এবার রংপুর মেডিকেলের ৩ কর্মকর্তাকে বদলি
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে জিম্মি করে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের সিন্ডিকেট ও তাদের আশ্রয় প্রশ্রয়ে অসাধু চক্রের হাতে বকশিশ বাণিজ্যে ক্ষমতার অপব্যবহারসহ নানান অনিয়মের দায়ে ১৬ কর্মচারীকে বদলির পর এবার হাসপাতালের তিন উপ-পরিচালককে বদলির আদেশ জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
রবিবার (২ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপ-সচিব জাকিয়া পারভীন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বদলির এ আদেশ দেওয়া হয়।
বদলিকৃতরা হলেন- উপ-পরিচালক ডা. মো. আব্দুল মোকাদ্দেস, ডা. মোস্তফা জামান চৌধুরী এবং ডা. মো. আরশাদ হোসেন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. শরিফুল হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে তিন উপ-পরিচালকের বদলির আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তাদের পরিবর্তে তিনজনকে উপ-পরিচালক পদে হাসপাতালে বদলির আদেশও এসেছে। তবে বিস্তারিত কিছু জানাতে রাজি হননি তিনি।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উপ-সচিবের আদেশে বলা হয়েছে, উপ-পরিচালক আবদুল মোকাদ্দেমকে ঢাকায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাখালীতে ওএসডি করা হয়েছে। সহকারী পরিচালক মোস্তফা জামান চৌধুরীকে বগুড়া ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিতে সিনিয়র লেকচারার এবং সহকারী পরিচালক আরশাদ হোসেনকে নীলফামারীর সৈয়দপুর হাসপাতালে সুপারিনটেনডেন্ট পদে বদলি করা হয়েছে। আদেশ জারির সাত দিনের মধ্যে তাদের বদলি করা কর্মস্থলে যোগদান করতে হবে। এই আদেশ মানা না হলে তাদের সরাসরি অব্যাহতি দেওয়া হবে। তবে কী কারণে তাদের বদলি করা হয়েছে তা আদেশে উল্লেখ করা হয়নি।
জানা যায়, গত ১৭ সেপ্টেম্বর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিজের মাকে ভর্তি করাতে গিয়ে ‘বকশিশ’ সিন্ডিকেট চক্রের হয়রানির শিকার হন সেখানকার অর্থোসার্জারি বিভাগের জুনিয়র কনসালটেন্ট এবিএম রাশেদুল আমীর। ১৮ সেপ্টেম্বর ওই চিকিৎসক কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে হাসপাতালের পরিচালকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দেন। এ অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিন সদস্যদের তদন্ত কমিটি গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় হাসপাতালের চুক্তিভিত্তিক দুজন কর্মচারী মাসুদ হোসেন ও ঝর্ণা বেগমকে সাময়িক বরখাস্ত করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এ ঘটনায় হাসপাতালে ‘অসাধু চক্রের দৌরাত্ম্য, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা ও জনদুর্ভোগের’ প্রতিবাদে গত ২৬ সেপ্টেম্বর মানববন্ধন সমাবেশ করে সম্মিলিত চিকিৎসক সমাজ। মানববন্ধন থেকে দ্রুত হাসপাতালে সেবা ও শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনাসহ দালাল চক্রের দৌরাত্ম্য রোধে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এ কাজে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান চিকিৎসকরা।
প্রসঙ্গত, গত ২৭ সেপ্টেম্বর রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন ওয়ার্ড মাস্টারসহ ১৬ কর্মচারীকে বদলি করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর মধ্যে ১২ জন অফিস সহায়ক, একজন স্টোনো টাইপিস্ট, একজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী, একজন নিরাপত্তা প্রহরী এবং একজন ওয়ার্ড মাস্টার।
এসজি