাশি নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালনের কথা জানিয়েছেন পুলিশ সুপার (এসপি) কামাল হোসেন।
গাইবান্ধা-৫ আসনের প্রয়াত সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী গত ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।
আসনটিতে ১২ অক্টোবর উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলাকালে প্রথমে গোপন কক্ষে একাধিক ব্যক্তি প্রবেশ করায় ভরতখালি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র, ফুলছড়ি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র এবং সাঘাটা উপজেলার রামনগর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে দফায় দফায় ৫১টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করে ইসি।
এএজেড